মাইক্রোসফট-এর পর নোকিয়ার সিইও পদেও এ বার এক অনাবাসী ভারতীয়।
মাইক্রোসফটের কাছে নিজেদের মোবাইল তৈরির ব্যবসা বিক্রির পর সংস্থার বাকি ব্যবসাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে রাজীব সুরির উপরই আস্থা রাখল নোকিয়া। মঙ্গলবার সিইও এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করল ফিনল্যান্ডের সংস্থাটি। উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতেই বিল গেটসের হাতে গড়া সংস্থা মাইক্রোসফটের সিইও-র দায়িত্ব নিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সত্য নাদেল্লা।
গত শুক্রবারই ৭২০ কোটি ডলারে নিজেদের মোবাইল ফোন তৈরির ব্যবসা বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছে প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো সংস্থা নোকিয়া। এ বার তাদের বাকি তিন ব্যবসা নোকিয়া সলিউশন্স অ্যান্ড নেটওয়ার্কস (এনএসএন), হিয়ার এবং টেকনোলজিসের দায়িত্বভার নিতে চলেছেন ৪৬ বছরের সুরি।
ম্যানেজমেন্ট বা অন্য কোনও বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তাঁর নেই। কিন্তু ধুঁকতে থাকা সংস্থাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর দক্ষ কারিগর হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়া তাঁকে এক ডাকে চেনে। অনেকেই মনে করছেন, সেই দক্ষতাকে কাজে লাগাতেই সুরিকে শীর্ষ পদে বসানোর এই সিদ্ধান্ত।
১৯৬৭ সালে জন্মানো সুরির বেশির ভাগ সময়টাই কেটেছে বিদেশে। নাদেল্লার মতো তিনিও ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন মনিপাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে। পড়া শেষে সুরি কাজ করেছেন দেশ-বিদেশের একাধিক সংস্থায়। নোকিয়ায় যোগ দেন ১৯৯৫ সালে। দীর্ঘ দিন সংস্থাটির বিভিন্ন ব্যবসা সামলানোর পর, ভারতে তাদের টেলিকম প্রযুক্তির ব্যবসা নোকিয়া-সিমেন্সের দায়িত্ব নেন তিনি। এর পর ২০০৯-এ তাঁকেই ওই সংস্থার সিইও নিযুক্ত করে নোকিয়া। তাঁর হাত ধরেই এক সময়ে ধুঁকতে থাকা নোকিয়া-সিমেন্স ঘুরে দাঁড়ায়। পরিণত হয় নোকিয়ার সবচেয়ে মোটা ও লাভজনক ব্যবসায়। এ জন্য অবশ্য বিপুল সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাইয়েও পিছপা হননি তিনি। সিমেন্সের সঙ্গে জোট ভাঙার পর এই ব্যবসারই নাম হয় নোকিয়া সলিউশন্স অ্যান্ড নেটওয়ার্ক।
আর এই সব কারণেই নোকিয়ার শীর্ষ পদে সুরির নিয়োগ কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল। বিশেষত আগের সিইও স্টিফেন ইলোপ মাইক্রোসফটে ফিরে যাওয়ার পর। কারণ মোবাইল ব্যবসা বিক্রির পর টেলিকম শিল্পে ব্যবহৃত প্রযুক্তি তৈরিতেই মন দিচ্ছে নোকিয়া। চাইছে ঘুরে দাঁড়াতে। আর এই কাজে সুরিকেই যোগ্য মনে করেছে ফিনল্যান্ডের সংস্থাটি।