বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুরতে আশা তুঙ্গে

নতুন সম্বতের দিন বিশেষ মুরত লেনদেনে সূচকের উত্থান তেমন বেশি না-হলেও শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের আশার পারদ কিন্তু উঠেছে তুঙ্গে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আশা করছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বাজার বাড়বে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার দীপাবলির দিন গুজরাতি নতুন বছর সম্বৎ ২০৭১-এর প্রথম দিনে শেয়ার বাজারে বিশেষ মুরত লেনদেন হয়। তাতে সেনসেক্স বেড়েছে ৬৩.৮২ পয়েন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩৯
Share:

বিএসই-তে মুরতের সূচনায় অভিনেত্রী কাজল অগ্রবাল। ছবি: পিটিআই।

নতুন সম্বতের দিন বিশেষ মুরত লেনদেনে সূচকের উত্থান তেমন বেশি না-হলেও শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের আশার পারদ কিন্তু উঠেছে তুঙ্গে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আশা করছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বাজার বাড়বে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দীপাবলির দিন গুজরাতি নতুন বছর সম্বৎ ২০৭১-এর প্রথম দিনে শেয়ার বাজারে বিশেষ মুরত লেনদেন হয়। তাতে সেনসেক্স বেড়েছে ৬৩.৮২ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক এসে শেষ হয় ২৬,৮৫১.০৫ অঙ্কে। অবশ্য এই দিন লেনদেনের শুরুতে বাজার চড় চড় করে বেড়েছিল। তার তালে তালে সেনসেক্সও ১৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ঠেকেছিল ২৬,৯৩০.২৩ অঙ্কে। কিন্তু পরের দিকে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার জন্য শেয়ার বিক্রির জেরে সূচকের পারা দ্রুত নেমে আসে।

তবে আগামী এক বছরে সূচকের গতি ইতিবাচক হবে বলেই মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের মতো বিশেষজ্ঞ বলেন, “আমার ধারণা চলতি সম্বতে বাজার বাড়বে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।”

Advertisement

ভবিষ্যৎ নিয়ে একই রকম আশাবাদী প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন “মুরতের দিনে সূচক কতটা বাড়ল বা কমল, সেটা বড় কথা নয়। তবে আগামী দিনে ভারতের শেয়ার বাজার যে-তেজী হবে, এতে আমার কোনও সন্দেহ নেই।”

বাজার নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কেন এতটা আশাবাদী? উত্তরে অজিতবাবু বলেন, “কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার আগামী দিনে আর্থিক ক্ষেত্রে যে বেশ কিছু সংস্কার আনবে, এটা এখন নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। ২০১৫-’১৬ সালের বাজেটই প্রমাণ করবে, শেয়ার বাজারের অবস্থান কতটা মজবুত জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে।”

অজিতবাবুর মতো বাজার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার আনার জন্য পদক্ষেপ করেছেন। যার ফলে কোষাগারের হাল ভাল হবে। যেমন, কয়লা খনি বিক্রি এবং বণ্টন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ। এ ব্যাপারে যে-ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে যে-শুধু বেসরকারি সংস্থাও বৈদ্যুতিন নিলামে অংশ নিতে পারবে তাই নয়, সরকারের ভাঁড়ারেও আসবে মোটা অঙ্কের টাকা।

এ ছাড়া বিমা-সহ আরও কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নি বাড়ানোর ব্যাপারেও নরেন্দ্র মোদী সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করায় রাজ্যসভাতেও তাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে আর্থিক সংস্কার সংক্রান্ত বিল পাশ করানোর ব্যাপারে বিশেষ অসুবিধার মুখে পড়তে হবে না নরেন্দ্র মোদীকে। প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে উদ্যোগী হয়েও ইউপিএ সরকার ওই সব পদক্ষেপ করার ব্যাপারে সফল হতে পারেনি।


বৃহস্পতিবার ক্যালকাটা স্টক একচেঞ্জে মুরত ট্রেড্রিং। ছবি: কিশোর রায়চৌধুরী।

শেয়ার বাজারে পক্ষে আরও একটি ভাল খবর, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তেলের দাম কমে আসা। এর ফলে ডিজেলের দামও আর বেঁধে দিচ্ছে না কেন্দ্র। পেট্রোল এবং ডিজেলে আর ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না সরকারকে। এতে এক দিকে সাশ্রয় হচ্ছে বিদেশি মুদ্রার, অন্য দিনে কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে ওই খাতে জলের মতো যে-টাকা খরচ হত, তাও অনেকটাই বন্ধ হয়েছে।

এ ছাড়া যাদের দৌলতে ভারতের শেয়ার বাজারে এত রমরমা, সেই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি মাঝে কিছু দিন বিনিয়োগ বন্ধ রেখে শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছিল। তারা কিন্তু ফের শেয়ার বাজারে লগ্নি শুরু করেছে। অতিজবাবু বলেন, “আমাদের দেশে এখনও আর্থিক বৃদ্ধির হার সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ। বিশ্বের অন্য কোনও দেশে তা হচ্ছে না। এর জন্যই ওই সব বিদেশি লগ্নিকারীর পক্ষে ভারত ছাড়া বিনিয়োগের অন্য কোনও বিকল্প জায়গা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন