বৃদ্ধির গতি ফেরাতে এ বার দাওয়াই সরকারি বিনিয়োগই

আর্থিক সংস্কারের রথকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে লগ্নির বহর বাড়ানো জরুরি। আর, এখানেই ঝিমিয়ে রয়েছে বেসরকারি উদ্যোগ। ফলে সাধারণ ভাবে মার খাচ্ছে শিল্পোত্‌পাদন। অর্থনীতিকে টেনে তুলতে লগ্নির ঝাঁপি নিয়ে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রের আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর মতে এ বার সরকারি লগ্নিকে আরও বড় ভূমিকা নিতে হবে, যাতে তার হাত ধরেই চাহিদা বাড়ে, যা আবার নতুন পুঁজি ঢালতে উত্‌সাহ জোগাবে বেসরকারি শিল্পপতিদের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৫৭
Share:

আর্থিক সংস্কারের রথকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে লগ্নির বহর বাড়ানো জরুরি। আর, এখানেই ঝিমিয়ে রয়েছে বেসরকারি উদ্যোগ। ফলে সাধারণ ভাবে মার খাচ্ছে শিল্পোত্‌পাদন। অর্থনীতিকে টেনে তুলতে লগ্নির ঝাঁপি নিয়ে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রের আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর মতে এ বার সরকারি লগ্নিকে আরও বড় ভূমিকা নিতে হবে, যাতে তার হাত ধরেই চাহিদা বাড়ে, যা আবার নতুন পুঁজি ঢালতে উত্‌সাহ জোগাবে বেসরকারি শিল্পপতিদের।

Advertisement

চলতি ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে ৫.৫ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে কেন্দ্র। সম্প্রতি প্রকাশিত মাঝ বছরের আর্থিক সমীক্ষায় এই ইঙ্গিত দেওয়া হলেও মাঝারি মেয়াদে মোদী সরকারের লক্ষ্য ৭ থেকে ৮ শতাংশ বৃদ্ধির হারে পৌঁছনো। সেই কারণে সরকারি লগ্নিকেই বেসরকারি বিনিয়োগের পরিপূরক হয়ে উঠতে হবে বলে জানিয়েছেন সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর এই দাওয়াই অর্থনীতিকে দিশা দেখানোর পক্ষে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে শিল্পমহলও।

সরকারের মাথাব্যথার বড় কারণ, অক্টোবরে শিল্পোত্‌পাদন সরাসরি ৪.২ শতাংশ হারে কমেছে। অরুণ জেটলির সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল রাজকোষ ঘাটতিকে ৪.১ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রাখা। মূল্যবৃদ্ধি কমায় সরকার স্বস্তি পেলেও সমস্যা হল, কর আদায়ও কমেছে। কর বাবদ আয়ের ক্ষেত্রেও জেটলি অনেক বেশি আশা করেছিলেন বলে ওই সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছে। সঙ্কট কাটিয়ে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ জেটলিকে বাতলাতে হবে আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটে। মোদী সরকারের এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট তৈরিতে জেটলির ডান হাত এই সুব্রহ্মণ্যন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর মত আলাদা গুরুত্ব পাবে বলেই মনে করছেন অর্থ মন্ত্রকের অফিসাররা।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের আয়-ব্যয়ের সমস্ত হিসাব ফিরে দেখা হচ্ছে বলেও সম্প্রতি জানিয়েছেন সুব্রহ্মণ্যন। ভারতের অর্থনীতিতে এই মুহূর্তে চাহিদা কম, যার জেরে তেমন বাড়ছে না শিল্পে বেসরকারি লগ্নি। আবার শিল্পের বেহাল দশাই চাহিদাকে বাড়তে দিচ্ছে না। এই দুষ্টচক্র থেকে অর্থনীতিকে খুব তাড়াতাড়ি বার করে আনতেই সরকারি লগ্নি বাড়ানোর পক্ষপাতী সুব্রহ্মণ্যন। বিশেষ করে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগের হাত ধরে বিনিয়োগ আসার প্রবণতা এখনও সে ভাবে তাঁর নজরে পড়ছে না। তাই বেসরকারি ক্ষেত্রের হাতে লগ্নির রাশ না-থাকলে সরকারি লগ্নিই বড় ভরসা হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, থমকে থাকা শিল্প প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে সম্প্রতি সেগুলি নজরদারির রাশ নিজের হাতে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ ধরনের বেশ কিছু বড় প্রকল্পে ১৮ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকে রয়েছে। আর সেই জন্যই প্রকল্প নজরদারি গোষ্ঠী বা ‘প্রজেক্ট মনিটরিং গ্রুপ’-এর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েছেন মোদী। এর আগে ওই গোষ্ঠী ছিল মন্ত্রিসভার সচিবালয়ের অধীনে। কিন্তু লগ্নির পথে বাধা কাটিয়ে কারখানার উত্‌পাদনকে আবার টেনে তুলতে চালিকাশক্তি হবে সরকারি লগ্নিই, এমনটাই মনে করছেন অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন