ব্রিকস ব্যাঙ্কের সদর সম্ভবত সাংহাইয়ে

সমান মূলধনের জোগান। সমান অংশীদারি। সমান নিয়ন্ত্রণ। ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির নিজস্ব উন্নয়ন ব্যাঙ্ক তৈরির ক্ষেত্রে এই নীতি মানার পক্ষে জোরালো সওয়াল করার জন্য তৈরি হয়েই ব্রাজিলে পা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, সম্ভবত ওই ব্রিকস-ব্যাঙ্কের সদর দফতর হতে চলেছে চিনের অর্থনৈতিক রাজধানী সাংহাইয়ে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি ভারত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ফোর্তালেজা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:০০
Share:

ব্রাজিলের পথে। ছবি: পিটিআই

সমান মূলধনের জোগান। সমান অংশীদারি। সমান নিয়ন্ত্রণ। ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির নিজস্ব উন্নয়ন ব্যাঙ্ক তৈরির ক্ষেত্রে এই নীতি মানার পক্ষে জোরালো সওয়াল করার জন্য তৈরি হয়েই ব্রাজিলে পা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

সম্প্রতি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, সম্ভবত ওই ব্রিকস-ব্যাঙ্কের সদর দফতর হতে চলেছে চিনের অর্থনৈতিক রাজধানী সাংহাইয়ে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি ভারত। কিন্তু ব্যাঙ্কে সকলের সমান অংশীদারি এবং নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে যে আপস করা হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন এক ভারতীয় কূটনীতিক। তাঁর কথায়, ভারতের সামনে পাখির চোখ ব্যাঙ্কে সকলের সমান অংশীদারি নিশ্চিত করা। এর পরের লক্ষ্য, ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমন নাম বাছাই, যাতে ভবিষ্যতে ব্রিকস গোষ্ঠীর বাইরের দেশের জন্যও সেখানে যোগ দেওয়ার দরজা খোলা থাকে। ওই ভারতীয় কর্তাটির দাবি, বিশ্বব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের (আইএমএফ) মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভারত-সহ উন্নয়নশীল দুনিয়াকে যে-সমস্যার মুখে পড়তে হয়, তার পুনরাবৃত্তি রুখতেই সমান অংশীদারির বিষয়ে এত কড়া অবস্থান নিচ্ছেন তাঁরা।

২০১২ সালে দিল্লি সম্মেলনের সময়েই এই ব্যাঙ্ক গড়ার কথা প্রথম আলোচনা করে ব্রিকস গোষ্ঠীর দেশগুলি (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা)। ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ডারবান বৈঠকে তা অনুমোদিত হয়। ঠিক হয়, ব্রাজিলের ব্রিকস বৈঠকেই এই নতুন উন্নয়ন ব্যাঙ্ক গড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। প্রাথমিক ভাবে তার মূলধন হবে ৫০ হাজার কোটি ডলার। পরে তা এক লক্ষ কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখা হবে। ভারত, চিনের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলিতে পরিকাঠামো গড়তে যে বিপুল লগ্নি প্রয়োজন, আগামী দিনে তার একটা বড় অংশ ঋণ হিসেবে দিতে পারবে ওই ব্যাঙ্ক। এ ছাড়া, আর্থিক সঙ্কটের কারণে বিদেশি লগ্নি (বিশেষত বিদেশি আর্থিক সংস্থার বিনিয়োগ) হঠাৎ করে ব্রিকস গোষ্ঠীর কোনও দেশ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যেতে শুরু করলে, তখনও তার পাশে দাঁড়াবে ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।

Advertisement

মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত চায় নতুন এই ব্যাঙ্কটির নাম হোক নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক। এবং সেখানে ১০ হাজার কোটি ডলার করে সমান অংশীদারি থাকুক ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত পাঁচ দেশের। যাতে কোনও দেশ (বিশেষত চিন) আর্থিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে না-পারে। ভারতের মতে, গোড়ায় বেশি মূলধন জোগানোর সুবিধাকে কাজে লাগিয়েই বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফে ছড়ি ঘোরায় আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলি। একই ভাবে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কে বাড়তি কর্তৃত্ব ফলায় জাপান। সেই সমস্যা যাতে ব্রিকস ব্যাঙ্কেও না-হয়, শুরু থেকে তা নিশ্চিত করতেই সমান অংশীদারির দাবিতে তৎপর ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন