গাড়ি ও ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন শুল্কে ছাড় দেওয়ার মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বরের পরে আর বাড়ানো হচ্ছে না। ফলে ১ জানুয়ারি থেকে বেশি হারের পুরনো শুল্কই ফের বহাল হবে।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রক সূত্রে এ খবর জানার পরেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিল্পমহল। কারণ, এর জেরে বছরের শুরুতেই গাড়ি, ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। তাদের অভিযোগ, ২০১৫-র প্রথম তিন মাসে যেখানে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছিলেন সকলে, সেখানে এই ছাড় প্রত্যাহার ক্রেতাদের বাজারমুখী হওয়ার ইচ্ছেটার দফারফা করবে। বিশেষ করে গাড়ি শিল্প মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করলেও, এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা ফের দুশ্চিন্তায়।
অবশ্য মন্ত্রক সূত্রের দাবি, চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতিকে জাতীয় আয়ের ৪.১ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য ছুঁতে সাহায্য করবে এই পদক্ষেপ। কারণ অর্থবর্ষের বাকি তিন মাসে বাড়তি ১ হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব ঘরে তুলতে পারবে কেন্দ্র।
বিশ্বব্যাপী আর্থিক সঙ্কটের আবহে ঝিমিয়ে পড়া গাড়ি ও ভোগ্যপণ্য শিল্পকে অক্সিজেন জোগাতে গত ফেব্রুয়ারির অন্তর্বর্তী বাজেটে সেগুলির উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। ছোট গাড়ি, স্কুটার, মোটরসাইকেল ও বাণিজ্যিক গাড়ির শুল্ক ১২% থেকে কমানো হয় ৮ শতাংশে। স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল-এ তা ৩০% থেকে নামানো হয় ২৪ শতাংশে। মাঝারি ও বড় গাড়ির শুল্ক যথাক্রমে ২৪% ও ২৭% থেকে কমিয়ে করা হয় ২০% ও ২৪%। অন্য দিকে, ভোগ্যপণ্যে শুল্ক ১২% থেকে কমে হয় ১০%। ক্ষমতায় আসার পরে জুনে মোদী সরকার ওই ছাড়ের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। সেটাই আর বাড়ানো হচ্ছে না।
সংস্থাগুলি এখন এ নিয়ে কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায়। যদিও খবর ছড়াতেই দাম বাড়ানোর হিসাব কষতে শুরু করেছে তারা। হোন্ডা, মারুতি-সুজুকি, হুন্ডাই-সহ বিভিন্ন গাড়ি সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে এর ফলে দাম বাড়বে। বিক্রি মার খাবে বলেও আশঙ্কা তাদের।
একই আশঙ্কা করছেন টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি ভোগ্যপণ্য সংস্থাও। কারণ, বৈদ্যুতিন পণ্য উৎপাদকদের সংগঠনের দাবি, ছাড় তুলে নেওয়ায় সকলেই দাম বাড়াতে বাধ্য হবে। হোয়ার্লপুল ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট শান্তনু দাশগুপ্ত বলেন, “বৃদ্ধির হার ঠেলে তুলতেই কেন্দ্র এই ছাড়ের মেয়াদ বাড়াবে বলে প্রত্যাশায় ছিলাম। বাজেট-পূর্ব প্রস্তাবে তা বলাও হয়। কিন্তু মানা হল না।”