সময়সীমা ৩১ জুলাই, কাল বৈঠক মোদীর

ভারতের আপত্তিতে অনিশ্চিত বিশ্ব বাণিজ্য চুক্তি

খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে শর্ত মেনে চলা নিয়ে ভারতের আপত্তির জেরে ফের অনিশ্চয়তার মুখে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। এ ব্যাপারে উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে মতবিরোধের কেন্দ্রে মূলত গণবণ্টনের জন্য ভারতে শস্য মজুত করার ব্যবস্থা এবং ওই একই লক্ষ্যে দেওয়া খাদ্যে ভর্তুকি। গত সপ্তাহের শেষে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে উন্নয়নশীল দেশগুলির সংগঠন জি২০-র বৈঠকেই এ ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে ভারত। ১৬০টি সদস্য দেশের মধ্যে নয়া অবাধ বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়া নিয়ে এই চুক্তি সইয়ের সময়সীমা ৩১ জুলাই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সিডনি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০৩:০৪
Share:

খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে শর্ত মেনে চলা নিয়ে ভারতের আপত্তির জেরে ফের অনিশ্চয়তার মুখে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। এ ব্যাপারে উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে মতবিরোধের কেন্দ্রে মূলত গণবণ্টনের জন্য ভারতে শস্য মজুত করার ব্যবস্থা এবং ওই একই লক্ষ্যে দেওয়া খাদ্যে ভর্তুকি।

Advertisement

গত সপ্তাহের শেষে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে উন্নয়নশীল দেশগুলির সংগঠন জি২০-র বৈঠকেই এ ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে ভারত। ১৬০টি সদস্য দেশের মধ্যে নয়া অবাধ বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়া নিয়ে এই চুক্তি সইয়ের সময়সীমা ৩১ জুলাই। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে গত বছরের ডিসেম্বরে হওয়া ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এই চুক্তি সই হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তা কার্যকর হবে ২০১৫ থেকে। তবে এ ব্যাপারে ভারতের চূড়ান্ত অবস্থান কী হবে, তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বুধবার ডাকা বৈঠকে স্থির করবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তখনই বোঝা যাবে ভারত চুক্তিতে অনুমোদন দেবে কি না। পাশাপাশি, বালি চুক্তি নিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিও সাধারণ পরিষদের দু’দিনের বৈঠক শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার।

ডব্লিউটিও-র যে-শর্ত মেনে চলতে ভারত তার অক্ষমতার কথা সম্প্রতি জি২০ বৈঠকে আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে, সেটি খাদ্যের মজুত ভাণ্ডার ও ভর্তুকি সংক্রান্ত। দরিদ্রদের ভর্তুকিতে খাদ্য বণ্টনের কারণেই ভারতকে উপযুক্ত পরিমাণে শস্য মজুত রাখতে হয়। আর, ডব্লিউটিও-তে এখানেই আপত্তি উন্নত দুনিয়ার। তাদের অভিযোগ, মজুত করলে ভাঙা হবে অবাধ বাণিজ্যের শর্ত, কারণ তা বিশ্ব বাণিজ্যে কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে দেবে শস্যের দর। পাশাপাশি, ডব্লিউটিও আইনে শস্যের মোট উৎপাদন মূল্যের মাত্র ১০ শতাংশে ভর্তুকি দেওয়া যায়। যে-দরে ওই ভর্তুকি নির্ধারিত হয়, তা-ও অন্তত দু’দশকের পুরনো। এখানেই আপত্তি ভারতের। প্রসঙ্গত, আমেরিকা কৃষিতে ভর্তুকি দেয় ১২,০০০ কোটি ডলার, ভারতে তা মাত্র ১২০০ কোটি।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান্ড্রু রব জানিয়েছেন, “ভারত এবং আফ্রিকার কিছু রাষ্ট্র নয়া চুক্তি সই নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তবে অবাধ বাণিজ্যের লক্ষ্যে এই চুক্তি বাঁচাতে শেষ মুহূর্তে ভারত রফায় পৌঁছবে বলে আমার ধারণা।” সোমবার ডব্লিউটিও সূত্রেরও খবর, এ ব্যাপারে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশ এবং উন্নত দুনিয়ার মধ্যে যাতে সন্ধি হয়, সেই চেষ্টাই চলছে।

বালিতেই ভারত এককাট্টা ছিল খাদ্য সুরক্ষার দাবিতে। তারা জানিয়ে দিয়েছিল বিষয়টি না-মানলে, নয়া বাণিজ্য চুক্তিও মানবে না তারা। শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা জানিয়েছিল, কোনও দেশ তার প্রধান খাদ্যশস্যে ভর্তুকি দিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। মেনে নেওয়া হয় ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে সরকারের খাদ্যশস্য কেনার বিষয়টিও। এর পরেই আপাত ঐকমত্যে পৌঁছনো সম্ভব হয় বালিতে। তবে এর জন্য ভারতের মতো উন্নয়নশীল দুনিয়াকে ডব্লিউটিও কী কী ছাড় দেবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট পথনির্দেশ মেলেনি বালিতে। আর সেই প্রশ্নই ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে গত সপ্তাহে সিডনিতে জি২০ দেশগুলির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে।

তবে ডব্লিউটিও সূত্রের অভিযোগ, ভারত এ ব্যাপারে ঠিক কী ধরনের সুবিধা চায়, তা তারা স্পষ্ট করেনি। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ফ্রোম্যান দাবি করেন, “বালি চুক্তি মেনে চলার অঙ্গীকার করেছিল ভারত-সহ জি২০ রাষ্ট্রগুলি।” তবে এই মুহূর্তে কী ভাবে সমস্যা আপসে মোটানো যায়, সেই চেষ্টাই করছে ডব্লিউটিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন