একে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য কম, তার উপর থাকা-খাওয়ার খরচ খুব বেশি। পর্যটনে সিঙ্গাপুর সে কারণে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলে দিয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়া ও তাইল্যান্ড। ভারতের বহু পর্যটক গোয়া বা রাজস্থান না-গিয়ে প্রায় একই খরচে ব্যাঙ্কক-পাটায়া বা কুয়ালা লামপুর-লঙ্কাভি-গেনটিং হাইল্যান্ড ঘুরে আসছেন। এই অবস্থায় পর্যটক টানতে সিঙ্গাপুরের নয়া স্লোগান ‘সুরক্ষা, নিরাপত্তা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও বিশুদ্ধতা’। সিঙ্গাপুর ট্যুরিজম বোর্ড-এর দাবি, সে দেশে গেলে পর্যটকেরা শান্তিতে থাকতে পারেন, ঝুটঝামেলায় পড়েন না। তাঁদের আহ্বান, ‘ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুর আসুন সপরিবারে।’
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সিঙ্গাপুরকে তুলে ধরতে ট্যুরিজম বোর্ড-এর কর্তারা কলকাতায় এসেছেন। পর্ষদের সহকারী চিফ এগ্জিকিউটিভ লিওং উয়ে খেওং লরেন্স সোমবার এক আলোচনায় স্বীকার করে নেন, বিপুল হোটেল খরচ তাঁর দেশে আরও বেশি পর্যটক টানায় বড় বাধা। কারণ, সিঙ্গাপুরের অধিকাংশ হোটেলই চার বা পাঁচ-তারা। মাঝারি মানের হোটেল বা দু’তারা হোটেল নেই বললেই চলে। তেমনই রেস্তোরাঁগুলোও দামি। লিওং-এর কথায়, “জমির দাম ও শ্রমিকের মজুরি সিঙ্গাপুরে এত চড়া যে, সমস্যা হচ্ছে।” তবে নিরাপদে ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুর আদর্শ জায়গা হতে পারে বলে দাবি তাঁর।
গত বছর সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন ৯.৩০ লক্ষ ভারতীয়। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশের উদ্দেশ্য ছিল স্রেফ বেড়ানো। আসলে যৌন-পর্যটন বা সেক্স ট্যুরিজম সিঙ্গাপুরে হয়নি, যেমনটা হয়েছে ব্যাঙ্কক বা কুয়ালা লামপুরে। তাই উদ্দাম বিনোদনের সুযোগ সেখানে নেই। সস্তায় কেনাকেটা করাও যায় না। সিঙ্গাপুরে পর্যটকদের সংখ্যার বিচারে ভারতীয় শহরগুলোর মধ্যে কলকাতার স্থান পঞ্চম। মুম্বই, চেন্নাই, দিল্লি ও বেঙ্গালুরুর পরে। লিওং-এর আশা, আরও কিছু কম খরচের উড়ান চালু হলে বেশি সংখ্যক কলকাতার পর্যটক পাবে সিঙ্গাপুর। এখন সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, সিল্ক এয়ার ও ড্রুক এয়ারের বিমান কলকাতা থেকে সরাসরি সিঙ্গাপুরে যায়। এর মধ্যে কম খরচের উড়ান বলতে শুধু সিল্ক এয়ার।
পর্ষদের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর চি পে চ্যাং জানান, পর্যটক টানতে ক্রুজ বা বিলাসবহুল জলযান নির্ভর পর্যটন ও ক্রীড়া-পর্যটনের উপর জোর দিচ্ছে সিঙ্গাপুর। এই সেপ্টেম্বরেই সে দেশে বসছে ফর্মুলা ওয়ান গ্রাঁ প্রি-র আসর। তখন সিঙ্গাপুর গেলে বিমান ভাড়াতেও কিছু ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে।
সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পর্যটক টানতে এখন এ সবই ভরসা সিঙ্গাপুরের।