যেন প্রায় প্রতি দিনই নতুন রেকর্ড গড়ার অভ্যেস করে ফেলেছে সেনসেক্স। সেই ধারা অব্যাহত রেখে শুক্রবার নিজের ইতিহাসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছে গেল বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের ওই সূচক। সপ্তাহের শেষ লেনদেনে আগের দিনের তুলনায় ৩৭৬.৯৫ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছে গেল ২৫,৩৯৬.৪৬ অঙ্কে। সেনসেক্সের ইতিহাসে এ যাবৎ যা সর্বোচ্চ।
এর আগে সেনসেক্সের সব থেকে উপরে ওঠার নজির ছিল গত ১৬ মে। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের ওই দিনে কেন্দ্রে স্থায়ী, শক্তিশালী সরকার আসার ইঙ্গিত পেতেই বাজার উঠেছিল দ্রুত। প্রথম বার ২৫ হাজারের গণ্ডি টপকে তা পৌঁছে গিয়েছিল ২৫,৩৭৫ অঙ্কে। দিনের শেষে অবশ্য তা নেমে এসেছিল অনেকটাই। এত দিন ওই শৃঙ্গই ছিল সেনসেক্সের সর্বোচ্চ বিন্দু। কিন্তু এ দিন (শুক্রবার) সেই উচ্চতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে সূচক। শুধু লেনদেন চলাকালীন টপকেই যায়নি, থেমেওছে তার থেকে বেশি উচ্চতায়। গড়েছে নতুন নজির।
বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উঠেছে টাকাও। ডলারের সাপেক্ষে তার দাম বেড়েছে ১৬ পয়সা। মার্কিন মুদ্রার দাম দাঁড়িয়েছে ৫৯.১৭ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দিন বাজারের উত্থানের মূল কারণ কেরলের উপকূলে বর্ষার মেঘের দেখা, জুলাই থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের দর বাড়ার সম্ভাবনা, ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বৃহস্পতিবার ইসিবি-র সুদ শূন্যের নীচে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত এবং দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সংস্কারমুখী বাজেট দেখার আশা। বিশেষত অনেকে মনে করছেন, বর্ষা আসায় শস্যের ফলন ভাল হবে। কমবে মূল্যবৃদ্ধি। তৈরি হবে সুদ কমার সম্ভাবনা। আর এই আশা ঠেলে তুলেছে বাজারকে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চিনিকলগুলিকে বিনা সুদে আরও ঋণ দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের ভাবনা।
কিন্তু অর্থনীতির মৌলিক পরিবর্তন ছাড়াই সূচকের এই দৌড় কত দিন স্থায়ী হবে? স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেন, “দীর্ঘ দিন পরে কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার আসায় লগ্নিকারীরা ভাবছেন, তারা দেশের উন্নতির জন্য পদক্ষেপ করবে। আর তাতে ভর করেই ভারতীয় ও বিদেশি লগ্নিকারীরা টানা টাকা ঢালছে বাজারে।” তা ছাড়া, বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসায় অনেক খুচরো লগ্নিকারীও সেখানে ফিরছেন।