জন-ধন প্রকল্প ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে ৬ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সকলের দরজায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দিতে শুধু অ্যাকাউন্ট খোলাই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সেখানে নিয়মিত লেনদেন। দেশের সব মানুষকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় আনতে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। জরুরি ব্যাঙ্কের বাড়িতে হাজির হওয়ার মানসিকতাও। শনিবার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য থেকে এই নির্যাসই উঠে এল ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ‘ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন’ (সকলের জন্য উন্নয়ন) সংক্রান্ত আলোচনায়।
বেসিক্স সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ গোষ্ঠীর সিইও বিজয় মহাজনের মতে, কারও নামে শুধু জিরো-ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট খুললেই, তাঁকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় আনা যায় না। সেখানে নিয়মিত লেনদেন হওয়া জরুরি। তা-না হলে, সে ভাবে কার্যকর হবে না জন-ধন প্রকল্পও। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “এই প্রকল্প সফল করতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি রাজ্যগুলিকেও এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অনুদান, ভর্তুকি ইত্যাদি দিতে হবে ওই সব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র গোটা চারেক রাজ্য এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে।”
বন্ধন-এর চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, “গ্রামের সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্কে আসবেন, এটা ভাবা ভুল। প্রথমত ব্যাঙ্কের শাখা অনেক সময়ই দূরে হয়। তার উপর ব্যাঙ্কে এলে ব্যাহত হয় তাঁদের প্রাত্যহিক রুজি-রোজগার। তাই ব্যাঙ্ককেই গ্রাহকের দরজায় হাজির হতে হবে।”
তা ছাড়া, মহাজনের অভিযোগ, জন-ধন প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা বিস্তারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কায়েমি স্বার্থ। তাঁর যুক্তি, সরকারি অনুদানের টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বন্টন হলে, তা মার যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ফলে তাতে স্বার্থ বিঘ্নিত হয় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর কে সি চক্রবর্তীর মতে, গরীবদের মধ্যে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা বাড়াতে হলে, লেনদেন খরচ কমানো একান্ত জরুরি।