দেশে ক্রমশ বাড়তে থাকা ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা আগেই খুলে দিয়েছে ‘হোম হেলথকেয়ার’-এর নতুন বাজার। এ বার শিশুদের জন্যও বাড়িতে টিকা দেওয়া ও চিকিৎসা করানোর সুযোগ খুলে দিচ্ছে আর এক বাজার।
কলকাতার একটি সংস্থার হাত ধরেই সূচনা হচ্ছে এই নতুন বাজারের। বাড়ি এসে যাবতীয় টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে স্টার্ট-আপ সংস্থা ইন্ডিভ্যাক। সংস্থার দুই কর্ণধার অমিত ও অলকেশ অগ্রবালের দাবি, পেশাদার প্যারামেডিকদের দিয়ে বাড়িতে টিকা দেওয়ার সুবিধা দেশে এই প্রথম চালু হচ্ছে এই শহরেই। এক কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি এই স্টার্ট আপ সংস্থা আপাতত কলকাতাতেই এই পরিষেবা দেবে।
ডাক্তারের চেম্বারে লম্বা লাইন দিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে অপেক্ষা করছেন বাবা-মা। টিকাদানের এটাই চেনা ছবি। সেই ছবিটা বদলে দিতে ইন্ডিভ্যাক অনলাইন মাধ্যমে শিশুর সমস্ত বিবরণ নথিবদ্ধ করবে। তারপর বাবা-মায়ের সময় ও সুবিধা মতো টিকা নিয়ে বাড়ি পৌঁছে যাবেন প্যারামেডিকরা। অমিত অগ্রবাল বলেন, ‘‘ওষুধ তৈরির তারিখ ও মেয়াদ কত দিনের, তা দেখে নিতে পারবেন বাবা-মায়েরা। দামও যাচাই করে নিতে পারবেন। এবং এই ওষুধ বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পোর্টেবল ফ্রিজ ব্যবহার করা হবে।’’
বাজারের মাপ বিশাল হলেও এখনই লাফিয়ে লাফিয়ে ব্যবসা বাড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ মানসিকতার পরিবর্তন দ্রুত সম্ভব নয়। এ কথা মেনেই ব্যবসা শুরু করেছেন বলে জানান অমিতবাবু। তবে তাঁর মতে, যে-ভাবে বয়স্কদের জন্য বাড়িতে স্বাস্থ্য পরিষেবার বাজার বাড়ছে, একই ভাবে বাড়িতে শিশুদের টিকাকরণের ব্যবসাও ছড়াবে। কারণ এ ধরনের পরিষেবা মিললেই তার চাহিদাও তৈরি হবে। বিশেষত, কর্মরত বাবা-মায়ের পক্ষে এই পরিষেবা বেশি কাজে আসবে। এসএমএস ও ফোন মারফত প্রতিটি টিকার নির্ধারিত তারিখের আগে বাবা-মাকে মনে করিয়ে দেওয়া হবে।
কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করে হায়দরাবাদ, চেন্নাই, দিল্লি, মুম্বই, পুণে শহরে এই পরিষেবা দেবে ইন্ডিভ্যাক। সংস্থার দাবি, আগামী দু’বছরে ২৪টি শহরে পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বাজারের টানেই সম্প্রসারণ পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে বলে জানান অমিতবাবু। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, প্রতি মাসে কলকাতা শহরে ২০ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রায় ৭ হাজার বেসরকারি হাসপাতালে জন্মায়। আর এই ৭ হাজারকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছে ইন্ডিভ্যাক।