জামিনের টাকা জোগাড়ের পথ খুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট

সুব্রত রায় জেলেই, ফের খারিজ গৃহবন্দী রাখার আর্জি

গত তিন মাস ধরে জেলবন্দী সুব্রত রায়কে গৃহবন্দী রাখার আর্জি বুধবার ফের খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে একই সঙ্গে তাঁর মুক্তির পথ প্রশস্ত করে এ দিন দেশে সংস্থার ন’টি সম্পত্তি বিক্রিতে সায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তুলে নেওয়া হয়েছে সংস্থার ফিক্সড ডিপোজিট ও বন্ড ভাঙানোর উপর জারি থাকা এতদিনের নিষেধাজ্ঞা। যাতে এ সব কিছুর মাধ্যমে সুব্রতবাবুকে জামিনে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় নগদ ৫,০০০ কোটি টাকা জোগাড় করতে পারে সহারা। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে বাকি ৫,০০০ কোটি জমা দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে মহারাষ্ট্রে সহারার নিজস্ব টাউনশিপ অ্যাম্বি ভ্যালি বন্ধক রাখার ক্ষেত্রেও অনুমতি দিয়েছে আদালতের বেঞ্চ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০২:১৯
Share:

গত তিন মাস ধরে জেলবন্দী সুব্রত রায়কে গৃহবন্দী রাখার আর্জি বুধবার ফের খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে একই সঙ্গে তাঁর মুক্তির পথ প্রশস্ত করে এ দিন দেশে সংস্থার ন’টি সম্পত্তি বিক্রিতে সায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তুলে নেওয়া হয়েছে সংস্থার ফিক্সড ডিপোজিট ও বন্ড ভাঙানোর উপর জারি থাকা এতদিনের নিষেধাজ্ঞা। যাতে এ সব কিছুর মাধ্যমে সুব্রতবাবুকে জামিনে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় নগদ ৫,০০০ কোটি টাকা জোগাড় করতে পারে সহারা। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে বাকি ৫,০০০ কোটি জমা দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে মহারাষ্ট্রে সহারার নিজস্ব টাউনশিপ অ্যাম্বি ভ্যালি বন্ধক রাখার ক্ষেত্রেও অনুমতি দিয়েছে আদালতের বেঞ্চ।

Advertisement

পাশাপাশি, সহারার বিদেশে থাকা সম্পত্তির অংশীদারি বিক্রির দরজা এ দিনও খোলা রেখেছে আদালত। তবে আগে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক অব চায়নার সঙ্গে এ নিয়ে সংস্থার কী কথা হয়েছে, তা আদালতে হলফনামায় জানাতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে খুশি সহারা গোষ্ঠী। এক বিবৃতিতে শীর্ষ আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেছে, “আমাদের বিশ্বাস ছিল ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা কখনও ভুল করতে পারে না। তাদের ন্যায়বিচার সম্পর্কে আমরা আজ ফের নিশ্চিত হলাম।” একই সঙ্গে অবশ্য তাদের প্রশ্ন যে, ওই সমস্ত নিষেধাজ্ঞা না-তুলেই কী করে গোষ্ঠীকে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো রেকর্ড অঙ্কের জামিন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যেখানে মাত্র ১০০ টাকা জোগাড়ের মতোই অবস্থা নেই তাদের।

Advertisement

গত ৪ মার্চ থেকে দুই ডিরেক্টর-সহ তিহাড় জেলে বিচারাধীন বন্দী হিসেবে রাখা হয়েছে সহারা কর্তাকে। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি জে এস খেহরের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার (৫,০০০ কোটি নগদ ও বাকিটা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে) জামিন জমা দিলে তবেই সুব্রতবাবুদের ছাড়া হবে। ওই শর্ত পরিবর্তন করার জন্য সহারার তরফে করা আর্জি এ দিনও খারিজ করে দিয়েছে টি এস ঠাকুর এবং এ কে সিক্রির নয়া বেঞ্চ। সুব্রতবাবুকে জেল থেকে জামিনে না-ছাড়া পর্যন্ত ‘গেস্ট হাউসে’ গৃহবন্দী রাখার আর্জিও একই সঙ্গে খারিজ করে শীর্ষ আদালত।

তবে সম্প্রতি সহারা মামলার বিচারের দায়িত্বে আসা ওই বেঞ্চ এ দিনের শুনানিতে সহারার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা তোলার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত দিয়েছেন

• কোনও সম্পত্তিই ‘সার্কেল রেট’-এর কমে বিক্রি করা যাবে না।

• সম্পত্তি যিনি কিনবেন, তিনি কোনও ভাবেই সহারা গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এমনকী তাঁর সঙ্গে সহারার কোনও দিক থেকে সামান্য সম্পর্কও থাকতে পারবে না।

• ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড ইত্যাদি ভাঙিয়ে এবং সম্পত্তি বিক্রি করে যে টাকা সহারার হাতে আসবে, তা জমা রাখতে হবে আলাদা একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যা থাকবে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির তত্ত্বাবধানে। তার বদলে সেবি-র ঘরে জমা থাকা সহারার বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে হবে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রককে।

• অ্যাম্বি ভ্যালি বন্ধক রেখে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির ব্যবস্থা করা যেতে পারে শুধু কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত কিংবা তফসিলভুক্ত (শিডিউলড) ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক মারফত নয়।

এ দিন অবশ্য জামিনের টাকা তিন কিস্তিতে জমা দিতে সহারার নতুন প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, বিষয়টি আগামী দিনে তিন বিচারপতির বেঞ্চ দেখবে বলেও জানিয়েছে তারা। ওই বেঞ্চ গড়বেন প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা।

এ ছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে এ দিন আইনজীবী এফ এস নরিম্যানকে এই মামলায় তাদের সহায়তার জন্য নিযুক্ত করেছে আদালত। প্রতিটি শুনানির ফি হিসেবে তাঁর প্রাপ্য ১.১০ লক্ষ টাকা মেটাবে সেবি। কিন্তু তা কাটা হবে সহারার অ্যাকাউন্ট থেকে, জানিয়েছে বেঞ্চ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন