হয়রানি। গত মে মাসে গ্রেফতার অ্যামওয়ে কর্তা পিঙ্কনি।—ফাইল চিত্র।
এখনও আইন চালু হয়নি ঠিকই। কিন্তু সরাসরি পণ্য বিক্রির (ডিরেক্ট সেলিং) সংস্থাগুলির জন্য অন্তত পৃথক নির্দেশিকা তৈরি করেছে কেরল, রাজস্থান। এ বার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছেও সে রকম নির্দেশিকা জারির আর্জি জানাল বণিকসভা ফিকি। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনার পরে এ বিষয়ে নির্দেশিকার খসড়া প্রস্তাব রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের কাছে পেশও করেছে তারা।
সাধনবাবু জানান, আইন তৈরি নিয়ে রাজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করবে। কারণ, কেন্দ্রীয় আইন চালু হলে, রাজ্য স্তরে নির্দেশিকা বা আইন প্রণয়নেও সুবিধা হবে। এ নিয়ে ফিকি-র প্রস্তাব খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি। মেনে নেন, এ ধরনের সংস্থাগুলির সঙ্গে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার তুলনা চলে না।
অ্যামওয়ের মতো ডিরেক্ট সেলিং সংস্থাগুলির বহু দিনের অভিযোগ, এ দেশে তাদের জন্য আলাদা আইন না-থাকায় বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির সঙ্গে কার্যত এক করে দেখা হচ্ছে তাদের। যা অযৌক্তিক। তাদের যুক্তি, অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি চড়া রিটার্নের লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের থেকে আমানত সংগ্রহ করে। সেখানে ডিরেক্ট সেলিং ব্যবসার মূল ভিত দোকান বা বাজারের বদলে ক্রেতা বা পণ্য ব্যবহারকারীদের মাধ্যমেই তা সরাসরি বিক্রি করা। অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিতে চড়া রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাজার থেকে টাকা তোলাই মূল কথা। সেই প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবসম্মত বা পরে তা আদৌ রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে ওই সংস্থাগুলি মাথা ঘামায় না। কিন্তু ডিরেক্ট সেলিং ব্যবসায় নির্দিষ্ট পণ্যই বিক্রি হয়। তা ছাড়া, অর্থলগ্নি সংস্থায় দলে কাউকে টানলেই কমিশন মেলে। কিন্তু ডিরেক্ট সেলিং ব্যবসায় তা মেলে পণ্য বিক্রির উপর।
তাই ডিরেক্ট সেলিং সংস্থাগুলির অভিযোগ, বিস্তর ফারাক থাকা সত্ত্বেও অহেতুক হয়রান হতে হয় তাদের। এমনকী এ জন্য গ্রেফতারও হয়েছেন ভারতে অ্যামওয়ে-র এমডি-সিইও উইলিয়াম এস পিঙ্কনি। ফলে আগামী দিনে এ ধরনের হয়রানি এড়াতে এবং দেশে ব্যবসা বাড়াতে এখন আলাদা আইনের দিকেই তাকিয়ে তারা।