Upanishad

উপনিষদ থেকে উঠে আসা এক জীবন ও সাধনা

মহিষ চরানোর উদ্দেশ্যে রাখালবালক ও ‘মৈষাল-বন্ধু’রা তিস্তাবক্ষের চরের মাঝে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে বাস করতেন। এ ধরনের গবাদি পশু রাখার স্থানকে বলা হয় ‘বাথান’।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

মৈত্রেয়ী কে ছিলেন? প্রাচীন বৈদিক যুগের দার্শনিক। বৃহদারণ্যক উপনিষদ বলে, তিনি ঋষি যাজ্ঞবল্ক্যের অন্যতম স্ত্রী। নানা দার্শনিক প্রশ্নে তিনি স্বামীর সঙ্গে তর্ক করতেন, এবং তাঁদের এই আলাপেই অদ্বৈত দর্শনের প্রাণটি গড়ে উঠেছিল। এই গ্রন্থের মুখ্য আশ্রয়ও দম্পতির চিন্তনের প্রশ্নগুলিই। তাঁদের যুগপৎ জ্ঞানের ও প্রেমের সাধনাই আজ থেকে প্রায় নব্বই বছর আগে এক সপ্তদশবর্ষীয় কলেজে পড়া তরুণকে এমন এক চিত্রনাট্য লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ১৩৪৫ বঙ্গাব্দে চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষক জনার্দ্দন চক্রবর্তী এই বইয়ের ভূমিকায় জানিয়েছিলেন, “এইরূপ যুগলকে মনে রাখিয়া উজ্জয়িনীর রাজকবি বলিয়াছিলেন, সমানয়ংস্তুল্যগুণং বধূবরং চিরস্য বাচ্যং ন গতঃ প্রজাপতিঃ। যাজ্ঞবল্ক্য মৈত্রেয়ী-পরিণয়ের তুলনা একমাত্র ভারতীয় সাহিত্যে মিলিবে পার্বতীপরমেশ্বরের পরিণয়ে, বৈদেহী-সীতাপতি-পরিণয়ে।” লেখকের গুণ বলতে হয়, ঔপনিষদিক কাহিনির উক্তি-প্রত্যুক্তির অংশগুলি এখানে নাটকোপযোগী করে তোলা হয়েছে, প্রেম-অনুরাগ প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছে গীতিধর্মী, এমনকি জায়গায় জায়গায় পাশ্চাত্যের ‘রোম্যান্স’-এর ধারণাও কাজে লাগানো হয়েছে। প্রকাশক ধন্যবাদার্হ— সমকালীন সাহিত্যজগতে আলোড়ন-সৃষ্টিকারী এবং বহু গুণিজনের সমাদৃত এমন একটি চিরন্তন চিত্রনাট্যকে তাঁরা আবার প্রকাশের আলোয় তুলে ধরলেন বলে।

Advertisement

মৈত্রেয়ী

শুভব্রত রায় চৌধুরী

Advertisement

৩৫০.০০

সিগনেট প্রেস

মহিষ চরানোর উদ্দেশ্যে রাখালবালক ও ‘মৈষাল-বন্ধু’রা তিস্তাবক্ষের চরের মাঝে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে বাস করতেন। এ ধরনের গবাদি পশু রাখার স্থানকে বলা হয় ‘বাথান’। বর্তমান সময়ে বাথান ও তার সংস্কৃতি স্বল্প আলোচিত, ক্ষেত্রসমীক্ষার ভিত্তিতে লেখা এই বইয়ের ৫৯টি পর্ব ও ১৭টি সংযোজন পাঠককে জানায় হারিয়ে যাওয়া সে সংস্কৃতির কথা। বাচ্চু, সানিয়া, আমির ও অন্য যারা বর্তমানে ‘মৈষাল-বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত, তাদের জীবনের কথা তুলে ধরেন লেখক। উঠে আসে সাত-আট দশক আগের বাথান-কথাও।

তিস্তাবাথান

নীলাঞ্জন মিস্ত্রী

৫৫০.০০

লা স্ত্রাদা

জানা যায় মহিষের প্রতি রক্ষকদের স্নেহ, অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা। আছে ‘ভুলাভারা দেও’ দেব-কল্পনা ও পায়ে হেঁটে তিস্তা পার হওয়ার মতো অলৌকিক ঘটনাপ্রসঙ্গ, মহিষের অভিশাপ, শুভাচুনি পুজো-সহ স্থানিক সংস্কৃতিলগ্ন খুঁটিনাটি। জলপাইগুড়িতে ১৯৬৮-র ভয়াবহ বন্যার প্রভাব বাথান ও তার সংস্কৃতির উপরেও পড়েছিল, রয়েছে তার বর্ণনাও। একশোরও বেশি বাথান, হাজার হাজার মহিষ এবং বহু মানুষের খোঁজ মেলেনি, কিন্তু এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারলেও বাথান মালিকরা শিকার হন অর্থনীতির ‘শাটডাউন পয়েন্ট’-এর। আধুনিক জীবনধারা ও অর্থনৈতিক লোকসানের কারণে মালিকরা বাথান তুলে দেওয়ায় ‘হেরে যাওয়া’ মানুষদের দলে পড়ছে মৈষাল-বন্ধুরাও। মৈষাল বন্ধু অলিন রায়ের কথায়, “ভইসের একটা অভিশাপ আছেরে দাদা... এই জমিজমা পুরাটাই তিস্তা হয়ে যাবে। কেউ বাঁচাতে পারবে না।” লেখকের তোলা আলোকচিত্রগুলিও এ বইয়ের বিশেষ প্রাপ্তি।

ডেটলাইন লালগড়

সম্পা: চিত্রদীপ চক্রবর্তী

২৯৯.০০

বসাক বুক সেন্টার

২০০৮-এর নভেম্বর। একের পর এক খুন, ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ— মাওবাদী আন্দোলনের জেরে লালগড় ও জঙ্গলমহল ছিল রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি-চর্চায়, মনে পড়বে মাওবাদী-দমনে রাষ্ট্রের সশস্ত্র অভিযানের স্মৃতিও। এই ঘটনাবহুল সংবাদক্ষেত্রেই ঢুকে পড়েন সাংবাদিকেরা। লালগড় আন্দোলনের চোদ্দো বছর পরে ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’য় উপস্থিত চব্বিশ জন সাংবাদিকের অভিজ্ঞতার আলোয় সাজানো এই বই। চমকপ্রদ সেই অভিজ্ঞতার সূত্রে পাঠক জানতে পারেন ‘ব্রেকিং নিউজ়’, কোনও বিশেষ ছবি, খবর বা সাক্ষাৎকার খোঁজ করার নেপথ্যকাহিনি। সাংবাদিকের পেশাদারিত্ব মেনে চলতে হলে ব্যক্তিগত মনোভাব প্রকাশ করা যায় না— তা সে সুখ, দুঃখ, রাগ বা ক্ষোভের অনুভূতি, যা-ই হোক না কেন। তার পরেও সাংবাদিকের মানবিক সত্তা এই অঞ্চলের মানুষের দারিদ্রকে সামনে থেকে দেখে কেন ও কী ভাবে নিজেকেও অপরাধী মনে করে, তার খোঁজ দেবে এই বই। খোঁজ মিলবে অপ্রকাশিত এক খবরেরও, সেখানে এক সাংবাদিক ছত্রধর মাহাতোর সঙ্গে ভাত খেতে বসে জানতে পারেন তাঁর পরবর্তী পরিকল্পনার নীলনকশা তৈরির প্রসঙ্গ। রয়েছে কিষেণজির সঙ্গে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতা, ‘ব্রেকিং স্টোরি’-র লক্ষ্যে অবিচল সাংবাদিকের অজানা অ্যাডভেঞ্চারের বর্ণনাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন