পুস্তক পরিচয় ২

ফিরে পাওয়া কিংবা নতুন দৃষ্টিতে দেখা

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের আখ্যানে আজও যেন নতুন নতুন বাস্তবতা কালোপযোগী হয়ে ওঠে— মনে করেন বৈশাখী-র (সম্পা: ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল) ‘তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যা’র অতিথি সম্পাদক সাধন চট্টোপাধ্যায়। আছে তারাশঙ্করকে নিয়ে সমালোচক ও স্বকালের সাহিত্যিকদের লেখার পুনর্মুদ্রণ, তাঁর কবিতা ও কথিকা, তাঁর লেখার চলচ্চিত্রায়ণ নিয়ে লেখা, ‘রাইকমল’-এর চিত্রনাট্য, জীবনপঞ্জি, তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও রচনার পঞ্জি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০০
Share:

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের আখ্যানে আজও যেন নতুন নতুন বাস্তবতা কালোপযোগী হয়ে ওঠে— মনে করেন বৈশাখী-র (সম্পা: ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল) ‘তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যা’র অতিথি সম্পাদক সাধন চট্টোপাধ্যায়। আছে তারাশঙ্করকে নিয়ে সমালোচক ও স্বকালের সাহিত্যিকদের লেখার পুনর্মুদ্রণ, তাঁর কবিতা ও কথিকা, তাঁর লেখার চলচ্চিত্রায়ণ নিয়ে লেখা, ‘রাইকমল’-এর চিত্রনাট্য, জীবনপঞ্জি, তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও রচনার পঞ্জি।

Advertisement

‘সাহিত্যরথী লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া গত উনিশ শতকের শেষ ভাগে কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘জোনাকি’ পত্রিকার রথ চালিয়ে যে অসমিয়া জাতীয় চৈতন্যের উদ্বোধন ঘটিয়েছিলেন সে-চৈতন্যের (আদর্শের) প্রভাব তাঁর জন্মের দেড়শো বছর পরেও সমানভাবে বয়ে চলেছে অসমিয়া জাতীয় জীবনে।’— জানানো হয়েছে একা এবং কয়েকজন-এর (সম্পা: উদয়ন বিশ্বাস) নতুন সংখ্যায়। সার্ধশতবর্ষে তাঁকে নিয়ে আলোচনা পত্রিকাটির ‘সমসাময়িক ভাবনা’-য়, অসমে বসবাসকারী বঙ্গীয় সমাজের মানুষজনের। সঙ্গে তাঁর রচনাদির বঙ্গানুবাদ ও জীবনপঞ্জি।

‘আমি ক্রমেই লোকনিন্দা বা প্রশংসার রাজ্য হইতে অপসৃত হইতেছি; অনুকূল বা প্রতিকূল সমালোচনায় আর আমার উপকার বা অপকার, লাভ বা ক্ষতি, প্রসাদ বা বিরক্তি জন্মিবার সম্ভাবনা নাই।’— রজনীকান্ত সেনের ‘আমার জীবন’, অংশত গল্পসরণি-র (সম্পা: অমর দে) ‘রজনীকান্ত সেন বিশেষ সংখ্যা’য়, জন্মসার্ধশতবর্ষে। গান, কবিতা, নানা লেখা, বংশলতিকা নিয়ে মূল্যবান এই সংখ্যা।

Advertisement

ব্রাহ্ম ভাবাদর্শ ও আন্দোলন নিয়ে দুই পর্বে প্রকাশিত দশদিশি (সম্পা: অতনুশাসন মুখোপাধ্যায়)। বলছে: ‘ব্রাহ্ম আন্দোলনের আদর্শের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার পাশাপাশি বৃহত্তর সমাজের দৃষ্টি থেকেও এ আন্দোলনকে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে যাকে খানিকটা পর্যবেক্ষণ-অনুধ্যায়ী প্রয়াস বলা যেতে পারে।’ তথ্য ও তত্ত্বের মিশেলে তৈরি রচনাদি থেকে ব্রাহ্ম আন্দোলনের ইতিহাসের সঙ্গে আছে কালপঞ্জি।

রূপান্তরকামী মানুষের জীবন, সাধনা, সংকট, আইনকানুন, মিডিয়ার প্রচার, আত্মকথা নিয়ে তৈরি থির বিজুরি-র (সম্পা: অপূর্ব সাহা) এ বারের সংখ্যা। ‘ডায়েরির ছেঁড়া পাতা’ অংশে ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রশ্ন: ‘নিজের জীবনটাকে নিজের ইচ্ছা এবং আনন্দ অনুসারে পরিবর্তন করার অধিকার কি আমাদের মৌলিক অধিকার নয়?’

সুবিমল মিশ্রের ইচ্ছাপত্র থেকে গ্রন্থতালিকা, সবই বাঘের বাচ্চা-র (সম্পা: স্বপন রঞ্জন হালদার) ‘সুবিমল মিশ্র সংখ্যা’য়, এটি পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যাও। তাঁর রীতিবিরুদ্ধ লেখালিখির শিল্পরীতি নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা। জানা গেল, সুবিমলের প্রিয় বাঙালি ঋত্বিক কুমার ঘটক, প্রিয় লেখক কমলকুমার মজুমদার, প্রিয় মানুষ জঁ লুক গোদার।

অসমের তেজপুরে চা-বাগানে কাজ-করা ‘মোহন বলেছিল, কাকু, আমার কাজের নেশা খুব। যে কোনো কাজ একবার দেখে নিলেই হল। চা-বাগানে কুলির কাজ। তিন-চার মাসে চায়ের বুশ, তাতে কখন নিড়তে হবে, সার দিতে হবে, কখন ছাঁটাই করতে হবে, পাতা তুলতে হবে— সবই আমার জানা হয়ে গেল।’ মোহন সিংয়ের মতোই আরও অনেক অচেনা মানুষের অজানা জীবনের কথা নিয়ে এবারের লোকসখা-র (সম্পা: মৃতু্যঞ্জয় সেন) বিষয়: ‘অচেনা মানুষের বিস্ময়কর কথা’। কর্মময় জগতের মানুষজনের কথা।

‘প্রবল মননশক্তি, কর্মশক্তিকে যদি জাগিয়ে রাখা যায় তাহলে সত্তরের শত্রুতাকে ভয় কি।’ আসন্ন বার্ধক্য বা জরা নিয়ে মন্তব্য নরেন্দ্রনাথ মিত্রের ডায়েরিতে। পদক্ষেপ-এর (সম্পা: জ্যোতির্ময় দাশ অসীমকুমার বসু) ক্রোড়পত্রটি নরেন্দ্রনাথকে নিয়ে প্রাক-জন্মশতবার্ষিকী সংখ্যা, পরিকল্পনা ও সম্পাদনা করেছেন অভিজিত্‌ মিত্র ও বন্দনা বসু। নরেন্দ্রনাথের অগ্রন্থিত রচনা, গ্রন্থপঞ্জির সঙ্গে তাঁকে নিয়ে অমর মিত্র গোপা দত্তভৌমিক ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের রচনা।

‘...ক্ষমতা মানুষকে হয়তো নিঃসঙ্গই করে দেয়’: এক সাক্ষাত্‌কারে বলেছেন গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। দুর্লভ আলোকচিত্র, জীবনপঞ্জি, অনূদিত রচনাদি, আর তাঁকে নিয়ে মূল্যায়ন কবিতীর্থ-এর (সম্পা: উত্‌পল ভট্টাচার্য) সংখ্যায়: ‘গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস: আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য’।

‘ক্ষুধার হামলা অত্যন্ত ভয়াবহ।’ সাদাত হাসান মান্টো’র বাক্য। কারুবাসনা-র (সম্পা: সব্যসাচী সেন) ক্রোড়পত্রে মান্টোর একগুচ্ছ গল্পের সঙ্গে তাঁকে নিয়ে কিছু আলোচনাও।

‘অনিল ঘড়াই খুঁজেছেন গ্রামের বিচিত্র মানুষ, বিচিত্র জীবন-জীবিকা, শোক-দুঃখ, অভিমান, সংগ্রাম এবং প্রেম ও প্রতিজ্ঞা। অনিলের সৃষ্টি সাফল্যের সহযোগী হয়েছে মেদিনীপুর, সিংভূম, বিহারের নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষাভঙ্গি।’ লিখেছেন লক্ষ্মণ কর্মকার তাঁর সম্পাদিত সৃজন-এর ‘অনিল ঘড়াই বিশেষ সংখ্যা’য়। মাস তিনেক হতে চলল, অনিল প্রয়াত।

অশোকনগর-এর (সম্পা: অভিষেক চক্রবর্তী রুদ্রদীপ চন্দ) ‘বিভূতিভূষণ সংখ্যা’য় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কালিদাস রায় সবিতেন্দ্রনাথ রায় প্রমুখের স্মৃতিচারণার সঙ্গে তাঁর কথাশিল্পের বিবিধ প্রসঙ্গ নিয়ে নিবন্ধাদি। দেবাশিস মুখোপাধ্যায়-কৃত তাঁর জীবন ও গ্রন্থপঞ্জি।

‘ঘৃণা এবং ভালোবাসা, ভাঙা এবং গড়া, সংঘাত এবং সম্ভোগ— প্রকাশের অস্মিতায় এবং আর্টে এরই টানাপোড়েন দেখতে পাই।’ শিবনারায়ণ রায় লিখেছেন প্রকাশ কর্মকার সম্পর্কে। আছে প্রকাশের আত্মকথা, তাঁকে নিয়ে হিরণ মিত্র, কমল চক্রবর্তী প্রমুখের লেখা, সাক্ষাত্‌কার। গত বছর প্রয়াত শিল্পীকে নিয়ে প্রকাশিত অন্যমন (সম্পা: মানসকুমার চিনি)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন