সংশয় নেই, এই এক সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে অনেকগুলো নিশানায় নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করলেন নরেন্দ্র মোদী। সংগৃহীত ছবি।
কুর্নিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীকে। কেন এই বাহিনী সারা বিশ্বের সমীহ আদায় করে নেয়, আরও এক বার সদর্পে তা প্রমাণ করল তারা। উরির ঘটনার পর ফুঁসছিল গোটা দেশ। তীব্র প্রত্যাঘাতে জবাব দিল ভারতীয় সেনা। গভীর রাতের অন্ধকারে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার এলাকায় ছড়ানো সাতটা জঙ্গি ঘাঁটি চার ঘণ্টার নিখুঁত অপারেশনে যে ভাবে গুঁড়িয়ে দিয়ে এল তারা, শত সাবাশিও কম পড়বে তার জন্য।
সংশয় নেই, এই এক সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে অনেকগুলো নিশানায় নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করলেন নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তানের মাটিতে আশ্রয় নেওয়া জঙ্গিদের নিকেশ করে মনোবলে বড় ধাক্কা দিতে পারা গেল যেমন এক দিকে, অন্য দিকে তেমনই পাকিস্তানের উদ্দেশেও কড়া বার্তা দেওয়া গেল আন্তর্জাতিক বিড়ম্বনা এড়িয়েই। এমনকী কৌশলটা এতই বুদ্ধিসঞ্জাত, পাকিস্তানও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল কলরোল তোলার বদলে ঢোক গিলতে বাধ্য হল। বলল, ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেইনি। অর্থাৎ ভারত সাপটাকে মেরে এল লাঠি না ভেঙেই।
দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক আঙিনাতেও মোদী অতএব ফিরে এলেন ৫৬ ই়ঞ্চিতে। অচ্ছে দিনের স্বপ্ন যত দূরে মিলিয়ে যাচ্ছিল, ছাতি যত ক্ষীণকায় হতে থাকছিল, তাতে উদ্বেগের মেঘ ঘনাচ্ছিল গেরুয়া শিবিরে। এই এক নিখুঁত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক মোদীকে আবার গৌরবের মহিমায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হল, সন্দেহ নেই। সেই হাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে কতটা স্বস্তিদায়ক অবস্থানে নিয়ে যাবে, তা বলবে ভবিষ্যৎ। তবে তার আগে, এক গভীর রাতের প্রত্যাঘাত মোদীকে প্রত্যাবর্তনের পথে যে নিয়ে এল, সেটা বুঝতে জ্যোতিষী হওয়ার দরকার পড়ে না।
সে সব রাজনীতির কথা। সেখানে ছাতির ওঠানামা হয়।
যেখানে ছাতির কোনও ওঠানামা নেই, যেখানে কঠিন পরিশ্রম, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, চূড়ান্ত দক্ষতা এক সাগরে এসে মেশে, সেই সেনাবাহিনী আরও এক বার এই দেশের আম আদমির ছাতিটাকে ফুলিয়ে দিল। আরও এক বার কুর্নিশ।