অদ্ভুত আঁধার আজ নামতে দেখছি পৃথিবীর বুকে।
পশ্চিম থেকে পূর্ব সব প্রান্তে আজ মহৎ সত্য বা রীতির বিসর্জনের সুর, আবাহন এখন বিভাজনী দানবিকতার। প্রেম-প্রীতি-করুণার আলোড়নহীন মানুষের দাপাদাপি এখন, এবং দুর্ভাগ্য কবির, হুবহু মিলে যায় তাঁর কথন বহু বছরের পর। দাপুটে ওই মানুষেরাই এখন শেষ কথা বলছেন, পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
ক্ষমতায় এসেই সাতটি মুসলিম দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আপাতত ১২০ দিনের জন্য, কিন্তু তার পরেও যে কঠোর ভঙ্গিই নেওয়া হবে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন তিনি। ধর্মীয় বিভাজনের মাপকাঠির আমদানিও করলেন তিনি, জানালেন, খ্রিস্টান শরণার্থীদের ক্ষেত্রে নিয়মটা আলাদা! মেক্সিকো সীমান্তেই শুধু নয়, বিশ্ব বরাবরই সবচেয়ে বড় এবং গভীর প্রাচীরটা আসলে তুলতে চাইছেন ট্রাম্প। সেই প্রাচীর বিভাজনের। আমরা এবং ওরার। অদ্ভুত আঁধার নয়?
আর ঠিক সেই সময়েই, এই ভারতে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের মুখে বিজেপি-র মুখে ফিরে এল রাম নাম। ঘর পোড়া গরু এ দেশের, রাম নামে বড় ডর লাগে তাদের, তবু রামমন্দির নির্মাণের চেষ্টার কথা শোনা গেল অমিত শাহের মুখে। উত্তরপ্রদেশ জয়ের লক্ষ্যে মরণকামড় বিজেপি-র, মেরুকরণ অর্থাৎ বিভাজনের পথটি ধরে মসনদে যাওয়ার চেষ্টা। ডিভাইড অ্যান্ড রুল কি শুধু ইংরেজ শাসকেরই একচেটিয়া? যোগ্য উত্তরসূরি কি দেখছি না রাজনৈতিক রণাঙ্গনে? অদ্ভুত আঁধার নয়? ধ্বংস তো সত্যিই আড়াই মিনিটের দূরত্বে মাত্র এখন, ডুমসডে ক্লক তো তাই বলছে!
তবু মনে হয়, এখানেই শেষ নয় নিশ্চয়। মানুষই এই শাসকদের নিয়ে এসেছেন, মানুষই তাদের প্রত্যাখ্যান করবেন। আমাদের গভীর আস্থা আছে আজও মানুষের প্রতি। অন্ধকারে সেটাই একমাত্র আলোকবর্তিকা হোক।