অনাহূত নয়। শরণার্থী ও সমাজকর্মী। ক্যালে, ফ্রান্স, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫। ছবি: রয়টার্স
আমি বিধ্বস্ত। আমি শুধু কোনও ক্রমে সেইখানে যেতে চাই যেখানে আমার প্রাণভয় থাকবে না।
হিকমেত। সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা উদ্বাস্তু মহিলা
কি ছুটা স্মৃতি-আক্রান্ত আমি। ইউরোপের ভূখণ্ডে, বিশেষ করে হাঙ্গেরিতে আছড়ে পড়া উদ্বাস্তুদের প্লাবন দেখে আমার গত শতকের সত্তর ও আশির দশকে জার্মানিতে উদ্বাস্তুদের আসার কথা মনে পড়ছে। তখন প্লাবন ছিল না ঠিকই, কিন্তু শরণার্থীদের একটি স্থির প্রবাহ সেই পর্বেও চলমান ছিল। শরণার্থীরা আসতেন মূলত বাংলাদেশ, ভারত আর শ্রীলঙ্কা থেকে। দাবি করতেন, তাঁরা হিংস্র রাজনীতির শিকার, প্রাণরক্ষার্থে পালিয়ে এসেছেন সুদূর জার্মানিতে। এই দাবি পুরোপুরি সত্য নয়। অনেকেই আসতেন নিছক অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে এবং তাঁদের সাহায্য করতেন দালাল ও পেশাদার আইনজীবীরা।
আদালতে যখন এই শরণার্থীদের ডাক পড়ত, তখন আমি ও আমার বাঙালি বন্ধুরা যেতাম দোভাষীর কাজ করতে। এক বার এক জার্মান উকিল তাঁর শরণার্থী-মক্কেলকে বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবি হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। বিচারককে উদ্দেশ করে উকিলটি বলেছিলেন, ‘মহামান্য বিচারক, তৃতীয় রাইশ-এর অধ্যায়টি দয়া করে ভুলবেন না। তখন বের্টল্ট ব্রেখ্ট থেকে শুরু করে টমাস মান-এর মতো কালজয়ী লেখকেরা তাঁদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিেলন নাৎসিদের ভয়ে। এই আমাদের ইতিহাস, এবং এই ইতিহাসই বলে দেয় যে বাংলাদেশের এই ব্রেখ্টকেও আমরা এ দেশে নিরাপত্তা দেব।’ বিরতির সময়ে যখন শরণার্থীটিকে কবিতার কিছু নমুনা পেশ করতে বলেছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘প্রাণভয়ে পালিয়ে এসেছি, তাই কবিতা সঙ্গে করে আনতে পারিনি।’
আর এক জন শরণার্থীকে বাঁচিয়েছিলেন তাঁর জার্মান ঠাকুমা। এই নিঃসঙ্গ অসহায় বৃদ্ধা আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আমার কোনও সন্তান নেই, আমি একেবারে একা। আমার সব কাজ করে দেয়, সারা দিন সাহায্য করে এই বাংলাদেশের তরুণ। সে আমার নাতি, আমি তাকে দত্তক নিয়েছি।’ এই ঘোষণার পর জার্মান বিচারক শরণার্থী-নাতিটিকে জার্মানিতে বাস করার অনুমতি বা অধিকার দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। সত্তর ও আশির দশকের এই অভিজ্ঞতা স্মৃতিতে এখনও উজ্জ্বল। তখন কি আর জানতাম যে পঁয়ত্রিশ বছর পর জার্মািন অভিমুখে ছুটবেন হাজার হাজার মানুষ, তাঁদের মধ্যেও হয়তো কয়েক জন কবি আর কয়েক জন শরণার্থী-নাতি রয়েছেন, কয়েক জন হয়তো খুঁজে পাবেন বিপত্তারিণী ঠাকুমাকে।
বর্তমানের গভীর সংকট
আমরা যদি আজ ইউরোপকে দ্বিখণ্ডিত বলি, হয়তো অত্যুক্তি হবে না। এক দিকে দক্ষিণ ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি, যেমন হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, অন্য দিকে উত্তর ও পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ: জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যান্ড, সুইডেন। শরণার্থীরা সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, হাঙ্গেরিতে ঠাঁই নিলেও তাঁদের লক্ষ্য জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন। হাঙ্গেরি ও ক্রোয়েশিয়া থেকে তাঁদের প্রায় গরু-ছাগলের মতো পাঠানো হচ্ছে উত্তরে ও পশ্চিমে।
আচরণেও কী নিদারুণ ভিন্নতা! নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা বলেছেন, হাঙ্গেরি কাঁদানে গ্যাস আর জল-কামান ব্যবহার করে শরণার্থীদের আটকাতে চাইছে, আর অন্য দিকে জার্মানি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড-এ সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন শরণার্থীদের সহানুভূতি জানাতে। যাঁরা হাঙ্গেরি থেকে ট্রেনে বা বাসে পশ্চিমে যেতে পারছেন না, তাঁরা ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটতে শুরু করেছেন অস্ট্রিয়ার দিকে।
হাঙ্গেরি, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া ইতিমধ্যেই বার বার ঘোষণা করেছে যে তারা শরণার্থীদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে অপারগ। আবার, জার্মানি জানিয়েছে যে, সে আগামী কয়েক বছরে সাত লক্ষ শরণার্থীকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
ফ্রান্স বলেছে, সে আশ্রয় দেবে দু’লক্ষ শরণার্থীকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্বদেশে জনমতের বহর দেখে বলেছেন, তাঁর দেশ শরণার্থীদের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। এ পর্যন্ত এ বছরে ৪,৭৩,৮৮৭ শরণার্থী ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে পা ফেলেছেন ইউরোপের ভূখণ্ডে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় অভিবাসন ইউরোপ দেখেনি।
অনেকে দাবি করছে, অচিরে শরণার্থীর সংখ্যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তিপর্বে সৃষ্ট শরণার্থীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে। সেই অধ্যায়ে অবশ্য খ্রিস্টানরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়েছিলেন, বর্তমানে কিন্তু মূলত মুসলমানরা সিরিয়া, ইরাকে তাঁদের ভিটেমাটি ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন। এবং ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভেনিয়ায় বাসিন্দারা আগেই জানিয়ে রেখেছেন যে, তাঁরা মুসলমানদের স্থান দিতে প্রস্তুত নন। এই প্রসঙ্গেই মনে আসে জার্মানির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট উদারপন্থী রিচার্ড ভন ওয়াইত্সেকার-এর উক্তি। ডানজিগে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনাচক্রে তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমরা ইউরোপীয়রা কবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মূল্য দিতে শিখব?’ মূল্য দেওয়া তো দূরের কথা, ক্রোয়েশিয়া আর হাঙ্গেরি সরকার আগেই বলে রেখেছে যে, প্রয়োজনে শরণার্থীদের ঠেকাতে তারা সীমােন্ত সেনাবাহিনী নিয়োগ করতেও প্রস্তুত।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী করছে? ইউরোপীয় ইউনিয়নের জরুরি বৈঠকগুলিতে বার বার সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে বলা হয়েছে, ‘আসুন, এই সংকটকালে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। আমরা একটা কোটা-ব্যবস্থার প্রবর্তন করি, যে ব্যবস্থা অনুসারে প্রত্যেকটি সদস্যদেশ নির্ধারিত সংখ্যার শরণার্থীদের গ্রহণ করবে।’
অবশ্যই জার্মানি, ফ্রান্স ও সুইডেনের মতো সমৃদ্ধ দেশগুলি বেশি শরণার্থীকে স্থান দেবে, আর তুলনায় কমসংখ্যক শরণার্থী স্থান পেতে পারেন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে, যারা ততটা সমৃদ্ধ নয়। এই অত্যন্ত সঙ্গত প্রস্তাব মেনে নিতে সব ক’টি রাষ্ট্র প্রস্তুত নয়। জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন ও ইংল্যান্ড রাজি হলেও, দক্ষিণ-পূর্বের দেশগুলি কোটা-ব্যবস্থাকে কোনও মূল্যই দিচ্ছে না। তাদের এই অসহযোগিতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে পর্যবেক্ষকেরা বলেছেন, এই অন্ধ একপেশে মনোভাবের ফলে সযত্নে গঠিত ও লালিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেঙে যেতে পারে। এই পরিণতি রোধ করার উদ্দেশ্যেই দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলিকে বারংবার আবেদন জানানো হচ্ছে, কিন্তু সেখানে নেতারা কেউই কর্ণপাত করছেন না। বরঞ্চ তাঁদেরই নির্দেশে সীমােন্ত বসানো হচ্ছে মেটাল ফেন্সিং, আর পুলিশ গ্রেফতার করছে শরণার্থীদের।
এটা ভাবলে ভুল হবে যে, দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি এক অখণ্ড অবস্থান নিতে সক্ষম হয়েছে। হাঙ্গেরি প্রতিবেশী দেশ সার্বিয়ার আবেদন অগ্রাহ্য করে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এর পর অনন্যোপায় শরণার্থীরা মাঠ পেরিয়ে, খেত পেরিয়ে ঢুকে পড়েন আর একটি প্রতিবেশী দেশ ক্রোয়েশিয়ায়। সে দেশ শুধু বিধিনিষেধই আরোপ করেনি, জোর করে শরণার্থীদের পাঠিয়ে দিচ্ছে হাঙ্গেরিতে, যেখান থেকে তাঁদের যাত্রা শুরু হওয়ার কথা পশ্চিম অভিমুখে। ইতিমধ্যে আনুমানিক কুড়ি হাজার শরণার্থী ক্রোয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছেন। তাঁদের উদ্দেশ করে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জোরান মিলানোভিচ কড়া ভাষায় বলেছেন, ‘পশ্চিেম পাড়ি দেওয়ার আগে এখানে তোমাদের কয়েক দিনের জন্য জলখাবার দেওয়া হবে, ব্যস। তার পর তোমাদের যাত্রা শুরু হবে।’
সমৃদ্ধ উত্তর-পশ্চিমের দেশগুলিও পূর্ণ মতৈক্যে পৌঁছতে পারেনি। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল শরণার্থী গ্রহণে যে উৎসাহ দেখিয়েছেন, তাকে ‘অত্যুৎসাহ’ বলে বর্ণনা করেছেন কিছু পর্যবেক্ষক। সুইজারল্যান্ডের একটি সংবাদপত্র তাঁর নাম দিয়েছেন ‘পাচার রানি’। এই মুহূর্তে সব থেকে বড় প্রশ্ন হল, যে এক লক্ষ কুড়ি হাজার শরণার্থী ইউরোপে পা রেখেছেন, তাঁদের নিয়ে কী করা হবে? এই কঠিন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলি কি কোটা ব্যবস্থার পক্ষে রায় দেবে? যদি দেয় তো ভাল, না হলে এক দারুণ সংকট ইউরোপকে গ্রাস করবে।
এক লেখকের পূর্ববাণী
ইউরোপের এই ঘোর সংকটপর্বে মনে পড়ছে এক প্রতিভাবান লেখকের কথা, যিনি কিছু দিন আগেই ইহলোক ত্যাগ করেছেন। লেখকের নাম গুন্টার গ্রাস। গত চার দশক ধরে তিনি বলে এসেছেন যে, ‘ফরট্রেস ইউরোপ’ বা দুর্গ ইউরোপের ভাঙন ও পতন অবশ্যম্ভাবী। প্রথমে তিনি এক ফ্যান্টাসি-উপন্যাস ‘হেডবার্থস অব দ্য জার্মানস আর ডাইং আউট’-এ দেখিয়েছেন, কী ভাবে বিশ্বের শিশুরা বেমালুম দখল করে নিচ্ছে জার্মান অধ্যুষিত জার্মানি। গল্পটি এ রকম: এক জার্মান দম্পতি নানা স্বার্থান্ধ কারণে ঠিক করে উঠতে পারছেন না তাঁরা আদৌ সন্তানের জন্ম দেবেন কি না। গাড়ির ভিতর বসে তঁারা ব্যাপক হিসেবনিকেশ করছেন। হঠাৎ তঁারা চোখ খুলে দেখলেন যে তঁাদের গাড়িকে ঘিরে ধরেছে বিশ্বের যত দামাল শিশু— আফ্রিকান, তুর্কি, চিনা, ভারতীয়। সবাই উৎসবে মত্ত। এই শিশুদেরা দেখে তঁারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছেন, আর এ ভাবেই বিদেশি শিশুরা দখল করে নিচ্ছে জার্মানিকে।
এর পর একটি ক্ষুরধার নিবন্ধে গ্রাস খোলাখুলি বলেন, ‘আমাদের এই জার্মানিতেই রোমা ও সিন্টি জিপসি বা ভবঘুরেদের স্থান দিতে হবে। তারা বর্ণময় ও চঞ্চল, এবং তাদের উপস্থিতি এই একরঙা জার্মানিকে আরও অনেক আকর্ষণীয় করে তুলবে। অর্থাৎ, সমৃদ্ধ-সুবিন্যস্ত জার্মানির নিরুত্তাপ জীবন হয়ে উঠবে সংগীতময় ও আবেগদীপ্ত।’
অভিবাসনের একটি অবিস্মরণীয় চিত্র তিনি এঁকেছেন ‘কল অব দ্য টোড’ নামের উপন্যাসে। এই রচনায় তিনি দেখিয়েছেন কী ভাবে ডানজিগ শহরকে বাঙালি অধ্যুষিত করছেন এক শিল্পোদ্যোগী বাঙালি, যাঁর নাম সুভাষচন্দ্র চ্যাটার্জি। লন্ডন থেকে আগত এই বাঙালি ইউরোপের বড়-ছোট শহরগুলিতে রংবেরঙের, সুমিষ্ট ঘণ্টাধ্বনি-সহ সাইকেল রিকশা প্রবর্তন করেছেন এবং তার ফলে রাস্তাঘাটে দূষণের মাত্রাও দারুণ ভাবে কমে এসেছে। এই রিকশাগুলি চালাচ্ছেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের তরুণ বাঙালি। তাঁরা খাস ইউরোপকে করে তুলছেন এশীয়। তাঁরা সঙ্গে করে এনেছেন মা-কালীকে, যিনি আনন্দে স্থান করে নিয়েছেন ডানজিগের কৃষ্ণবর্ণ ম্যাডোনার পাশে। গ্রাসের মতে বা পূর্ববাণী অনুসারে, এই অভিবাসনের ফলেই ইউরোপ হারাতে চলেছে তার ইউরোপত্ব। ‘ইউরোপ পূর্বনির্ধারিত এশীয় ভবিষ্যতের অভিমুখী। জাতীয় সংকীর্ণতা সেখানে নেই, ভাষার বিভাজন তাদের পৃথক করছে না, বিচিত্র সংগীতধ্বনির মতো ধর্মীয়; সর্বোপরি অনেক ধীর, উষ্ণ ও সিক্ত আবহাওয়ার প্রভাবে মেদুর।’
গ্রাসের এই স্বতন্ত্র চিন্তার সূত্র সব থেকে জোরালো ও সুস্পষ্ট ভাষা পরিগ্রহ করে তাঁর নোবেল পুরস্কার উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে। ভাষণের শেষ অনুচ্ছেদে তিনি বলেন, ‘সমৃদ্ধ উত্তর ও পশ্চিম আপ্রাণ চেষ্টা করবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে। নিরাপত্তামত্ত দুর্গের সারি তারা তৈরি করবে। কিন্তু উদ্বাস্তুদের স্রোত ঠিক পৌঁছে যাবে। কোনও প্রাচীরই ক্ষুধার্তদের চাপ ঠেকাতে পারবে না।’
আমি কিন্তু গ্রাস-কে খুব মিস করছি। আজ যদি উনি জীবিত থাকতেন, নিশ্চয়ই প্ল্যাকার্ড-হাতে মিউনিখে চলে যেতেন উদ্বাস্তুদের আমন্ত্রণ জানাবার জন্য। তাঁর হাতে ধরা সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকত: Herzlich willkommen. অর্থাৎ, ‘হৃদয় থেকে স্বাগত।’