Assembly election 2018

উদ্যত বন্দুকের সামনে আর কত দিন?

উদ্যত বন্দুকের সামনে ভোট হল ছত্তীসগঢ়ে। কিন্তু আর কত দিন এ ভাবে? রয়ে গেল সে প্রশ্নও।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

খুব বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হল ভারতের গণতন্ত্র। উদ্যত বন্দুকের সামনে ভোট হল ছত্তীসগঢ়ে। কিন্তু আর কত দিন এ ভাবে? রয়ে গেল সে প্রশ্নও।

Advertisement

ছত্তীসগঢ়ে দক্ষিণাংশে ভোট হয়েছে সোমবার। দেশে এই মুহূর্তে মাওবাদীদের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি ওই অঞ্চলেই। যে কোনও নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল মাওবাদীরা। ভোটের আগের দিন দক্ষিণ ছত্তীসগঢ়ের সাতটি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল তারা। ভোটের দিনও সবরকম ভাবে চেষ্টা হল ভোট প্রক্রিয়া ভেস্তে দেওয়ার। বিজাপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের গুলির লড়াই চলল। তাও মানুষকে আটকে রাখা গেল না ঘরে। প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ মাওবাদী হানার ভ্রুকুটি মাথায় নিয়ে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছলেন, প্রয়োগ করলেন নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার।

ছত্তীসগঢ়ের দক্ষিণাংশে যতটা নির্বিঘ্নে ভোট হল, ততটা আশা করেনি রাজনৈতিক শিবিরও। মাওবাদীদের তরফে আহ্বান ছিল ভোট না দেওয়ার। সরকারের কাছে তাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। সেই চ্যালেঞ্জে সসম্মানে উত্তীর্ণ হল প্রশাসন তথা নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

মাওবাদী উপদ্রুত বস্তারেও বিপুল সংখ্যক ভোটারকে বুথমুখী করতে পারা প্রশাসনের মুকুটে নতুন পালক। কিন্তু একই সঙ্গে খুব বড় প্রশ্নেরও জন্ম দিয়ে দিল এই ভোট। আর কত দিন এভাবেই কাটাতে হবে বস্তারবাসীকে? দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে মাওবাদী হিংসার ভরকেন্দ্র হয়ে রয়েছে বস্তার। নানা সমাজকল্যানমূলক প্রকল্পের ঘোষণা, ঢালাও উন্নয়নের চেষ্টা, বছরভর মাওবাদীদের বিরুদ্ধে আধা সামরিক বাহিনীর অভিযান— এত কিছু সত্ত্বেও দু’দশক ধরে ছত্তীসগঢ়ের বনাঞ্চল থেকে নির্মূল করা গেল না মাওবাদীদের। ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট নেওয়ার জন্য ৬৫,০০০ জওয়ানকে ময়দানে নামিয়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হল।

আরও পড়ুন: ভোটের রাতে বেদম নাচ আর মাংস-ভাত

গণতন্ত্রের উৎসবে মেতে ওঠার জন্য দক্ষিণ ছত্তীসগঢ়ে সাধারণ জনতাকে অভিনন্দন জানাতেই হচ্ছে। অভিনন্দন জানাতে হচ্ছে প্রশাসনকে তথা নির্বাচন কমিশনকেও। বস্তার এলাকায় মোটের উপর রক্তপাতহীন নির্বাচন করানো মুখের কথা নয়। তবে, বছরের পর বছর ধরে ছত্তীসগঢ়ের দক্ষিণাঞ্চলে মাওবাদীদের উপদ্রব যে নিয়ন্ত্রণে আনা গেল না, এ কিন্তু কম লজ্জার কথা নয়। নির্বাচনটা মোটের উপর নির্বিঘ্নে সামলে দেওয়া গেল ঠিকই। কিন্তু এ বার সারা বছরের জন্য বস্তারকে সামলে নেওয়ার সময় হয়েছে। সেই লক্ষ্যে সরকার কতটা সফল হয়, গোটা দেশের নজর কিন্তু সে দিকেই থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন