ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস কড়া হুঁশিযারি দিলেন। গোরক্ষার নামে তাণ্ডবের প্রসঙ্গে তাঁর নীরবতা ভেঙে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেদিন স্বঘোষিত গোরক্ষকদের উদ্দেশে কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন, ঠিক সেই সময়েই রঘুবর দাসের রাজ্যে গরুর নামে বজ্জাতির নৃশংস কাণ্ড ঘটেছিল আরও একবার। গোটা ভারত আরও একবার স্তম্ভিত হয়েছিল।
সেহেন রঘুবর দাস গোরক্ষকদের প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিলেন। রাজ্যবাসী আইন হাতে তুলে নিলে কড়া ব্যবস্থা নিতে বললেন পুলিশকে। কঠোর বার্তা, সন্দেহ নেই। তবু এ দেশের ঘরপোড়া মানুষ ডরায়, যখন অভিজ্ঞতার ঝুলি খুলে মিলিয়ে দেখে, এই সব হুঁশিয়ারি শেষ পর্যন্ত বর্ষণহীন গর্জনই থেকে গিয়েছে। কারণ, বার্তাপাঠের শিক্ষাও ইতিমধ্যে নিয়ে নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ সবাই।
যেমন রঘুবর দাসের এই নতুন বার্তারই দু’টি অংশের দু’টি পাঠ রয়েছে। এক অংশ ইতিমধ্যেই জানিয়েছি। হুঁশিয়ারি কড়া, কিন্তু পুলিশ যদি কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে কী হবে? সেই বার্তা নেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। প্রশ্ন উঠতেই পারে, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে সেই বার্তাও থাকতে হবে নাকি? না থাকাটাই স্বাভাবিক বলে প্রতিভাত হত, যদি না রঘুবর দাস নিজেই অন্য রকম ভাবতেন। এই হুঁশিয়ারিরই অন্য পর্বে মুখ্যমন্ত্রী কঠোরতর। সেই পর্ব গরু পাচার সংক্রান্ত। কোনও থানা এলাকার গরু পাচার বরদাস্ত করা হবে না, পুলিশকে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, গরু পাচার হলে ওই থানার ওসি-কে বরখাস্ত করা হবে। সংশয়ের ন্যূনতম অবকাশটুকুও সরিয়ে দিয়েছেন রঘুবর নিজেই।
বার্তাপাঠের শিক্ষাটা তাই প্রয়োজনীয়। কোনটা গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটা গুরুত্বহীন হুঁশিয়ারি, সেটা অনুধাবন করা জরুরি। পাঠপর্বের প্রথম অধ্যায় চলছে হয়ত, তাই মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি বুঝিয়ে দিতে হল হয়ত এই ক্ষেত্রে। নিশ্চিন্ত থাকুন, পরবর্তী পর্যায়ে তার আর দরকারও থাকবে না। পুলিশ নিজেই বুঝে নেবে।
এই বাংলা সহ অনেক রাজ্যই বহু বছরের চর্চায় বিষয়টাকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।