পুরনো হিন্দি গানই স্ট্রেস কমানোর দাওয়াই
আজকাল সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেশের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি কী করেন জানেন? চা খেতে খেতে আর কাগজ পড়তে পড়তে পুরনো হিন্দি গান শোনেন। অরুণ কিশোরকুমারের ভক্ত, দিলীপকুমার থেকে দেবানন্দের ছবির পোকা। তা হঠাৎ এই গান শোনার হুজুগ? পুত্র রোহন ক্যারাভান নামের একটি যন্ত্র কিনে দিয়েছেন। দেখতে পুরনো মারফি রেডিয়োর মতো। এতে আছে বহু পুরনো গান, যন্ত্রসংগীত, পাশ্চাত্যসংগীত। মন্ত্রীর স্ট্রেস দূর করার অনবদ্য উপায়। অরুণ সম্প্রতি অবাক হয়েছেন লালকৃষ্ণ আডবাণীর বাড়ি গিয়ে। আডবাণীও এই নয়া রেডিয়োতে গান শুনছেন! কন্যা প্রতিভা খান মার্কেট থেকে বাবার জন্য কিনে এনেছেন। আডবাণী জানিয়েছেন, তিনি এখন আর টিভিতে নিউজ শোনেনই না। মাঝে মাঝে পুরনো সিনেমা দেখেন, আর ক্যারাভানে গান শোনেন।
রক্তে যখন প্রশাসন
পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য। এ কথা শুনেই নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক প্রবীণ অফিসার বললেন, ‘‘ওঁর বাবা বিশ্বক ভট্টাচার্যও তো আমলাই ছিলেন! কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়ন মন্ত্রকে যখন ছিলেন, তখন ওঁর সঙ্গে কাজ করেছি। দাপট ছিল বটে লোকটার! বিশ্বকবাবু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আর্থিক অডিট সংক্রান্ত বিষয়ের মতো সংবেদনশীল দফতরেও কাজ করেছেন। তাই বয়স যতই কম হোক, অত্রির রক্তে কিন্তু প্রশাসন! ’’ দিল্লির এক বাঙালি আইএএস অফিসার বললেন, ক্যাপস্টান সিগারেটের কাগজে তামাক দিয়ে সিগারেট বানিয়ে সুখটান দিতে দিতে ফাইল দেখতেন বিশ্বকবাবু। এখন কলকাতার বাড়িতে পিতা-পুত্র একসঙ্গেই থাকেন। এত বছর পর দিল্লির আড্ডায় ফের উঠে এল বিশ্বকবাবুর গল্প!
মুকেশের গুরুত্ব
হোক ছোট অগ্নিকাণ্ড। তবু বাড়িটা মুকেশ অম্বানীর। দক্ষিণ মুম্বইয়ের মালাবার হিল্স-এ ১৩ হাজার কোটির অট্টালিকায় গত ১১ জুলাই হঠাৎ আগুন। কয়েক মিনিটের মধ্যে নিভেও গেল। কিন্তু এই ছোট্ট খবরেই দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দ উত্তাল। হাফ ডজন মন্ত্রী ফোন করেছেন শিল্পপতিকে। সব ঠিক আছে তো? তেমন কোনও লোকসান হয়নি তো? কারও গায়ে আগুন লাগেনি তো? ফোর-জি টাওয়ারে আগুন লাগায় এটা হল? কেন হল? আরও বহু প্রশ্ন। রাজধানীতে মুকেশ অম্বানীর গুরুত্ব বোঝা গেল কয়েক মিনিটের ঘটনায়।
অভিষেক-অভিযান
এ বার টার্গেট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হল থেকে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার, সর্বত্র প্রশ্ন, শুনছি এ বার অভিষেক? জল্পনার সূত্র বিজেপি। অশোক রোড সূত্র বলছে, শিগগিরই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এনফোর্সমেন্ট ও আয়কর বিভাগ হানা দেবে অভিষেকের বাড়ি ও অফিসে। কেন? কেউ জানে না। অভিষেকের জনসভায় এখন ভিড় খুব। অভিষেক নতুন প্রজন্ম, আগামী দিনের নেতা। ওঁকে টানলে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করা যাবে। শোনা যাচ্ছে, অরুণ জেটলি এখনও এহেন রাজনৈতিক অভিযানে ইচ্ছুক নন।
জিএসটির জবাব
এক সময় আইএএস-এর চাকরি ছেড়ে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করতে চলে গিয়েছিলেন। সিসকো, পরে মাইক্রোসফটে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন প্রকাশ কুমার। আইএএস-এর অভিজ্ঞতা, আবার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার পেশাদারিত্ব, এমন ককটেল মেলা ভার। জিএসটির জন্য পাহাড়প্রমাণ তথ্যপ্রযুক্তি কাঠামো সামলাতে তাই তাঁরই ডাক পড়েছিল। জিএসটি নেটওয়ার্কের সিইও প্রকাশ কুমার শুরুটা উতরে দিয়েছেন। হাসিমুখে লাখো ব্যবসায়ীর প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সব থেকে বেশি কোন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে? প্রকাশের অবাক-করা জবাব: ‘‘জিএসটি পোর্টাল লগ-ইন করব কী করে!’’ আর ‘‘পাসওয়ার্ড ভুলে গিয়েছি, এ বার কী করব!’’
দিল কা রাজা
যখন-যেমন: রামবিলাস পাসোয়ান
রামবিলাস পাসোয়ান সম্পর্কে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে একটা কথা চালু। তিনি নাকি হাওয়া বুঝতে পারেন একটু আগে, সেই মতো নিজেকে বদলেও ফেলেন! সম্প্রতি তার সাক্ষী থাকলেন ক’জন সাংবাদিক। পাসোয়ান তাঁর জন্মদিনে অফিসে বসে কথা বলছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। খবর এল, রাজা মুরাদ দেখা করতে এসেছেন ফুল নিয়ে। পাসোয়ান তাঁকে চেনেন না, তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বললেন, ‘‘রাজা না কে, বসিয়ে রাখো আপাতত। সময় হবে না।’’ ঘটনা বুঝতে পেরে সাংবাদিকদের এক জন বললেন, রাজা মুরাদ বলিউডের এক জন খ্যাতনামা অভিনেতা। অনেক ছবিতে কাজ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভিতরে আসতে নির্দেশ। পরের দৃশ্য, ফুল নিয়ে ঢুকছেন এই বলিউডি ভিলেন। চেয়ার ছেড়ে তখন উঠে দাঁড়িয়েছেন রামবিলাস, দু’হাত প্রসারিত। বললেন, ‘‘আসুন, আসুন! কবে থেকে আপনার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল! আপনি তো আমার দিল-এর রাজা!’’
জয়ন্ত ঘোষাল, অগ্নি রায়,
অনমিত্র সেনগুপ্ত, দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চৌধুরী