‘পারি’: নরেন্দ্র মোদী ও শিনজ়ো আবে
চপস্টিকে আছেন মোদী, গল্ফ স্টিকেও
চপস্টিকে স্বচ্ছন্দ হাতের আঙুল দেখলে কে বলবে, তিনি নিরামিষপ্রিয় গুজরাতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমনই রপ্ত করেছেন চপস্টিক নিয়ন্ত্রণ। ভারতে এসে শিনজ়ো আবেরও তাক লেগে গিয়েছিল। জাপানে গেলেও মোদী চপস্টিকই ব্যবহার করেন। ৬৭ বছর বয়সেও প্রধানমন্ত্রীর শেখার ইচ্ছে ও ক্ষমতা, কোনওটিতেই ভাটা পড়েনি। তবে মোদীর চপস্টিকে খাওয়া শেখা আরও আগে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় থেকেই। গুজরাতে জাপানি শিল্পপতিরা লগ্নি নিয়ে আসতেন। তাঁদের সঙ্গে মেলামেশা করতে করতেই চপস্টিকের পাশাপাশি গল্ফ স্টিকও হাতে তুলেছিলেন মোদী। জাপানিদের গল্ফ খেলার নেশা। তাই আমদাবাদে গল্ফ ক্লাবও খুলেছিল। সেখানে গিয়ে মোদীও গল্ফ স্টিকে বেশ কয়েক বার হাত পাকিয়েছেন।
নিতিনের মার্কিন স্বপ্ন
এক সময় লালুপ্রসাদ কথা দিয়েছিলেন, তিনি বিহারে হেমামালিনীর গালের মতো মসৃণ রাস্তা তৈরি করবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। নিতিন গডকড়ী এ বার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, তিনি ভারতকে আমেরিকা বানিয়ে দেবেন। মুখে বলেননি কথাটা। কিন্তু দিল্লিতে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকে ঢুকলেই নিতিনের ভাবনা স্পষ্ট। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের দেওয়ালে দেওয়ালে ঝুলছে জন এফ কেনেডির বাণী। তা হল, আমেরিকা ধনী দেশ বলে সেখানকার রাস্তা ভাল, তা নয়। রাস্তা ভাল বলেই আমেরিকা ধনী দেশ। নরেন্দ্র মোদীর সড়ক মন্ত্রীর বার্তার মর্ম বোঝা কঠিন নয়। তিনি ভাল রাস্তা তৈরি করবেন। তবেই ভারত আমেরিকা হবে।
তেজপ্রতাপের রুদ্র
বলিউডে পা রাখছেন তেজপ্রতাপ যাদব। লালুপ্রসাদের জ্যেষ্ঠ পুত্রই তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হবেন, ভাবা হয়েছিল। লালুও প্রথমে তা-ই চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে সে জায়গা নিয়ে নেন ছোট তেজস্বী। নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোটের সময় তেজস্বী উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এখন তিনি বিরোধী দলনেতা। তেজপ্রতাপ কি সে কারণেই রুপোলি পর্দায় আসছেন? বিহারের আর এক নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগও বলিউডে ভাগ্য পরীক্ষা করেছিলেন। এখন অবশ্য তিনি সাংসদ। সিনেমায় কাজ কমলেও কনট প্লেসের কাছে এক পাঁচতারা হোটেলের জিমে তাঁকে নিয়মিত শরীর চর্চা করতে দেখা যায়। তেজপ্রতাপ জানিয়েছেন, তাঁর ছবির নাম ‘রুদ্র— দি অবতার’। রুপোলি পর্দায় কেমন তেজ ছড়ান তিনি সেটাই দেখার।
সয়াবিন যুদ্ধ
দু’জনেই নরেন্দ্র মোদীর কাছের মানুষ। এক জন যোগগুরু। অন্য জন শিল্পপতি। তাঁদের যুদ্ধ লেগেছে সয়াবিনের দখল নিয়ে। খোলসা করে বলা যাক। বাবা রামদেব ও গৌতম আদানি। রামদেবের পতঞ্জলি এবং গৌতম আদানির আত্মীয় প্রণব আদানির আদানি উইলমার, দুই সংস্থাই দেউলিয়ার খাতায় নাম লেখানো রুচি সয়া কোম্পানিকে কিনতে চায়। আদানিরা নিলামে জিতেছে। তাদের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকেছে পতঞ্জলি। বিনা যুদ্ধে কেউই সূচ্যগ্র সয়াবিন ছাড়তে রাজি নয়।
আম রাজনীতি
আমভক্ত: মেলায় ভাস্কর (ডান দিকে)
এ দেশের ইতিহাসে রাজারাজড়াদের মধ্যে আম-কূটনীতি প্রচলিত। ভোটের রাজনীতিতেও আমের গুরুত্ব কমেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক দিল্লি সফরে কংগ্রেসের আহমেদ পটেল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন গুজরাতের আম নিয়ে। এ বার দিল্লিতে বাংলার আমের মেলা বসেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঝুড়ি ভর্তি আম গেল প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নানা দলের নেতাদের কাছে। বঞ্চিত হননি আম আদমি পার্টির নেতারাও। মেলায় ঘুরে গেলেন প্রধানমন্ত্রীর সচিব ভাস্কর খুলবে। অতীতে পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনার হিসেবে যিনি ছিলেন এ সব অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা। মালদহ-মুর্শিদাবাদের
আম মেলায় বোনাস ছিল রাজ্যের মাছের সম্ভার। হিমসাগর, ল্যাংড়া, লক্ষ্মণভোগ, আম্রপালি, মল্লিকার সঙ্গে দেদার বিকোল চিংড়ি, পাবদা, পার্শে।
গীতে-গাতে
শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক নরমে-গরমে। মোদী সরকারের ক্যাবিনেটে শিবসেনার একমাত্র প্রতিনিধি অনন্ত গীতে। ভারী শিল্পমন্ত্রী গীতে তাঁর মন্ত্রকের চার বছরের কাজকর্ম নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে বসেছিলেন। শিবসেনা-বিজেপির সম্পর্ক নিয়েই প্রশ্ন শুনতে হল বেশি। অন্য মন্ত্রকের সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রীরাও ছিলেন। অনন্ত গীতের পাশে দেখা মিলল না তাঁর প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়েরও। দফতরের এক কর্তার সরস মন্তব্য: ‘‘দোনো হি মুম্বইসে। এক গীতে হ্যায়, এক গাতে হ্যায়।’’
জয়ন্ত ঘোষাল, প্রেমাংশু চৌধুরী