Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: সোয়েটার অতীত, এ বার জ্যাকেটে কেজরী

গোড়ায় কালোতে ভরসা রাখলেও, ভোটপ্রচার যত এগিয়েছে তত সবুজ জ্যাকেট পরছেন। এই রং পরিবর্তনের পিছনে গণিত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেক ভোটকুশলী।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী, অনমিত্র সেনগুপ্ত, অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:২৪
Share:

তাঁর পরিধান বরাবরই ছিল চর্চার বিষয়। আগে তাঁর ফ্যাশন ট্রেডমার্ক ছিল ফুলহাতা সোয়েটার আর গলা, মাথা, কানে পেঁচানো মাফলার। মাঝেমধ্যেই খুকখুক করে কাশতেন। বেঙ্গালুরুতে অপারেশনের পর সেই কাশির সমস্যা আর নেই। এ যাত্রায় দিল্লির ভোটপ্রচারে চিরপরিচিত নীল সোয়েটারও কার্যত ছেঁটে ফেলেছেন। প্রচারে হাল ফ্যাশনের মোটা পাফার জ্যাকেট পরতে দেখা যাচ্ছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে। গোড়ায় কালোতে ভরসা রাখলেও, ভোটপ্রচার যত এগিয়েছে তত সবুজ জ্যাকেট পরছেন। এই রং পরিবর্তনের পিছনে গণিত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেক ভোটকুশলী। দিল্লিবাসী বলছেন, জ্যাকেট পরে আগের চেয়ে অনেক বেশি ‘স্মার্ট’ লাগছে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে, মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েই সরকারি বাসভবনকে তিনি শিশমহল বানিয়ে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ। এখন কি দামি ব্র্যান্ডের পোশাক ছাড়া গায়ে তুলছেন না? কেজরীওয়াল স্বভাবসিদ্ধ সরস ভঙ্গিতে জানিয়েছেন, এই জ্যাকেট দিল্লির চাঁদনি চকে নিতান্ত কম দামেই পাওয়া যায়।

Advertisement

ভোলবদল: সোয়েটার-মাফলার ছেড়ে সবুজ পাফার জ্যাকেট পরছেন কেজরিওয়াল।

মন্ত্রীর আরামের স্বার্থে

প্রজাতন্ত্র দিবসের মহড়া আর অনুষ্ঠানের চাপে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লির সরকারি অফিস-পাড়ায় ত্রাহি মধুসূদন রব। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুধু কেটে যায় রাস্তায়, ব্যারিকেডে, ঘুরপথে আর ভিভিআইপি-দের যাতায়াতের মাঝে ফেঁসে গিয়ে। মন্ত্রীরা বেরিয়ে যান, আটকে থাকেন সাধারণ কর্মচারীরা। এই পরিস্থিতিতে অভিনব পদক্ষেপ করলেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। সম্প্রতি ১২ সফদরজং রোডের বাংলোতেই তিনি দু’টি মন্ত্রকের আলাদা আলাদা শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক করলেন। সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট-এর বেমক্কা যানজট কাটিয়ে প্রায় জনা ত্রিশেক আমলাকে উপস্থিত হতে হল তাঁর বাসভবনের সরকারি বৈঠকে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পক্ষে আরামপ্রদ হলেও আমলাদের তো কালঘাম ছুটল, আড়ালে এমনটাই বলছেন তাঁরা। তবে মন্ত্রী-নির্দেশের বিরুদ্ধে আর কে কথা বলে! বিশেষত চৌহানের বাড়ি থেকে কাজ করার অভ্যাস পুরনো। এর আগে পুসা কমপ্লেক্সের বাড়িতেও প্রায়শই কর্তাদের ডেকে পাঠাতেন, সরকারি বৈঠকের জন্য।

Advertisement

নতুন বন্ধু

এক দিকের প্রতিবেশী অমিত শাহ। দিল্লি এলে, অন্য দিকটায় থাকেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। লাটিয়েন্স দিল্লির খাসমহলে কামরাজ লেনে বাংলো পেয়েছেন তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জায়গা বিস্তর, তাই একাকিত্ব কাটাতে ৩৭ দিনের জার্মান শেপার্ড পোষ্য নিয়েছেন কল্যাণ। পোষা কুকুরের সান্নিধ্যেই বড় হয়েছেন তিনি। ছোটবেলার সেই জার্মান শেপার্ডটির নাম ছিল বাঘা। কল্যাণের নাতি দাদুকে জানিয়েছে, নতুন অতিথির নাম সে-ই ঠিক করবে।

নেতাজির টানে

অনুসারী: টুপি মাথায় সৌরভ ভরদ্বাজ।

দিল্লির বাঙালিপাড়া চিত্তরঞ্জন পার্কে নেতাজি সুভাষ সংগঠন ও বিপিনচন্দ্র মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপন করল। দিল্লি এখন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে সরগরম। প্রচারের ব্যস্ততা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন আম আদমি পার্টির মন্ত্রী, গ্রেটার কৈলাসের বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ। বক্তৃতার আগে সংগঠনের সহ-সভাপতি উৎপল ঘোষের থেকে নেতাজি-টুপি চেয়ে মাথায় পরলেন। সৌরভ নেতাজিকে ছেড়ে সে দিন রাজনীতির কথা বলেননি। সারা দিন নেতাজি-টুপি পরেই ঘুরলেন। বিজেপি সাংসদ বাঁসুরী স্বরাজ যেতে পারেননি। তবে গ্রেটার কৈলাসে সৌরভের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী শিখা রাই উপস্থিত ছিলেন। বাঙালি ভোটের প্রয়োজন হোক বা নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা, নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপন দুই ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বীকে একই জায়গায় টেনে এনেছে।

বসন্তের মিলনমেলা

এ বারও হলুদ ফুলে ফুলে সেজে উঠবে হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগা। বসন্ত পঞ্চমীর দিন মাথায় ফুলের ঝুড়ি নিয়ে নানা ধর্মের মানুষ হাজির হবেন সুফি সাধকের শেষ বিশ্রামস্থলে। সাতশো বছর আগে বিষণ্ণ সাধক নিজামুদ্দিনের মুখে হাসি ফোটাতে তাঁর ভক্ত আমির খসরু হলুদ বস্ত্রে সেজে নেচে উঠেছিলেন। তার পর থেকেই নিজামুদ্দিনের দরগায় সরস্বতী পুজোর দিনে বসন্ত পঞ্চমী পালন হয় সর্ষে ফুলের হলুদ মেলায়। রাজনীতির স্বার্থে ধর্মীয় মেরুকরণ চললেও এ রীতিতে বাধা দেয়নি এখনও।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement