সি-প্লেনে সবরমতী নদীপথে প্রচারে পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি :এপি।
এত রঙিন নির্বাচন গুজরাত শেষ কবে দেখেছে, সংশয় রয়েছে তা নিয়ে। এত কঠিন দ্বৈরথ শেষ কবে দেখা গিয়েছে মহাত্মা গাঁধীর মাটিতে, তা নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে মতানৈক্য প্রবল।
গুজরাতের লড়াই এতটা গুরুত্বপূর্ণ আজ যে, কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রাহুল গাঁধী প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনটি করলেন গুজরাত থেকে। গুজরাতের লড়াই এত তাৎপর্যপূর্ণ যে, নির্বাচনী প্রচার শেষ হওয়ার দিনে বড়সড় চমক দিয়ে সি-প্লেন সফর করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জমজমাট দ্বৈরথের উপাদান আরও অনেক।
গুজরাতে আর্থ-সামাজিক ভাবে সবচেয়ে প্রভাবশালী সম্প্রদায় পাটিদারদের মধ্যে ক্ষোভ চরমে এ বার। হার্দিকের নেতৃত্বে সংরক্ষণের দাবিতে তীব্র আন্দোলনে পাটিদাররা।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে যুগপৎ কাজ করছে অভিমান এবং নিরাপত্তাহীনতার বোধ। বিজেপি মুসলিমদের কল্যাণ করতে পারে বলে মনে করেন না সে সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ। আর যে দল সংখ্যালঘু কল্যাণের কথা বলত, সেই কংগ্রেস নির্বাচনী প্রচারে এ বার ‘মুসলিম’ শব্দটাই উচ্চারণ করছে না।
আরও পড়ুন: শেষ লগ্নেও সেই পাক-তাস মোদীর
ঠাকোর সম্প্রদায়ের নেতা অল্পেশ এ বার কংগ্রেসের টিকিটে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ। নিজের সম্প্রদায়কে কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দলিত হৃদয়ের ‘সম্রাট’ জিগ্নেশ মেবাণীও নির্বাচনী লড়াইয়ে সরাসরি। নিজের সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর যে বার্তা, সেও শাসক বিজেপি-র বিরুদ্ধেই।
২২ বছর ক্ষমতায় বিজেপি। স্বাভাবিক কারণেই ক্ষমতাসীনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের মাত্রা আগের তুলনায় অনেক বেশি।
বিজেপি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভকে কাজে লাগাতে তৎপর কংগ্রেস। কিন্তু সাংগঠনিক শক্তিতে এখনও পিছিয়ে বিজেপি-র চেয়ে তারা।
বিজেপি-ও বুঝছে, প্রতিকূলতা বিভিন্ন ধরনের এ বার। তাই শুধু ‘বিকাশ’-এর স্লোগানে ভরসা নেই। গুজরাতি অস্মিতাকেও প্ররোচিত করার সব রকম প্রচেষ্টা চলছে। এক গুজরাতি আজ দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তা গুজরাতের পক্ষে অত্যন্ত লাভজনক— এই বার্তা চারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
দীর্ঘ দিন পরে এত রকমের রঙ নিয়ে নির্বাচনের মুখোমুখি গুজরাত। এমন এক টানটান নির্বাচনী লড়াই বহু বছর পরে দেখছে গুজরাত। আর গুজরাতের নির্বাচনের দিকে গোটা দেশের এত উৎসুক দৃষ্টিও বহু বছর পরে।
এই টানটান লড়াইকে সাক্ষী রেখেই নির্বাচনী প্রচারযুদ্ধও শেষ হয়ে গেল। দ্বিতীয় তথা চূড়ান্ত দফার ভোটগ্রহণের কাউন্টডাউন শুরু। তবে আসল কাউন্টডাউন চলছে ১৮ ডিসেম্বরের দিকে তাকিয়ে। আবার বলতে হচ্ছে, গোটা দেশ আজ তাকিয়ে রয়েছে ওই তারিখটার দিকে।