সবাইকে শুভ বিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা। চার দিন এখানে কাটিয়ে মা আবার ফিরে গিয়েছেন। আবার প্রতীক্ষা গোটা বছরের। তাই স্বাভাবিক ভাবেই মনটা একটু ভারাক্রান্ত হয়ে আছে সবারই।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা দিয়েই হয়েছিল দেবীপক্ষের সূচনা। যদিও সেই দুর্যোগের ঘনঘটা কাটিয়ে উঠে শেষ পর্যন্ত ঝলমলেই ছিল শারদীয়ার আকাশ। বাংলা সংস্কৃতিতে আমরা যাওয়ার কথা বলি না। বলি, আবার এসো মা। বিসর্জনের বাজনায় আবাহনের সুরকে মিশিয়ে নিই আমরা। আগামীর অপেক্ষায় থাকি। এই শেষের ঘোষণার মধ্যে নতুন শুরুর যে ইঙ্গিত, এর নামই তো জীবন। নিরন্তর এক প্রবাহ। নিরন্তর প্রবহমান এই জীবন। ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে চলা।
কোথাও যদি মনে হয় ওইখানে পথের শেষ, এগিয়ে গেলে দেখা যাবে, ওটা আসলে পথের নতুন কোনও বাঁক, যেখান থেকে শুরু হচ্ছে নতুন কোনও যাত্রা। এ ভাবেই এগিয়ে চলি আমরা সবাই। এ ভাবেই এগিয়ে চলতে চাই। সে জন্য এত দুঃখ-দুর্দশা-বিপদ-আঘাত অতিক্রম করেও আমরা আনন্দের সন্ধানী হই। আমরা তিমিরবিনাশী হই। আমরা আলোর দিশারী।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
এ সময়টা আমাদের আরও একজোট হয়ে থাকার সময়। একে অন্যের দিকে আরও একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সময়। একই সঙ্গে অসুর বিনাশের জন্য প্রয়োজনীয় সাহস সঞ্চয়েরও সময়। কখনও যেন অসুরের মুখোমুখি হওয়ার ভয় আমাদের গ্রাস না করে। আমরা যেন ভুলে না যাই, বছরভর নানা সম্প্রদায়ের নানা উৎসব যাতে নির্বিঘ্নে ও আনন্দে কাটে তার দায়িত্ব সরকার ও প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদেরও। আমরা সবাই যেন বৃহত্তর আঙ্গিকে আমাদের মস্ত বড় ভূমিকার কথা ভুলে না যাই। তিমির বিনাশের সেই পথও আমাদের আজকের দিনের ঐতিহ্যে রয়েছে। আজ আলিঙ্গনের দিন না? বিভেদবিলাসীদের পরাভূত করার জন্য এর চেয়ে বড় অস্ত্র আছে কি? আমরা তো বিভেদবিনাশী হতে চাই। সেই বিনাশেই নতুনের আমন্ত্রণ। নতুনের জয়গান। তাই শেষ হয়েও এ উৎসবের আবহের শেষ নেই। তা অনন্ত। তা অনাদি।
আরও পড়ুন: কার্নিভালে যোগ দেবে না মুদিয়ালী, দশমীতে বিসর্জনের ঐতিহ্য ভাঙতে নারাজ
আনন্দবাজার ডিজিটালের সমস্ত পাঠক ও বিজ্ঞাপনদাতার প্রতি আরও এক বার শারদীয়ার আন্তরিক শুভেচ্ছা। বিশ্বজোড়া এই একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য হিসাবে আমরা সকলেই যেন ভাল থাকি।