সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ব্রাইটনের যে স্কুলে পড়েছিলেন, সেখানে নীল ফলক বসাল সেখানকার নগর পরিষদ। সেটি এখন ব্রাইটনের দু ভ্যাঁ হোটেল। নীল ফলকের উদ্যোগ শিক্ষাবিদ ও বাউল বিষয়ক লেখক জিন ওপেনশ’-এর। ২৮ অক্টোবর মেয়র অ্যালান রবিনস ফলকটি উদ্বোধন করলেন। ফলকে লেখা— বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ভারতীয়, বাংলা থেকে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) ১৮৭৮-এ ব্রাইটন প্রোপ্রাইটরি স্কুলে পড়েছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ দেশের বাইরে প্রথম বসবাস করেছেন ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ শহরের সাগরতীরে। জীবনস্মৃতি-তে লিখেছেন, “আমার মেজোবউঠাকরুন তখন ছেলেদের লইয়া ব্রাইটনে বাস করিতেছিলেন— তাঁহার আশ্রয়ে গিয়া বিদেশের প্রথম ধাক্কাটা আর গায়ে লাগিল না।... ব্রাইটনে একটি পাবলিক স্কুলে আমি ভরতি হইলাম। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রথমেই আমার মুখের দিকে তাকাইয়া বলিয়া উঠিলেন, বাহবা, তোমার মাথাটা তো চমৎকার।... ছাত্রেরা আমার সঙ্গে কিছুমাত্র রূঢ় ব্যবহার করে নাই। অনেক সময়ে তাহারা আমার পকেটের মধ্যে কমলালেবু, আপেল প্রভৃতি ফল গুঁজিয়া দিয়া পলাইয়া গিয়াছে। আমি বিদেশী বলিয়াই আমার প্রতি তাহাদের এইরূপ আচরণ ইহাই আমার বিশ্বাস।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শান্তিনিকেতন থেকে প্রেরিত সুদীপ্ত ঠাকুরের বার্তা পড়েন ওপেনশ’। হোটেলের গম্বুজঘরে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে টেগোর সেন্টার। রবীন্দ্রনাথের সময়ে ক্লাসঘর ছিল সেটি।
গৌরব: ব্রাইটনের স্কুলে ফলক (ছবি: স্যাম কার্টরাইট), তখন রবীন্দ্রনাথ (ডান দিকে)।
নতুন যোদ্ধা বিনিশা
গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে রাষ্ট্রনেতারা ছিলেন বটে, কিন্তু প্রচারের আলো কাড়লেন তরুণ পরিবেশকর্মীরা। গ্রেটা থুনবার্গ তো রাষ্ট্রনেতাদের ভাষণকে ‘প্রলাপ’ বলেছেন। শিরোনামে এক ভারতীয় পঞ্চদশী। সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিল সৌরশক্তি-চালিত ইস্তিরির উদ্ভাবক বিনিশা উমাশঙ্কর। সে প্রিন্স উইলিয়ামের আর্থশট পুরস্কারের ফাইনালিস্ট। যুবরাজের পাশে দাঁড়িয়েই সে বলেছে, “রাষ্ট্রনেতাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে আমাদের প্রজন্মের অনেকেই ক্ষুব্ধ। রাগ করার যথেষ্ট কারণ আছে বটে, কিন্তু আমার সেই সময় নেই। আমি কাজ করতে চাই। আমি শুধুমাত্র ভারতেরই মেয়ে নই, আমি এই পৃথিবীর মেয়ে। সবার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখেও আমি অনুরোধ করতে চাই যে, দয়া করে জীবাশ্ম জ্বালানি, ধোঁয়া, দূষণে গড়া অর্থনীতিকে সমর্থন করবেন না।” সকলে উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছেন তাকে।
জেমাইমার আপত্তি
নেটফ্লিক্সের দ্য ক্রাউন সিরিজ়ের লেখক ও পরামর্শদাতার ভূমিকা থেকে সরলেন জেমাইমা খান। তাঁর কথায়, কাহিনিতে ডায়ানার অংশে আশানুরূপ শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি দেখা যাচ্ছে না। ২০১৯-এ সিরিজ়ের প্রধান লেখক পিটার মর্গ্যান জেমাইমাকে পঞ্চম পর্বের চিত্রনাট্যের সহলেখক হতে বলেন। এই পর্বে ডায়ানার প্যানারোমা সাক্ষাৎকার, পাক চিকিৎসক হাসনাত খান ও ডোডি ফায়েদের সঙ্গে সম্পর্ক, গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু দেখানো হবে। জেমাইমা ছিলেন ডায়ানার ঘনিষ্ঠ বন্ধু— তাঁর ডাকে বেশ কয়েক বার পাকিস্তান গিয়েছেন যুবরানি। তখন জেমাইমা ইমরান খানের স্ত্রী, পাকিস্তানেই থাকতেন। হাসনাত নাকি ইমরানের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। চিত্রনাট্য যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে অখুশি জেমাইমা। তাঁর সংযোজন ও তথ্যাদি সিরিজ় থেকে সরিয়ে নিতে চেয়েছেন। তবে, গল্পের অন্য দিকও আছে। পিটার মর্গ্যানের সঙ্গে অল্প কিছু দিন প্রেম করছিলেন জেমাইমা— সেই সম্পর্ক ভেঙেছে গত ফেব্রুয়ারিতে। মর্গ্যান ফিরেছেন প্রাক্তন সঙ্গিনী জিলিয়ান অ্যান্ডারসনের (দ্য ক্রাউন-এর মার্গারেট থ্যাচার) কাছে। এই অতি জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ়ের পঞ্চম পর্বটি আসছে আগামী নভেম্বরে।
বন্ধুত্ব: পাকিস্তানে জেমাইমা ও ডায়ানা।
জেমস বন্ডের মৃত্যু
নো টাইম টু ডাই-এ শেষ বার জেমস বন্ড রূপে দেখা গেল ড্যানিয়েল ক্রেগকে। ক্রেগ জানিয়েছেন, চরিত্রে তাঁর মেয়াদ শেষ হলেই বন্ডও মারা যাবেন, গোড়া থেকেই এই পরিকল্পনা ছিল। ২০০৬-এ প্রথম ছবি ক্যাসিনো রয়্যাল-এই তিনি এই অভিপ্রায়টি প্রযোজককে জানিয়েও দিয়েছিলেন। বন্ডের এ-যাবৎ ২৫টি ছবিতে ক্রেগই প্রথম বন্ড, যিনি মারা গেলেন। দ্য জেমস বন্ড আর্কাইভস বইয়ের ‘নো টাইম টু ডাই’ সংস্করণে ক্রেগের এই সাক্ষাৎকারটি ছাপা হয়েছে।