Election Results 2019

কিসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে? ন্যায়ের না অন্যায়ের?

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হতেই আমরা দেখলাম, বাংলার শাসকরা বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গেই বাস্তবতার উলটপুরাণ।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০০:১৩
Share:

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম।— ছবি পিটিআই।

ইতিহাসের পুনরাভিনয় দেখছি যেন আমরা। একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে— কেউ কেউ হয়তো বলবেন এমনই। কিন্তু বৃত্তটা ন্যায়ের নাকি অন্যায়ের, সে প্রশ্নটা সম্পর্কেও আমাদের সচেতন থাকা দরকার।

Advertisement

২০১১ সালের পর থেকে বাংলার রাজনীতিতে এক নতুন সংস্কৃতির আমদানি দেখেছি আমরা। নির্বাচনে জয় বা পরাজয় শাসকের জন্য খুব একটা বড় ব্যাপার নয়, নির্বাচন মেটার কিছু দিনের মধ্যেই সব আসন বা সব পঞ্চায়েত বা সব পুরসভা শাসকের হয়ে যাবে— এই রকম একটা বাস্তবতায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলাম আমরা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হতেই আমরা দেখলাম, বাংলার শাসকরা বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গেই বাস্তবতার উলটপুরাণ। ফেলে আসা বেশ কয়েকটা বছরে কংগ্রেস, বাম বা বিজেপির জনপ্রতিনিধিদলে ভাঙন ধরতে দেখছিলাম, নিজেদের দল ছেড়ে জনপ্রতিনিধিরা হু হু করে তৃণমূলে শামিল হচ্ছিলেন বা হতে বাধ্য হচ্ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষিত হতেই হু হু করে তৃণমূল ছাড়া শুরু হল, সব স্রোত যেন মিশতে শুরু করল বিজেপিতে। এই উলটপৌরাণিক মুদ্রার দুই পিঠের মধ্যে মিল একটাই— দুটো পর্বের সূচনাই মুকুল রায়ের হাত ধরে।

এই রাজনীতি কিন্তু আদর্শ গণতান্ত্রিক রাজনীতি নয়। এ হল রাজনৈতিক মৌলবাদ। এই রাজনীতি বিরোধী কণ্ঠস্বরকে বিন্দুমাত্র স্বীকৃতি দিতে চায় না, যে স্বীকৃতি গণতন্ত্রে অপরিহার্য। বিরোধী স্বর বা বিরোধী মতের অস্তিত্ব ক্রমশ বিলীন হচ্ছিল বলেই কিন্তু শাসকের বিরুদ্ধে আক্রোশ ক্রমশ বাড়ছিল বাংলায়। রাজনীতির চৌহদ্দিটায় ক্রমশ শ্বাসরোধী অবস্থা তৈরি হচ্ছিল। সেই অবস্থাকেই সজোরে ধাক্কা দিল ২০১৯-এর জনমত। জনমতটা যাঁদের পক্ষে গেল, তাঁরাই যদি আবার সেই রাজনীতিই ফিরিয়ে আনেন বা সেই শ্বাসরোধী বাতাবরণটাই নিজেদের অনুকূলে বহাল রাখতে চান, তা হলে পরিস্থিতিটা খুব সৌভাগ্যজনক হয় না।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিজেপির দাবি, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এই যোগদান স্বতঃস্ফূর্ত প্রবাহের মত। কিন্তু তৃণমূলের অভিযোগ, বোমা-বন্দুকের মুখে দলবদল করতে বাধ্য করা হচ্ছে তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। কার দাবি ঠিক, কারটা ভুল, তা চাপা থাকবে না বেশি দিন। সত্য ক্রমশই স্পষ্ট হতে থাকবে এবং দ্রুতই তা হতে থাকবে। কিন্তু সে সব পরের কথা। সর্বাগ্রে রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা জরুরি। কোন তরফ থেকেই সীমা এমন কোন মাত্রায় লঙ্ঘিত হওয়া উচিত নয়, যাতে জনাদেশ প্রতারিত বোধ করে।

আরও পড়ুন: অনুব্রতর গড়ে থাবা! বিজেপিতে যোগ দিলেন মণিরুল ইসলাম

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন