প্রধান চরিত্র সবচেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থানে।
লালকৃষ্ণ আডবাণী বিরক্ত। লালকৃষ্ণ আডবাণী ধুরন্ধর রাজনীতিক। অতএব, তাঁর বিরক্তিও যদি রাজনৈতিক গন্ধ নিয়ে প্রকাশ পায়, তবে খুব দোষ দেওয়া যায় না। অতএব, সংসদের কাজকর্ম পন্ড হতে বসার উপক্রমকে উপলক্ষ করে বৃহস্পতিবার আডবাণী বোমাটি ছুড়েই দিলেন। আম লোকে বলল, প্রবীণ নেতা বিরক্ত। খাস লোকে বুঝল (এমনকী রাহুল গাঁধীও!), আসলে সদর দফতরে কামান দেগেছেন ‘বিরক্ত’ আডবাণী।
ধুরন্ধর রাজনীতিক যে হেতু, অতএব বোমাটি আপাতদর্শনে নিরীহ। এবং স্মৃতিমেদুরও যেন। বললেন, আজ বাজপেয়ীজি সংসদে থাকলে অত্যন্ত ব্যথিত হতেন, এমনই হাল হয়েছে সংসদের। ব্যস। এই এক অমোঘ বাক্য মুহূর্তে যেন তুলে নিল পর্দা, আড়ালে থাকা অপ্রস্তুত কুশীলবেরা অকস্মাৎ যেন মানুষের বিস্ফারিত, অসহায় চোখের সামনে। প্রধান চরিত্র সবচেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থানে। দলেরই অন্য এক অবিসংবাদিত নেতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে, তাঁর ব্যথিত হওয়ার সম্ভাব্য পরিস্থিতির উল্লেখ করে আডবাণী যে তাঁরই দিকে আঙুল তুলছেন, এ কথা যদি না বোঝেন, তবে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী বৃথাই এই দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিযাত্রা করেছেন!
স্মৃতির আড়ালে মোক্ষম বাণটি ছুড়েছেন আডবাণী। কাকতালীয় নয় এটাও, যাঁর দৃষ্টান্ত তুলে এই বাণ, সেই অটলবিহারী বাজপেয়ী অনেকগুলো বছর আগে নরেন্দ্র মোদী নামে এক মুখ্যমন্ত্রীকে রাজধর্ম পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। আডবাণী সে দিন ছিলেন ভাবনার গোলার্ধের অন্য প্রান্তে। এক বিন্দুতে এসে মিশলেন বিজেপি-র দুই প্রবীণ নেতা।
নরেন্দ্র মোদী কি রাজধর্মের শিক্ষা নিচ্ছেন? নেবেন?