সম্পাদক সমীপেষু

ক’দিন আগে দলছুট মাকনাহাতি বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের ফারাবাড়ি, ডাবগ্রাম, একটিয়া জঙ্গল হয়ে চলে আসে শহরের ব্যস্ত সেবক রোডে। সিনেমা, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, শত শত মোটর সাইকেলের বেষ্টনী ভেদ করে তাণ্ডব চালায়। উৎসাহী জনতা নাচতে নাচতে হাতির পিছনে ছোটে। ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০০:৩৬
Share:

ওরা যাবে কোথায়

Advertisement

ক’দিন আগে দলছুট মাকনাহাতি বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের ফারাবাড়ি, ডাবগ্রাম, একটিয়া জঙ্গল হয়ে চলে আসে শহরের ব্যস্ত সেবক রোডে। সিনেমা, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, শত শত মোটর সাইকেলের বেষ্টনী ভেদ করে তাণ্ডব চালায়। উৎসাহী জনতা নাচতে নাচতে হাতির পিছনে ছোটে। ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। মহাকালবাবা বেরোবার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। বেচারা যাবে কোথায়? ঘরবাড়ি দোকান মোটর সাইকেল তছনছ করে। অতঃপর হস্তী তাড়ুয়ারা বন দফতর থেকে এসে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে ক্রেনের সাহায্যে ট্রাকে তুলে নিয়ে যান। আহত, ক্ষতবিক্ষত হাতিটি এই মুহূর্তে কেমন আছে জানি না। প্রার্থনা করি, সে যেন দ্রুত আরোগ্যলাভ করে।

Advertisement

আবার ক’দিন বাদে শিলিগুড়ির অদূরে আমবাড়ির কাছে বুনো হাতি চলে আসে লোকালয়ে। শুধু হাতি নয়, গন্ডার, বাইসন, লেপার্ড প্রায়শ পথভ্রষ্ট হয়ে জনবসতির দিকে চলে আসছে। তাড়া খেয়ে বাইসন হার্টফেল করে মরছে। গন্ডার আপালচাঁদ ফরেস্ট থেকে বেরিয়ে তিস্তার চর দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বাসা খুঁজে পায় না। লেপার্ডকে পিটিয়ে মারা হচ্ছে। লেপার্ডও আক্রমণ করছে। কত হাতি বাইসন রেল ইঞ্জিনের ধাক্কায় মরেছে, ইয়ত্তা নেই। রেলপথে এ পর্যন্ত ষাট-সত্তরটির বেশি হাতির মৃত্যু হয়েছে। চোরাশিকারি তো আছেই। বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবর সংবাদপত্রে ছাপা হচ্ছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে। হস্তীবিশারদ পরিবেশবিদ বন্যপ্রেমীদের হাহুতাশ। রেল কর্তৃপক্ষের উপর দায় চাপানো। মৃত হাতির জন্য দুফোঁটা চোখের জল। এক মিনিট নীরবতা। এবং বিস্মৃতি।

হাতিরা যাবেটা কোথায়? হাতির অত্যাচারের জন্য দায়ী তো মানুষ। ওদের বাসস্থান চলাফেরার পথে মনুষ্যবসতি গড়ে উঠছে। উত্তরবঙ্গে অসংখ্য হাতি চলাচলের পথ ছিল যেখানে দল বেঁধে হাতিরা পরিক্রমা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করত। এলিফ্যান্ট করিডরে লজ রিসর্ট হোমস্টে চালাঘর গজিয়ে উঠেছে। সেখানে অসভ্যতার নানা নমুনা, যেমন উদ্দাম বাজনা। কোলাহল। হ্যালোজেনের চড়া আলোয় বন্যপ্রাণীরা দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি করে।

হাসিমারা বিন্নাগুড়ি খাপরাইল শুকনা, এ সব এলাকা একদা ছিল ঘোর জঙ্গল। এখন সেনাছাউনি গড়ে উঠেছে। দেদার গাছপালা ধ্বংস হয়েছে। জলদাপাড়ায় দেখেছি বায়ুসেনার বিমানের গগনভেদী শব্দে হাতিরা চমকে উঠে ছোটাছুটি করে। হাতিদের খাদ্যবস্তু জঙ্গল থেকে উধাও। ঘাসপাতা গবাদি পশুরাই খেয়ে শেষ করছে। হাতিদের ভীষণ প্রিয় গাছ চালতা বনকাঁঠাল কলাগাছ কচি বাঁশ। জঙ্গলে এ সবের বড়ই অভাব। ক্ষুধার তাড়নায় হাতিরা পাকা ধানখেতে ফুলকপি বাঁধাকপি বেগুনের খেতে ঢুকে পড়ছে। যতই পটকা ফাটানো হোক, মশাল নিয়ে ছোটাছুটি হোক, হাতি তাড়ানো বিরাট সমস্যা। মাঝে মাঝে দেয়াল বেড়া ভেঙে মিড ডে মিলের চাল ডাল খেতে থাকে।

শ্রমিক বস্তিতে ঢুকে হাঁড়িয়া সাবাড় করে। উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে হাতি মানুষের সংঘাত আকছার ঘটছে। জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে পথ অবরোধ বনকর্মীদের হেনস্থা করছে। শুধুমাত্র ‘ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, দেখছি দেখব’ করে সময় পার করা কোনও সমাধানের পথ নয়।

গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য। শিলিগুড়ি

স্মরণীয়

অশোক মিত্রের নিবন্ধটি (‘নীতি ও আদর্শের ভিত্তি...’, ২৪-২) পড়ে পুরনো ইতিহাস মনে পড়ল। গত শতাব্দীর তিরিশের দশকে জার্মান কমিউনিস্ট পার্টি সোশ্যাল ডেমোক্রাটদের সঙ্গে জোট বাঁধতে রাজি হয়নি বলে নাতসি নেতার ক্ষমতা দখলের পথ মসৃণ হয়েছিল।

অশ্রুকুমার সিকদার। শিলিগুড়ি

Prinsep-ই ঠিক

সন্তোষ চক্রবর্তীর (‘এমন একটা ভুল কেন হবে’, ২৫-২) পত্র প্রসঙ্গে জানাই, প্রাচ্যতত্ত্ববিদ জেমস প্রিন্সেপের নামের ইংরেজি বানান Prinsep. প্রিন্সেপ ঘাটে ও অন্যত্র এই বানানটি ঠিকই লেখা হয়েছে। যেখানে Princep লেখা হয়েছে সেখানেই সংশোধন করা উচিত।

এ ব্যাপারে সন্দেহ নিরসনের জন্য Oxford Dictionary of National Biography এবং Journal of Asiatic Society of Bengal-এর বিশেষ বিশেষ সংখ্যা দেখা
যেতে পারে।

রজত দাশগুপ্ত। কলকাতা-৯২

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন