সম্পাদক সমীপেষু

পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের পেশাদারিত্বের কথা পড়ে উৎসাহিত হলাম। (‘কর্পোরেট রেওয়াজে জৌলুস ফিরে পাচ্ছে রাজ্য পর্যটন’, ১৪-৭) এই প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম পর্যটন সম্বন্ধে দু’একটি কথা বলতে চাই। পর্যটকদের কাছে শান্তিনিকেতন বা বিষ্ণুপুরের মতো ঝাড়গ্রামকে সে ভাবে উপস্থাপিত করা হয় না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৬ ২২:৩৬
Share:

ঝাড়গ্রামের সম্ভাবনা

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের পেশাদারিত্বের কথা পড়ে উৎসাহিত হলাম। (‘কর্পোরেট রেওয়াজে জৌলুস ফিরে পাচ্ছে রাজ্য পর্যটন’, ১৪-৭) এই প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম পর্যটন সম্বন্ধে দু’একটি কথা বলতে চাই। পর্যটকদের কাছে শান্তিনিকেতন বা বিষ্ণুপুরের মতো ঝাড়গ্রামকে সে ভাবে উপস্থাপিত করা হয় না। অথচ পাহাড় ঝর্না জঙ্গল নদী হ্রদ প্রাচীন মন্দির ও ঐতিহাসিক রাজবাড়ি নিয়ে পর্যটনে ঝাড়গ্রামের গুরুত্ব কম নয়।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ঝাড়গ্রাম কলকাতা থেকে মাত্র দেড়শো কিলোমিটার দূরে। দু’রাত তিন দিন বা তিন রাত চার দিনের প্যাকেজ টুর প্রকৃতিপ্রেমী ও লোকসংস্কৃতিসচেতন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হবে, সন্দেহ নেই।

Advertisement

প্রথম দিন নিকটবর্তী সাবিত্রী মন্দির, মল্লদেব রাজবাড়ি, কনক দুর্গামন্দির, ডুলুং, চিল্কিগড় রাজবাড়ি।

দ্বিতীয় দিন দহিজুড়ি বুড়িশোল জঙ্গল বেলপাহাড়ি হয়ে সুন্দরী কাঁকড়াঝোর ময়ূর ঝর্না। তার পর মনোরম পাহাড়ি রাস্তায় চাকাডোবা হয়ে আদিম মানুষের বাসস্থান লালজঙ্গল পাহাড় গুহা, গড়রাসিনি পাহাড়, পাহাড় জঙ্গল পরিবেষ্টিত পরিযায়ী হাঁসের আড্ডা খাঁদারানি হ্রদ, ঘাঘরা ও তারাফেনি ড্যাম দেখে মালাবতী জঙ্গল হয়ে ফেরা।

তৃতীয় দিন কলাবনী জঙ্গল লোধাশুলি হয়ে সোনালি বালুচরের সুবর্ণরেখা পেরিয়ে গোপীনাথ জিউ দর্শন। তার পর সুবর্ণরেখার পাড় বরাবর গিয়ে রামেশ্বর। সহস্রাব্দ-প্রাচীন মাকড়াপাথর নির্মিত এই শিবমন্দির অনেক পৌরাণিক কাহিনির সাক্ষী। রামেশ্বর মন্দির থেকে ছয় কিমি ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে সীতানালা পেরিয়ে শান্তসৌম্য তপোবন। ফেরার পথে সময় থাকলে হাতিবাড়ি জঙ্গল ও ঝিল্লি পাখিরালয় দেখে নেওয়া যেতে পারে।

চতুর্থ দিন কলাবনী জঙ্গলের ভিতর দিয়ে নির্জন আট কিমি পথ পেরিয়ে হাজার হাজার ভেষজ উদ্ভিদের সুপরিকল্পিত সমাবেশ আমলাচটি ভেষজ উদ্যান। তার পর নবরূপে সজ্জিত ডিয়ার পার্ক।

প্রতি দিন সন্ধ্যায় বাঁদরভোলা প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রে স্থানীয় লোধা, মুণ্ডা ও সাঁওতাল শিল্পী পরিবেশিত চাং নাচ, পাতা নাচ, পাইক নাচ ও ঝুমুর গানের আয়োজন করা যেতে পারে। অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রের মতো ঝাড়গ্রাম পর্যটনের সচিত্র লিফলেট ছাপিয়ে বিলি করলে পর্যটকেরা ঝাড়গ্রাম সম্বন্ধে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

সুশীল বর্মন।
শিক্ষক, ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ

রক্তক্ষরণ

‘চলিবে না’ (সম্পাদকীয়, ৩-৮) সময়োচিত একটি সতর্কবার্তা। রক্তাক্ত ভ্রাতৃঘাতী হত্যাকাণ্ডের ফল দ্বিখণ্ডিত ভারতের স্বাধীনতা। ১৯৪৭-এর ১৫ অগস্ট আমরা ভাগ হয়ে যাই। আমাদের রক্তক্ষরণ আজও চলছে। লুই ফিশার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এই স্বাধীনতার অভিশাপ মিটতে দীর্ঘ কয়েক দশক পার হতে হবে।

মুরারি ঘোষ। শিবপুর, হাওড়া-২

মন্ত্রীর দাপট

খেলার মাঠে বেআইনি ভাবে মন্ত্রীর দলবল নিয়ে প্রবেশের ঘটনা নতুন নয়। রিও-তে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বিজয় গোয়েলের আগে ১৯৯০-এ বেজিং এশিয়ান গেমসের সময় তখনকার কেন্দ্রীয় ক্রীড়া উপমন্ত্রী (ডেপুটি মিনিস্টার) ভক্তচরণ দাস গেমস কর্তৃপক্ষের দেওয়া পরিচয়পত্র না-নিয়েই স্টেডিয়ামে ঢুকতে যান। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে আটকে দেন। উপমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা গেটে কর্তব্যরতদের মন্ত্রীর পরিচয় দিলেও অনুমতি মেলেনি। ভক্তচরণ তখন ‘আমি ভারতের একজন মন্ত্রী’ বলে খুব চেঁচামেচি করতে থাকেন। গেটের ঘটনা প্রেসবক্সে পৌঁছে গেলে আমরা কয়েক জন ভারতীয় সাংবাদিক ওখানে পৌঁছাই। তিনি আমাদের দেখে বলেন, দেখুন এঁরা কী করছেন। আমরা বলি, সব দেশে এটাই নিয়ম। আইওসি-র প্রেসিডেন্টের গলায়ও তাঁর সচিত্র পরিচয়পত্র ঝোলে। আমরা ওখানকার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানালে তাঁরা সে দিনের জন্য ওই স্টেডিয়ামে প্রবেশের এন্ট্রি পাস করিয়ে দেন ভক্তচরণ দাসকে।

কলকাতায় এক বার ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ চলাকালে এমন একটা ঘটনা ঘটে। রাষ্ট্রমন্ত্রী আনন্দমোহন বিশ্বাস ও উপমন্ত্রী সুনীতি চট্টরাজ পর পর দু’দিন দলবল নিয়ে মাঠে ঢোকেন। মন্ত্রী, তাই আটকাবার সাহস পাননি গেট কর্মীরা। ব্যাপারটা মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের গোচরে আনা হয়। পর দিনই ওদের প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস। কলকাতা-৪০

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন