সিঁথির রাস্তায় পাহাড় চড়া
সিঁথি ৩০এ বাসস্ট্যান্ড থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার জন্য রেল লাইনের ধার বরাবর যে রাস্তাটি আছে, সেটি ব্যবহার করছি আজ প্রায় ২৩ বছর হল। এই রাস্তায় পায়ে হেঁটে গেলে সময় লাগার কথা মিনিট সাতেক, আর রিকশা, অটো বা গাড়িতে গেলে আরও কম। কিন্তু সময় লাগে এর চেয়ে অনেকটাই বেশি, কারণ বরাবরই এই রাস্তার বেশির ভাগটাই ভাঙাচোরা আর অপূর্ব সব খানাখন্দে ভর্তি (সঙ্গের ছবি)। একটু অসতর্ক হলেই পা মচকে যাওয়া বা আছাড় খাওয়ার সুলভ গ্যারান্টি। যে ভাবে ব্যালেন্স করে এই রাস্তায় চলতে হয়, তাতে দার্জিলিং বা সিকিম না গিয়েও দিব্যি উপভোগ করা যায় বিপদসংকুল পাহাড়ি পথে চলার দুরন্ত উত্তেজনা। আর একটু বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার ওপর জায়গায় জায়গায় জল আর থকথকে কাদা জমে গিয়ে গোটা ব্যাপারটা আরও রোমহর্ষক করে তোলে!
অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সাধারণত চার-পাঁচ বছর অন্তর এক বার রাস্তাটায় পিচ ঢালাই হয়, তবে তার ছয় মাসের মধ্যেই সমস্ত পিচ উঠে গিয়ে রাস্তাটা ফের আগের চেহারায় ফিরে আসে। গত বছর চারেক রাস্তাটা সারানো হয়নি, অর্থাৎ আর এক বার পিচ দেওয়ার সময় এসে গেল বোধ হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, এ বারেও যেন দ্রুত উঠে যায় পিচের ঢালাই, আর আমরাও তাড়াতাড়ি ফিরে পাই দুর্গম গিরিপথের সেই চেনা উত্তেজনা!
ভাস্কর রায় কলকাতা-৭৭
মারার আগে
শালবনির র্যাঞ্চোকে সেলাম। সাপে কাটা রোগীকে যে ভাবে ঝুঁকি নিয়ে তিনি বাঁচালেন, তা অনেক ডাক্তারবাবুকেই ভবিষ্যতে পথ দেখাবে (‘‘প্রাণ বাঁচিয়ে চমক শালবনির ‘র্যাঞ্চো’র’’, ১৬-৬)। অব্যবহৃত কার্ডিয়াক মনিটর, নিজের ল্যারিংগোস্কোপ ও ই.টি.টিউবের মাধ্যমে তৈরি হল ম্যানুয়াল ভেন্টিলেশন। বোঝা যায় যে, সদিচ্ছা থাকলে অনেক কিছু হয়। এই রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকেই হয় নতুন আবিষ্কার, যা সমাজের কাজে আসে।
কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। চেষ্টা করেও ডাক্তার আলম যদি অকৃতকার্য হতেন, তখন কি তাঁকে সমালোচনা, তিরস্কারে ভরিয়ে দেওয়া হত না? হয়তো তাঁকে গণধোলাইয়ের কবলেও পড়তে হত। প্রশ্ন উঠত, কেন তিনি রোগীকে মেদিনীপুরে পাঠালেন না? অনেকেই বুঝতেন না যে, ২২ কিলোমিটারের গ্রাম্য পথ রোগীর পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ হত। ডাক্তারবাবুদের গায়ে হাত তোলার আগে আমরা যেন এক বার ডাক্তার আলমদের কথাও মনে রাখি। যে কোনও মৃত্যুই আমাদের আঘাত দেয়। তবু তার মধ্যেই প্রকৃত পরিস্থিতি কী ছিল, তা আমাদের পর্যালোচনা করতে হবে। না হলে কোনও ডাক্তারবাবুই আর ঝুঁকি নেবেন না। তাতে ক্ষতি হবে আমাদেরই। সব ডাক্তারবাবুই ব্যবসায়ী নন। অনেকেই তাঁদের কর্মের দ্বারা আমাদের কাছে ঈশ্বর। পুনর্জন্ম হয় তাঁদেরই হাতে।
কনক চৌধুরী কলকাতা-৩০
‘মোদী’ই কেন?
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে চলেছে ‘মোদী ফেস্ট’, যার পুরো কথা ‘মেকিং অব ডেভেলপ্ড ইন্ডিয়া’। উদ্দেশ্য, নরেন্দ্র মোদীর তিন বছরের সাফল্য এক ধরনের উৎসবের মাধ্যমে তুলে ধরা, যাতে এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার জনগণ পরবর্তী ভোটে বাংলায় বিজেপিকে আনে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, মোদী ফেস্ট এখন মোদীজিতে রূপান্তরিত হয়েছে। মোদী নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে এক ধরনের একনায়কোচিত মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। মোদীজি যদি ‘মেকিং’ শব্দটির জায়গায় ‘ক্রিয়েটিং’, ‘স্টার্টিং’ বা এই ধরনের অন্য শব্দ ব্যবহার করে নিজের নামের সঙ্গে মিল না রেখে নামকরণ করতেন, তা হলে কি তাঁর সম্মান কমত? এখানে নামকরণে এক রকমের আত্মগর্বই প্রকাশ পেয়েছে। এই ধরনের মানসিকতা বর্জন করা দরকার।
আবু হানিফ ফুরফুরা, হুগলি
মেট্রোয় দড়ি
মেট্রো রেলে দুর্ঘটনা এবং আত্মহত্যা বন্ধ করার জন্য প্রয়োজন স্বয়ংক্রিয় কাচের দেওয়াল-দরজা, যা ট্রেন প্ল্যাটফর্মে না থাকলে বন্ধ থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে (‘মেট্রোয় ঝাঁপ, মৃত্যু প্রৌঢ়ের’, ১৪-৬)। কিন্তু এর ব্যয়ভার যদি কলকাতা মেট্রো বহন করতে না পারে, তা হলে অবশ্যই কোনও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে বলা যায়, পুজোর সময় উপচে পড়া ভিড়কে কলকাতা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে মূলত ‘দড়ি প্রযুক্তি’র যথাযথ ব্যবহার করে। এর থেকে কলকাতা মেট্রো রেলের অনেক কিছু শেখার আছে। মেট্রো রেলের প্ল্যাটফর্মগুলিতে একটি লক্ষণরেখা আঁকা থাকে। ট্রেন, প্ল্যাটফর্মে আসার আগে ওই রেখা অতিক্রম করা নিষেধ। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যায় যে, ট্রেন আসার মুহূর্তে যাত্রীরা ওই রেখা অতিক্রম করে ঠেলাঠেলি শুরু করে দিয়েছেন। যাত্রী সুরক্ষা দেখার জন্য যে দুজন কর্মী দু’প্রান্তে থাকেন, শুধুমাত্র ঠিক প্রযুক্তির অভাবে তাঁরা কিছু করে উঠতে পারেন না। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুখে কোনও যাত্রী যদি ঠেলাঠেলির ধাক্কায় লাইনে পড়ে মারা যান, তা হলে মনে হবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ওই ‘দড়ি প্রযুক্তি’ কিন্তু মেট্রো রেলে দুর্ঘটনা এবং আত্মহত্যা— দুটোই নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
মেট্রো রেলের প্ল্যাটফর্মে দুই প্রান্তে যে দুজন সুরক্ষা কর্মী থাকেন, তাঁরা যদি তাঁদের কোমর সমান উচ্চতায় একটি দড়ি, লক্ষণ রেখা বরাবর টেনে ধরেন, তা হলে ট্রেন ঢোকার মুখে রেখা অতিক্রম করা সহজ হবে না। কলকাতা পুলিশ ঠিক যে ভাবে দড়ি মাটিতে ফেলে দিয়ে পথচারীদের যাওয়ার অনুমতি দেন, ঠিক সে ভাবেই সুরক্ষা কর্মীদ্বয় দড়ি মাটিতে ফেলে দিয়ে যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা করার সুযোগ দেবেন। মেট্রো রেল প্ল্যাটফর্মে ঢোকার পর কয়েক সেকেন্ড লাগে কামরার দরজাগুলি খুলতে। ওই সময়টিতেই দড়িটিকে মাটিতে ফেলে দিতে হবে। এতে বহু মেট্রোযাত্রীর প্রাণ বাঁচবে।
সুজিৎ দে কলকাতা-১১০
পাকা আমে বিষ
আম বাঙালির আম-ভাগ্য এ বার সুপ্রসন্ন। প্রকৃতির কৃপায় এ বৎসর ফলরাজ আমের ফলন খুবই ভাল। কিন্তু একটি দুঃসংবাদও রয়েছে! আমবাগান থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন আমের আড়তে দ্রুত আম পাকাতে দেদার ব্যবহৃত হচ্ছে নিষিদ্ধ ক্যালসিয়াম কার্বাইড! এই রাসায়নিক যৌগটি যেমন তড়িঘড়ি ফল পাকাতে সক্ষম; অপর দিকে ফলের স্বাভাবিক পুষ্টিগুণকে নষ্ট করে ডেকে আনে নানা মারাত্মক সব শারীরিক অসুস্থতা। এ কারণেই ২০০৭ সাল থেকে ফল পাকানোর ক্ষেত্রে এই রাসায়নিকের ব্যবহার সরকারি ভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও, জেলার বেশির ভাগ আমবাগানে আমের প্যাকিং চলাকালীনই ড্রাম ড্রাম কার্বাইড ব্যবহারের ঘটনা ঘটছে। যে কোনও পাকা আমের ঝুড়ি খুললেই আমের গায়ে সাদা পাউডার মাখার মতো ছোপ ছোপ দাগ! বিষিয়ে যাচ্ছে বাঙালির প্রিয় ফলটি। যাঁদের উপর নজরদারির দায়িত্ব রয়েছে, তাঁরা নির্বিকার। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর-সহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সাবির চাঁদ রেজিনগর, মুর্শিদাবাদ
ভ্রম সংশোধন
‘কবির ভূমিকায়’ লেখায় (আনন্দ প্লাস, ১৬-৬) সাদাত হাসান মান্টোর চরিত্রে ইরফান খান অভিনয় করেছেন প্রকাশিত হয়েছে। ওই চরিত্রে রয়েছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়