এগুলোকে বাস বলে?
প্রতি বছরই বেসরকারি বাসগুলোকে জেলা পরিবহণ দফতরের নির্ধারিত স্থানে নির্দিষ্ট দিনে হাজির করাতে হয়। ব্যস, ওইটুকুই; ফিটনেস! বাসের মধ্যে বসার আসনগুলিতে আমরা যাত্রীরা ঠিকমত বসতে পারি না, হাঁটতে ধাক্কা লাগে। বাসগুলিতে ওঠানামার দরজার কোনও নির্দিষ্ট মাপ নেই। বাসের ইঞ্জিনের ওপরেও বসার স্থান রয়েছে। ড্রাইভারের পাশেই গাদাগাদি করে তিন-চার জন বসে থাকে। ফার্স্ট এড বক্স থাকে না। প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য নির্দিষ্ট বসার আসন থাকে না। ফিটনেসের সময় বসার আসন সংখ্যা ঠিক থাকলেও ফিটনেসের পর পরই অনেক বাসের কয়েকটি আসন খুলে নেওয়া হয়। আসলে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার জন্য এ রকম করা হয়ে থাকে। বাসে ভিডিয়ো চালানো হয়, অথচ তার জন্য আলাদা ফিজ জমা দেওয়া হয় না। ‘বন্ধ করুন এয়ার হর্ন, তাতে সবাই খুশি হন’— লেখাটাই সার! বাস্তবে প্রতিটি বাসেই যথেচ্ছ ভাবে এয়ার হর্ন ব্যবহার করা চলছে। মোটামুটি ভাবে নতুন টায়ার ভাড়ায় নিয়ে লাগিয়ে ফিটনেস করানো হয়। বেশ কিছু ছোট-বড় গাড়ি এই অসৎ উপায় অবলম্বন করে।
বাসের কাঠামো অনুযায়ী বডি তৈরি হয় না; দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে যেমন খুশি মাপ বাড়িয়ে নিয়ে বডি তৈরি করা হয়। ফলে রাস্তায় চলতে গেলে অনেক বেশি জায়গা নিয়ে চলে। ‘বাসের ছাদে ওঠা আইনত দণ্ডনীয়’— উপদেশটি বাসের পিছনে লেখা থাকলেও প্রায়শই বাসের ছাদে যাত্রীদের দেখতে পাওয়া যায়। বলা বাহুল্য, ফিটনেসের সময় বাসের ছাদের ঘেরাগুলি দিব্যি থাকে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, ট্যুরিস্ট বাসের একেবারে পিছনের দিকে বড় কাচের ব্যবস্থা না রেখে পুরো বডিটাই টিনের চাদর দিয়ে তৈরি হচ্ছে। দুর্ঘটনার সময় যাত্রীদের চটজলদি উদ্ধার করা যাবে না। এত সব অবাঞ্ছিত, অবৈধ কার্যকলাপ সত্ত্বেও শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে বাসগুলোকে ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া চলছে। শহর ও শহরতলি এলাকাগুলোতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও সুরক্ষার বিষয়ে জেলা পরিবহণ দফতরগুলি আর কবে সচেতন হবে?
প্রতীপ বেরা
মহিষাদল, পূর্ব মেদিনীপুর
প্রশ্ন থেকে গেল
অমর্ত্য সেনের সাক্ষাৎকারে (‘আমরা তো...’, ১৮-৭) সাধারণ মানুষের অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়। আবার কোথাও কোথাও নতুন জিজ্ঞাসা জন্মলাভ করে। অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় এবং কুমার রাণা প্রশ্ন তুলেছেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্বার্থে অন্য নানা প্রশ্নে, যেমন দুর্নীতির প্রশ্নে আপসের প্রয়োজন হতে পারে কি না। এই ধরনের মন্তব্য আমরা একবাক্যে মেনে নিতে পারি না।
২০১৪ সালের লোকসভার নির্বাচন সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করেই হয়েছিল। ফলাফল তো সকলেরই জানা আছে। মানুষ তা হলে কিসের ভিত্তিতে ভোট দিয়েছিল? দুর্নীতিতে ডুবে থাকা কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে, না সাম্প্রদায়িক বিজেপির পক্ষে?
এ বারে আসি লালুপ্রসাদ প্রসঙ্গে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করেছিলেন। দুর্নীতির দায়ে যখন তাঁকে সরে যেতে হল, তখন স্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রীর তখতে বসিয়ে গেলেন। বাকি ইতিহাস সর্বজনবিদিত।
মানুষ কাকে সমর্থন করবে? অমর্ত্যবাবুর কাছে এটাই প্রশ্ন।
প্রশান্ত সান্যাল
কলকাতা-২৯
দায় কার
মাননীয় অমর্ত্য সেনের কথায় জানতে পারলাম যে, আমরা গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের তলায় পড়েছি। কিন্তু তাঁর কাছে জানা গেল না কী করে পড়েছি, কেন পড়েছি? জানা গেল না, কেন এত দীর্ঘ কাল ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেস শাসন সত্ত্বেও কে আমাদের দেশটাকে ওই পাতালে ঠেলে ফেলে দিয়েছে? জানতে পারলাম না, পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পরেও কেন কালিয়াচক, ধুলাগড়, মালদা, মল্লারপুর, বাদুড়িয়া-বসিরহাটে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা হল? সব কিছুর জন্যে সাম্প্রতিক বিজেপিকে দায়ী করা ঠিক কি? মনে রাখতে হবে, গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং বা নোয়াখালির দাঙ্গার সময় তো বিজেপি ছিল না।
শান্তিময় মুখোপাধ্যায়
কলকাতা
ভাগের রাস্তা
আকাশবাণী মুর্শিদাবাদে গত ২১ জুলাই ২০১৭-য় আমার স্বামীর কিষান বাণী-তে লাইভ ফোন ইন প্রোগ্রাম ছিল সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায়। আমারও বাজারে একটু কাজ ছিল। তাই একসঙ্গেই দু’জনে একটি টুকটুক ধরে রওনা দিলাম। ঠিক করেছিলাম, বহরমপুর কমার্স কলেজ পার করে জেলা শিল্প কেন্দ্রের পাশ দিয়ে আকাশবাণী মুর্শিদাবাদ হয়ে স্বর্ণময়ী বাজারে যাব। কিন্তু টুকটুকওয়ালাকে ওই রাস্তা দিয়ে কিছুতেই নিয়ে যাওয়া গেল না। বাধ্য হয়েই জেলা শিল্প কেন্দ্রের কাছে নেমে যেতে হল। কোনও রকমে হেঁটে যেতে যেতে রাস্তার যা অবস্থা দেখলাম, তাতে টুকটুকওয়ালাকে ধন্যবাদই দিতে হয়। কারণ, ওই রাস্তা দিয়ে আসলে নির্ঘাত দুর্ঘটনা ঘটত।
জেলা শিল্প কেন্দ্রের মোড় থেকে আকাশবাণী, দূরদর্শন কেন্দ্র হয়ে টেলিফোনের অফিস সঞ্চারিকা পর্যন্ত যে রাস্তাটি আছে, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না সেটির কী অবস্থা! ওই রাস্তাতেই তিন-তিনটি কেন্দ্রীয় সরকারের অফিস আছে। অথচ কারও কোনও হেলদোল নেই। খোঁজ নিয়ে জানলাম, দীর্ঘ দিন পুরসভা ও পিডব্লিউডি অফিসের সঙ্গে দ্বৈরথ চলছে রাস্তাটির স্বত্ব নিয়ে। রাস্তাটি যারই হোক, জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে অনতিবিলম্বে সংস্কার প্রয়োজন।
মানসী মিশ্র
বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
কেউ আসেনি
২২ জুলাই ২০১৭। সব পত্রিকা ভরাট ছিল মমতা’য়, আনন্দবাজারও তা-ই। কিন্তু এই পত্রিকার ভেতরের এক কোণের একটি খবরে বুকটা মুচড়ে উঠল। শিরোনাম: ‘শূন্যবেদি, কেউ আসেনি’। বিড়লা তারামণ্ডলের উল্টো দিকে শহিদ বেদি হয়েছে ১৯৯৩-এর ২১ জুলাই নিহত ১৩ জনের স্মৃতিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সূচনা করেছিলেন কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে গড়া সেই বেদির। এ বছর ২১ জুলাই কেউ যদি সেখানে মালা দিতে আসেন, সে জন্য ফুল, মালা নিয়ে তৈরি ছিলেন পুরসভার কয়েক জন কর্মী। কিন্তু কেউ আসেনি। শেষে ওই ফুল-মালা শহিদ বেদিতে রেখে ফিরে যান পুরকর্মীরা।
না, কাউকে আঘাত করার জন্য লিখছি না। আসলে মনে পড়ে যায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই কবিতার শিরোনাম: ‘কেউ কথা রাখেনি’।
পরেশ বেরা
কানপুর, কেশিয়াড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর
প্রবেশদ্বারে ভ্যাট
রথের দিন পানিহাটিতে ‘রাঘব ভবন’ (রাঘব পণ্ডিতের বাড়ি) দর্শন করতে যাই। প্রবেশদ্বারেই দেখলাম, বাঁ দিকের দেওয়াল-লাগোয়া একটি ভ্যাট থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ভ্যাটে নানা রকমের জঞ্জাল ফেলছেন। রাঘব ভবনে শ্রীচৈতন্যদেব পদার্পণ করেছিলেন। সেই বাড়ির প্রবেশদ্বারে ভ্যাট মোটেই শোভা পায় না। মাননীয় পুরপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উদয়শঙ্কর ভাদুড়ী
কলকাতা-১০৯
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
ভ্রম সংশোধন
• ‘পড়ুয়ার কাঁধ বাঁচাতে চায় কেন্দ্র’ শীর্ষক খবরে (২৬-৭, পৃ ৫) ডিপিএস স্কুল, রুবি পার্ক আইসিএসই বোর্ডের অধীনস্থ বলে লেখা হয়েছে। এটা ভুল। হবে, ডিপিএস স্কুল, মেগাসিটি। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।