সম্পাদক সমীপেষু

ভাবতে খুব দুঃখ হয়, যে ভারতের সেরা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কোনও ডাস্টবিন রাখার ব্যবস্থা নেই। আইপিএল মেটার পরে বহু দিন লেগেছে প্লাস্টিক সরাতে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
Share:

প্লাস্টিকের ইডেন

Advertisement

আনন্দিত হলাম যে, কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এক দিবসীয় ক্রিকেট ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটের আয়োজন করা হয়েছে (‘ইডেনে জোড়া ম্যাচ, উদ্বেগ আবহাওয়ায়’, ২-৮)। তবে আবহাওয়ার ব্যাপারে যতটা উদ্বেগ হওয়া উচিত, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত হওয়া উচিত প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে। এ বছর আমি আইপিএল ম্যাচ দেখতে ইডেনে গিয়েছিলাম। ‘ই’ ব্লকের গ্যালারিতে প্লাস্টিকের ছড়াছড়ি। ইডেনে বেশ কয়েক বছর ধরে জলের বোতল, হেড ফোন, ব্যাগ, আরও অন্যান্য জিনিসপত্র নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু ইডেনের ক্যান্টিনে যে জলের প্যাকেট কিনতে পাওয়া যায়, তা যত্রতত্র ফেলাতেই এই দূষণ।

ভাবতে খুব দুঃখ হয়, যে ভারতের সেরা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কোনও ডাস্টবিন রাখার ব্যবস্থা নেই। আইপিএল মেটার পরে বহু দিন লেগেছে প্লাস্টিক সরাতে। সামনেই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। এ বার যদি সিএবি প্রেসিডেন্ট প্লাস্টিক দূষণের কথা ভেবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেন, তা হলে খুব উপকৃত হব। ক্রিকেট মানেই পিচ পর্যবেক্ষণ আর পিচ নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা। তবে তার মাঝে স্টেডিয়াম জুড়ে প্লাস্টিকের স্তূপ— মোটেও শোভা পায় না।

Advertisement

শ্রেয়ান পালচৌধুরী ভট্টনগর, পশ্চিম লিলুয়া, হাওড়া

উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র

এক-একটি জেলার গ্রামীণ এলাকায় একেবারে তৃণমূল স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম হল উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। জেলা হাসপাতালের নীচের স্তরে থাকে কয়েকটি মহকুমা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতালের নীচে থাকে বেশ কয়েকটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং গ্রামীণ হাসপাতাল। এই সমস্ত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গ্রামীণ হাসপাতালেরও নীচের স্তরে থাকে অনেকগুলি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এক-একটি ব্লকে এদের সংখ্যা গড়ে তিরিশ থেকে চল্লিশ।

সাধারণত সমতল এলাকাতে প্রতি পাঁচ হাজার জনসংখ্যায় একটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকার কথা। গর্ভবতী, প্রসূতি মা ও শিশুর সমস্ত রকম স্বাস্থ্য পরিষেবা ও জাতীয় টিকাকরণ কর্মসূচি কার্যক্ষেত্রে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে এগুলিই প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে। এখানে রোগী ভর্তি রাখার ব্যবস্থাটুকু বাদ দিয়ে সমস্ত ‘প্রিভেনটিভ ট্রিটমেন্ট’-এর সুবিধা রয়েছে; প্রত্যন্ত এলাকায় ম্যালেরিয়া বা অন্যান্য আরও পতঙ্গবাহিত রোগ মোকাবিলাই হোক বা যক্ষা ও কুষ্ঠের মতো রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ‘রিভাইসড ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস প্রোগ্রাম’ ও ‘লেপ্রসি ইরাডিকেশন প্রোগ্রাম’ সফল ভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান ভিত্তিই হল এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। রাজ্য সরকারি অক্সিলিয়ারি নার্সিং মিডওয়াইফারি ট্রেনিং-শেষে এখানে এক জন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী বা হেলথ্ অ্যাসিসট্যান্ট ফিমেল হিসেবে পোস্টিং পান। নিজ নিজ ব্লকে পোস্টিং পাওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক দূরের ব্লকে বা জেলায় পোস্টিং পান। ২০০৭ সালে ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন-এর একটি প্রোজেক্টে চুক্তিভিত্তিক অক্সিলিয়ারি নার্সিং মিডওয়াইফ নেওয়ার কাজ শুরু হয়। ট্রেনিং পর্বের শেষে ২০০৯ সালের গোড়ার দিক থেকে এঁরা বিভিন্ন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেকেন্ড এএনএম হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। কিন্তু জেলাগুলির সমস্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ‘খালি পদ’ পূরণ হয় না।

প্রসঙ্গত ২০০৯ সাল থেকেই মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরিষেবা ও টিকাকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। এই সময় থেকেই সমস্ত টিকাকরণের অন লাইন আপডেটেশন শুরু হয় এবং সমস্ত তথ্যভাণ্ডার রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকীকরণের এক বিশাল গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর কাঁধে। মাসিক কাজের রিপোর্টের চাপও অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্লক বা জেলার সুবিধার জন্যে একই রিপোর্ট ভিন্ন ভিন্ন বিন্যাসে জমা দিতে বলা হয়। আর এই সমস্ত কাজই উঠে আসে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাত ধরে।

এখন পরিস্থিতি এমন যে, হাতেকলমে কাজের চেয়েও তথ্য রক্ষণাবেক্ষণ ও রিপোর্টিংয়ের চাপই এক জন এএনএম-এর বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে; সেই কারণে কিছু ক্ষেত্রে পরিষেবার গুণগত মানও ঠিক থাকছে না। যে সমস্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত এএনএম ও কনট্র্যাকচুয়াল এএনএম— দুই-ই রয়েছে, তারা পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামলাতে পারছে; কিন্তু যেখানে এক জন নিয়মিত এএনএম, তারা পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

এর মধ্যেই কানে আসছে, এই চুক্তিভিত্তিক এএনএম নেওয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে আর কোনও সেকেন্ড এএনএম নেওয়া হবে না। কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, তা হলে যে সমস্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা দীর্ঘ দিন থেকে একাই কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁরা কি ভবিষ্যতেও এ ভাবেই ক্রমবর্ধিত কাজের চাপের মধ্যেও একা-একাই কাজ করে যাবেন? কিছু কিছু উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র দশ হাজারেরও বেশি জনসংখ্যায় পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছে, অথচ অবাক করার বিষয় হল, এরাও এক জন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর উপর নির্ভর করেই চলছে।

মাঝখানে শোনা গিয়েছিল, যে সব উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জনসংখ্যা দশ হাজার বা তারও বেশি, তাদের এলাকা ভাগ করে আরও একটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গঠন করা হবে; যদিও সেই কাজ বাস্তবায়িত হয়নি। এটা বাস্তব যে, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং এত সহজে এর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। যথেষ্ট পরিকাঠামো তৈরি না করেই এই প্রক্রিয়া কার্যকর করলে তা নিতান্তই এক প্রহসন হয়ে দাঁড়াবে। তার চেয়ে বরং এই সমস্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন বা ক্ষেত্রবিশেষে তারও বেশি করে নিয়মিত এএনএম-এর পোস্টিং (প্রতি পাঁচ হাজার জনসংখ্যায় এক জন এএনএম এই অনুপাত মনে রেখে) দেওয়া যায় কি না, কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারে।

এরই সঙ্গে আরও একটি অবাক করার বিষয় হল রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে এতগুলি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও এত বছরেও সাবসেন্টার হেডে কোনও নির্দিষ্ট ছুটির তালিকা সংশ্লিষ্ট দফতর প্রকাশ করে না। ফলস্বরূপ বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ব্লকের আধিকারিকরা নিজেদের মতো করে নির্দেশিকা চাপিয়ে দেন ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তা মানতে বাধ্য করেন। অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি হাসপাতালের আউটডোরের যে ছুটির তালিকা রয়েছে (বছরে মাত্র ছ’টি) সেটিই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, আউটডোর ও উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নাকি অভিন্ন। আমার প্রশ্ন, যদি অভিন্নই হয় তা হলে দৈনিক কাজের সময় আলাদা (উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র দৈনিক সকাল ন’টা থেকে বেলা তিনটে আর আউটডোর সকাল ন’টা থেকে বেলা দুটো) কেন? আর আউটডোরে কিন্তু এক জন ডাক্তারবাবুই সপ্তাহে প্রতি দিন বসেন না, এক-এক দিন এক-এক জন বসেন। কর্তৃপক্ষ উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও আউটডোরকে একই সারিতে ফেলার আগে এ সব বিষয় মাথায় রেখে একটি নির্দিষ্ট ছুটির তালিকা প্রকাশ করুক, যা রাজ্যের প্রতিটা জেলা তথা ব্লকেই অভিন্ন হবে।

শাশ্বতী পাল ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ার

বৌদ্ধস্তূপ

লেখা হয়েছে, বাঁকুড়ার ভরতপুরে মিলেছে বৌদ্ধধর্মের প্রাচীন নিদর্শন (‘জাদুঘরে আপনার অপেক্ষায়...’, ২৯-৭)। তথ্যটি ভুল। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সংস্থা ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়-এর যৌথ উদ্যোগে ১৯৭১-৭২ ও ১৯৭৪-৭৫-এ যে বৌদ্ধস্তূপ আবিষ্কৃত হয়েছিল, তা বর্ধমান জেলার পানাগড়ের সন্নিকটে মনোরমপুর গ্রামে অবস্থিত। উইকিপিডিয়াতে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সংস্থার রিপোর্টেও এর উল্লেখ আছে। খননকার্য থেকে প্রাপ্ত সামগ্রী সংরক্ষিত আছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামে। প্রস্তাবিত ‘হেরিটেজ পর্যটন’-এ শিল্প পার্ক পানাগড়কে যুক্ত করা সহজও।

দেবাশিস রায় মনোরমপুর, পানাগড়, বর্ধমান

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন