দল ছাড়লে ফায়দা নয়
দেবাশিস ভট্টাচার্যের লেখা পড়ে আনন্দিত হলাম (‘বড়জোর কাদা ছেটাবেন’, ৬-১০)। খুব বাস্তবোচিত লেখা। দল ছেড়ে দিলেই খুব একটা ফায়দা যে সব সময় পাওয়া যাবে না, এটা ছোট-বড়-মাঝারি সব নেতারই বোঝা উচিত। আর যাঁরা সিপিআইএম-কে ভোট দেন, তাঁদের অধিকাংশই দেন মতাদর্শগত কারণে। তাঁরা বুদ্ধ বা সূর্যবাবুকে দেখে ভোট দেন না। কিন্তু তৃণমূলের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উলটো। এঁদের ভোটব্যাংকের সিংহভাগটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। তাঁর একটা কথাতেই এটা পরিষ্কার— ‘২৯৪টা আসনে আমিই প্রার্থী’। তাই শুধু কোনও এক জন মুকুল রায় নন, স্বয়ং যুবরাজও দল থেকে বেরিয়ে গেলে, তাঁরও গ্রহণযোগ্যতা কিছু থাকবে বলে মনে হয় না।
সম্পদ হালদার রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া
সংগ্রহশালা
ইন্দ্রজিৎ চৌধুরীর লেখাটি পড়ে ব্যথিত হলাম (‘একমাত্র নিজস্ব সংগ্রহশালা হারাতে চলেছে কলকাতা’, ২১-৯)। কলকাতার মতো ঐতিহ্যশালী শহরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি রক্ষায় বদ্ধপরিকর হয়েও, সংগ্রহশালা ধ্বংস করা যদি আমাদের কাজ হয়, তা হলে তো মনে হয় আমরা আমাদের অতীত হারানোর জন্যও বদ্ধপরিকর। আমাদের রাজ্য ও দেশে অতীত ঐতিহ্য রক্ষায় সংগঠিত সরকারের যে উদ্যোগ, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি উদ্যোগ একক ভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে।
দুঃখের বিষয়, আমাদের রাজ্যের যেখানে কোনও ‘রাজ্য সংগ্রহশালা’ নেই, সেখানে ঐতিহ্যবাহী কলকাতা শহরের ‘কলকাতা সংগ্রহশালা’টিকে ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্যোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। উল্লেখ্য, একমাত্র এই সংগ্রহশালাতেই দেখা যায় কলকাতার ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির লোগো-র ধারাবাহিক প্রতিকৃতি, যার বিকল্প এখনও কলকাতায় অমিল। সরকার এ বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ করে ঐতিহ্যবাহী শহরের ঐতিহ্য রক্ষায় অগ্রণী হবে— দেশের নাগরিক হয়ে এই আবেদন জানাই। কলকাতা বিষয়ক গবেষক-বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এই সংগ্রহশালার ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা জরুরি।
আমার মনে হয়, সমাজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক থেকে চেতনাসম্পন্ন নাগরিক— সকলেরই এ বিষয়ে সজাগ হওয়া উচিত। সুসংগঠিত এই সংগ্রহশালাটিকে বাঁচিয়ে রেখে তার আরও উন্নতিসাধনের জন্য আমরা সচেষ্ট হলে তা বোধ হয় আমাদের নিজেদেরই সম্মান বাড়াবে।
উজ্জ্বল সরদার কুন্দরালী, বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
ভুল কেস
সল্টলেক ইএম বাইপাসে সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে ট্রাফিক আইন (no u-turn) ভাঙার জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ আমার মোটরবাইকের নামে ১০০ টাকার কেস দেয়। কেস নং mmTW107620/17। অথচ ওই দিন আমি কোথাও বের হইনি, আমার গাড়িও আমার ঘরে ছিল। আমি গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৭টা ৩৬ মিনিটে অনলাইনে ১০০ টাকা দিয়েও দিই। কারণ, ভেবে দেখলাম, এর সত্যতা যাচাই করতে গেলে আমার আরও বেশি টাকা খরচ হবে। কিন্তু, দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ অফিসারকে অনুরোধ করব যে, ওই দিন ওই স্থানে কোনও সিসিটিভি যদি থেকে থাকে, তা হলে এর সত্যতা আপনারাই জানতে পারবেন। দয়া করে, আপনারা যখন কোনও ট্রাফিক আইন অমান্য করা গাড়ির নম্বর লিখবেন, তখন যদি একটু ভাল করে দেখে লেখেন, তা হলে বিনা কারণে আমাদের মতো নির্দোষ চালকদের শাস্তি পেতে হয় না। আমার জায়গায় যে বা যিনি ট্রাফিক আইন ভেঙেছেন, তিনি তো এর জন্য কোন শাস্তিই পেলেন না। অপরাধ তো তিনি আবারও করতে পারেন।
কৌশিক দাস পূর্ব তেলাড়ি, নোদাখালি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
উত্তরহীন
বর্তমানে চিঠিপত্রের চল কিছুটা হলেও কমেছে। তার জায়গা অনেকখানিই দখল করে নিয়েছে ইলেকট্রনিক মেল বা ই-মেল। সরকারি বিভিন্ন অফিস, আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমস্ত ক্ষেত্রেই ই-মেলের এখন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অ্যাডমিড কার্ড ডাউনলোড থেকে শুরু করে, পরীক্ষার কেন্দ্র কোথায়, কিংবা চাকরিতে পাশ করে নিয়োগের উপযুক্ত কি না— সব কিছুই জানানো হচ্ছে ই-মেলে।
এহেন পরিস্থিতিতেও কিন্তু অনেক দফতরই ই-মেলের প্রতি দায়সারা মনোভাব দেখাচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে বা কোনও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জানার থাকলে সাধারণত মেল করা হয়। সংশ্লিষ্ট দফতরের উচিত সেই মেলের উত্তর দেওয়া। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা মেনে চলা হয় না।
এক দিকে, কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে: অতিরিক্ত জানার থাকলে মেল করুন। অথচ তার উত্তর সব ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে না। এটি মোটেও ঠিক নয়।
মুন্সী মনিরুল হাসান রায়না, পূর্ব বর্ধমান
রেলের দাবি
অন্ডাল-সাঁইথিয়া রেল লাইন বর্তমানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেল লাইন। দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের সঙ্গে দক্ষিণ ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের যোগাযোগের একটি সহজ রুট। অনেকগুলো ট্রেন আসানসোল-দুর্গাপুর-অন্ডাল-সিউড়ি-রামপুরহাট হয়ে উত্তরবঙ্গে তথা উত্তর-পূর্ব ভারতে চলে যায়। যাত্রী ও রেলের এতে সাশ্রয় ও সুবিধা হয়েছে, ভাল কথা। কিন্তু এই রেল লাইনের আশপাশের অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের কি সুবিধা হয়েছে ততখানি?
সারা দিনে তিনখানি অন্ডাল-সাঁইথিয়া, ও একখানি অন্ডাল-রামপুরহাট লোকাল ট্রেন চলে মাত্র, বৈদ্যুতিকরণ হওয়ার পরও। বর্তমানে বীরভূমের চলমান রেল দুটি অংশে বিভক্ত— একটি রামপুরহাট-সাঁইথিয়া-বোলপুর-বর্ধমান, আর একটি রামপুরহাট-সাঁইথিয়া-সিউড়ি-অন্ডাল। দুটি লাইন নির্মীয়মাণ। একটি, আমোদপুর-লাভপুর-কাটোয়া, আর একটি সিউড়ি-প্রান্তিক। বর্তমানে বোলপুর-রামপুরহাট লাইনে এক্সপ্রেস ও লোকাল মিলে অনেক ট্রেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বোলপুর-রামপুরহাট লাইনের প্রভূত উন্নতি করেছেন। কিন্তু আরও একটি প্রাচীন রেল লাইন (অন্ডাল-সাঁইথিয়া) যে আছে, তা বোধহয় সবাই ভুলে গিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য রেলমন্ত্রী থাকাকালীন হুল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে কারও কোনও নজর পড়েনি এই লাইনটির উপর, শুধুমাত্র কয়েকটি এক্সপ্রেস ট্রেনের সিউড়িতে স্টপেজ দেওয়া ছাড়া। এখন এ লাইনটি শুধুমাত্র একটি করিডর। সারা দেশে রেলের এত উন্নতি হলেও, কোনও অজানা কারণে অন্ডাল-সাঁইথিয়া লাইনের কোনও উন্নতি হয়নি (অন্তত সাধারণ মানুষের কাছে)। বিষয়টি রেলের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধির নজরে পড়েছে বলে জানি না।
এই অঞ্চলের মানুষদের অনেকগুলো দীর্ঘ দিনের দাবি আছে, যেমন— ১) অন্ডাল-সাঁইথিয়া ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো,
২) অন্ডাল-আজিমগঞ্জ ট্রেনকে আবার চালু করা (বহু পূর্বে চলত), ৩) সাঁইথিয়া-সিউড়ি-অন্ডাল-বর্ধমান ট্রেন চালু, ৪) সাঁইথিয়া-সিউড়ি-অন্ডাল-আসানসোল ট্রেন চালু, ৫) ময়ূরাক্ষীর পূর্বে সকালে সাঁইথিয়া বা সিউড়ি থেকে হাওড়া একটি ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু করা, যাতে হাওড়া পৌঁছনো যায় সকাল ১০টার মধ্যে। অন্ডাল-সাঁইথিয়া লাইনের এমন কোনও ট্রেন নেই, যাতে করে বর্ধমানের পর বড় স্টেশন, যেমন মেমারি, পাণ্ডুয়া, মগরাতে সরাসরি যাওয়া যায়। রেল ব্যবস্থার উন্নতির কোনও অংশই কি এই মানুষরা পেতে পারেন না?
হেমন্ত গরাই দুবরাজপুর, বীরভূম
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়