Coronavirus

জাপানের জনজীবন স্বাভাবিক, তবে লকডাউনের চিন্তাভাবনা চলছে

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা মনোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি। ভাবতে পারিনি একটা রোগ এ ভাবে সমগ্র বিশ্বকেই একদিন স্তব্ধ করে দেবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ১৭:২১
Share:

টোকিয়োর একটি বিখ্যাত পার্কে এইভাবে ভিড় করে হানামি উৎসব করতে দেখা যায়। ছবি:লেখকের নিজস্ব।

বর্তমানে আমরা (আমি ও আমার স্বামী অভিজিৎ)কর্মসূত্রে জাপানের টোকিয়ো শহরে আছি। অভিজিতের এক সহকর্মী জানুয়ারির শুরুতে তাঁর বিয়ের কেনাকাটা শেষ করে কাজে যোগ দিতে জাপানে ফিরেছিলেন। ওই সহকর্মী চিনের উহান প্রদেশের বাসিন্দা। এক দিন হঠাৎ তিনি জানান, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নামে একটি রোগ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে চিনে। তাই আপাতত তিনি দেশে আর ফিরতে পারবেন না। তার পর খবর থেকে জানতে পারি উহানই এই রোগের প্রথম এপিসেন্টার। তখনও সে ভাবে রোগটার ভয়াবহতা বুঝে উঠতে পারিনি। ফলে চিনা নববর্ষের সময় আমরা জাপানের সব থেকে বড় চিনা পাড়ায় (ইয়োকোহামা) ঘুরতে চলে যাই। তার কয়েক দিনের মধ্যেই জানতে পারি করোনার প্রকোপে রাতারাতি জাপানের একটি প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস-কে, প্রায় ৩৭১১ জন যাত্রী ও কর্মী-সহ কোয়রান্টিন করা হয়েছে ইয়োকোহামার কাছাকাছি। এই ঘটনার পর পরই একে একে করোনা আক্রান্তের খবর শোনা গেল জাপানের বিখ্যাত হোক্কাইডো শহরে। তার পরই ওসাকা ও টোকিয়োর বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা কানে আসে। একই সঙ্গে চিনের মর্মান্তিক পরিণতির খবর শিরোনামে দেখে বিষয়টার গুরুত্ব ও ভয়াবহতা ভাল ভাবে বুঝতে শুরু করি।

Advertisement

তবে ভাবতে পারিনি একটা রোগ এ ভাবে সমগ্র বিশ্বকেই একদিন স্তব্ধ করে দেবে। একে একে ইটালি, স্পেন, আমেরিকার পরিণতির কথা ভাবলে ভীষণ ভয় হয়। নিজের থেকে অনেক বেশি চিন্তা হয় কলকাতায় রেখে আসা পরিবার ও প্রিয়জনদের জন্য। আশা করি এক দিন আবার সব কিছু ঠিক হয় যাবে।

বিশেষ দরকার ছাড়া এখন আমরাও বেরোচ্ছি না। যদিও এখনও পর্যন্ত জাপানে লকডাউন হয়নি, কিন্তু এখানে সরকারিভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বেশ কিছু দিন আগেও এখানকার অনেক মানুষই উদাসীন ছিল, যার ফলে বসন্ত আসতে না আসতেই বিভিন্ন পার্কে জমায়েত হয়ে হানামি উৎসবও (বসন্তকে কেন্দ্র করে বনভোজন) করতে দেখা যাচ্ছিল লোকজনকে। যার ফলে কিছু দিন আগে হঠাৎ করেই টোকিয়োতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল। তবে দ্রুত সরকারি পদক্ষেপ করা হয়।

Advertisement

পরিস্থিতি দিনে দিনে এখানেও জটিল হচ্ছে এবং যতটুকু জানি এই দেশও লকডাউন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে। বহু মানুষ এখানেও চাকরি হারাচ্ছে। এই রোগের প্রকোপে তবে সরকার ঘোষণা করেছে তাঁদের আর্থিক সহায়তার কথা। মানুষ এখানে এমনিতেই স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সব সময়ই যথেষ্ট সচেতন, তবে এখন আরও অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে এই বিষয়টিকে। তাই এখানকার অবস্থা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন হলেও এই দেশের মানুষ ও সরকারের উপর আস্থা রাখছি। আশা করি ইউরোপ কিংবা আমেরিকার অবস্থা দেখে এই দেশ ওদের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করবে না।

ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী, টোকিও (জাপান)

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন