গত ২০-১-১৮ তারিখে কলকাতার এক সভাঘরে শ্রদ্ধেয় আশিস নন্দীর (সঙ্গের ছবি) একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে খবর (‘মানবতার মুখ কিন্তু হিংস্র...,’ ২২-১) বিষয়ে এই চিঠি। আমি ওই সভার উৎসাহী শ্রোতা ছিলাম। বক্তব্যের বিষয় ছিল ‘হিংসা এখন’। খুবই প্রাসঙ্গিক বিষয়। দৈনন্দিন, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক জীবন— সর্বত্রই আমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে হিংসায় ত্রস্ত, আতঙ্কিত, দিশাহীন! শ্রীনন্দীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দু’চার কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করছি।
প্রথমত, বক্তৃতা থেকে বেশ কিছু তথ্য জানতে পারলাম। যেমন, বিংশ শতকে গণহত্যায় প্রায় ২২.৫ কোটি মানুষ মারা গেছেন। কিন্তু, গণহত্যা এবং হিংসা নিয়ে আলোচনায় আমেরিকা, ইউরোপ ইত্যাদি বার বার এলেও, বিস্ময়কর ভাবে, সেই মাত্রায় আমাদের দেশ বা আমাদের রাজ্য এল না! আমরা এখন প্রতি দিন যে হিংসার পরিমণ্ডলে আছি, সে নিয়ে ‘বুড়ি ছোঁওয়া’ হলেও, আর একটু গভীর আলোচনা বোধহয় দরকার ছিল। আলোচনায় একদমই এল না স্বাধীনতা-উত্তর শিখ গণহত্যা, গুজরাত গণহত্যা বা মরিচঝাঁপি। উত্তর-পূর্ব ভারত কিংবা নন্দীগ্রাম। এল না কাশ্মীর— যেখানে গত প্রায় ৩০ বছর ধরে ঘটে চলেছে হিংসা আর হত্যা, দু’তরফেই। আশিসবাবু এড়িয়ে গেলেন মধ্য ভারতে আদিবাসী-মূলবাসী জনগণের ওপর রাষ্ট্রের হিংসা আর হত্যার কথা। এল না ভোপাল গ্যাস কেলেঙ্কারি (দুর্ঘটনা না গণহত্যা)— তার কথাও। আলোচনার পরিসর ইউরোপ হয়ে আমেরিকা ঘুরে আফ্রিকায় শেষ হয়ে গেল! স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে এক দেশভাগ ছাড়া আর কোনও গণহত্যার প্রসঙ্গ বিশেষ এল না। এটা বিস্ময়ের! অথচ, বিগত কয়েক বছর ধরে গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়া, রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে হিংসাকে লালন করা আজ আমাদের দেশে এক ভয়ংকর বাস্তবতা (উদাহরণ অনেক, দিয়ে লাভ নেই)। আর, আলোচনা অনেকটাই হল অ্যাকাডেমিক ঢঙে।
দ্বিতীয়ত, আলোচনার বক্তব্য খুব নিটোল বোধহয় ছিল না। বেশ কিছু তথ্যের সমাহার ছিল। সেগুলো নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, অভাব ছিল বিশ্লেষণ বা সূত্রায়নের। আমরা অবশই হিংসামুক্ত পৃথিবী চাই। তাই চাই ঠিক দিশা। বক্তব্যে সেই দিশা প্রবল ভাবেই অনুপস্থিত। আর, সার্বিক ভাবে হিংসার একমাত্রিক বিরোধিতা অন্য সমস্যার জন্ম দেয়। আক্রমণকারী আর আক্রান্তের হিংসা কি এক? এ-দুটোকে এক করা কি শেষ বিচারে আক্রমণকারীকে সুবিধা করে দেয় না? আলোচনা গভীরে গেল না। আলোচনায় এল না অর্থনৈতিক হিংসার কথাও। কর্পোরেট উন্নয়ন বেশির ভাগ মানুষকে বৃত্তের বাইরে ঠেলে দিয়ে যে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য করে, সেটা কি সাধারণ মানুষের ওপর সার্বিক হিংসা নয়? হিংসার যে বিচিত্র আর বহুমুখী রূপ, সেটা আর একটু আলোচনায় এলে ভাল হত।
আলোচনা দু’এক মিনিট বাংলায় শুরু হলেও অনাবশ্যক ভাবে তা ইংরেজিতে চলে গেল! বক্তার যুক্তি ছিল, ‘পরিভাষা’র সমস্যা। যুক্তিটা খুব জোরালো নয়। বাংলায় বসে আদ্যন্ত বাঙালি শ্রোতার সামনে অকারণ ইংরেজি বলা আন্তরিক পরিবেশের হানি করে। আর জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার দায়িত্ব যদি গুণিজনের থাকে, তা হলে নিজের ভাষায় উপযুক্ত পরিভাষা তৈরির দায়িত্বও কি বর্তায় না? আজ, বিশ্বের কিছু প্রধান ভাষার বলপূর্বক অনুশাসনে (মূলত ইংরেজি) বহু ভাষা বিপন্ন। সেখানে নিজের ভাষায় যোগাযোগ স্থাপন কি ভাষা-হিংসার বিরুদ্ধে একটা নিদর্শন হত না?
অনিন্দ্য ঘোষ কলকাতা-৩৩
বেহাল রাস্তা
সাম্প্রতিক কালে সপরিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার অন্তর্গত বাসন্তী অঞ্চলের কাছে মহেশগড় ও ভরতগড় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য প্রৌঢ়া মা চূড়ান্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবড়োখেবড়ো, খানাখন্দে ভর্তি, ভাঙাচোরা রাস্তা সন্তর্পণে পার হতে মিনিট তিরিশেক লেগেছিল, যা খুব বেশি হলেও দশ মিনিট লাগার কথা। আক্ষেপের বিষয়, গত বছরও রাস্তার অবস্থা একই ছিল।
নীল গুপ্ত বরানগর
পার্শ্বশিক্ষক
যেখানে প্রায় প্রতিটি রাজ্য পার্শ্বশিক্ষকদের সম্মানজনক ভাতা প্রদান করছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রায় আট বছর ধরে কোনও রকম বেতন বৃদ্ধি না করে, একের পর এক কাজের বোঝা চাপিয়ে যাচ্ছে। এ রকম বৈষম্যমূলক আচরণের কারণটা কী? এই সামান্য টাকায় চলতে না পেরে একের পর এক পার্শ্বশিক্ষক আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। কেন সকলে নির্বিকার?
আশিস চক্রবর্তী ই-মেল মারফত
নালন্দা গিয়ে
গত ২৬ ডিসেম্বর বিহারের রাজগীর ও নালন্দা বেড়াতে যাই সপরিবার। নালন্দা দর্শন শেষে দুপুর আড়াইটে নাগদ গাড়িতে উঠেছি, পিছনে আমার বোনের গাড়ি। গাড়ি চলতে শুরু করেছে। হঠাৎই এক দল লোক লাঠি ও মুগুর নিয়ে আমাদের গাড়ির উপরে সজোরে মারতে শুরু করে ও সামনের কাচ ভেঙে দেয়। আমাদের ড্রাইভার প্রাণপণ গাড়ি ছুটিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার এগিয়ে আসে। আমার বোনের গাড়ি ওই জায়গাতেই আটকে যায়। ফিরতি কিছু সাইকেল ও অটোওলাকে আধা-হিন্দিতে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, সকালে একটি ছেলেকে ট্র্যাক্টর চাপা দেয়। ছেলেটি দুপুর নাগাদ হাসপাতালে মারা যায়। সেই জন্য অনেকে রাস্তা অবরোধ করেছে। আমার বক্তব্য, আমরা কিছুই জানলাম না বা বুঝলাম না, এই ভাবে মহিলা ও বাচ্চাসহ গাড়িতে হামলা হল! পরে শুনলাম, পর পর প্রায় ছ’টি গাড়িতে হামলা হয়েছে। আমার বোনের গাড়িতেও হামলা হয়েছে। ওরা পুলিশে অভিযোগ জানালে পুলিশ বলেছে, প্রাণে বেঁচে গেছেন এটাই আপনাদের ভাগ্য!
গৌতম সরকার গোবিন্দপুর, আরামবাগ
শব্দদৈত্য
হে মান্যবর দমদম ও কাশীপুর-বেলগাছিয়া অঞ্চলের রূপকারগণ, আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনাদের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে এই অঞ্চলের রাজপথ বরাবর প্রত্যহ সকাল-সন্ধ্যায় শব্দবর্ধক যন্ত্রের মাধ্যমে যেই পরিমাণ শব্দ-ব্রহ্মের তাণ্ডব চলছে, তাতে অচিরে আমাদের বধির এবং তৎসহ অন্যান্য রোগ-ব্যাধি জর্জরিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। আপনাদের বিবেকের কাছে আমরা সাহায্যপ্রার্থী।
উত্তম চৌধুরী কলকাতা-৩০
বিষ্ণুপুর
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর একটি অতি প্রাচীন পুরসভা। এখানে রাস্তাঘাট বেশ সংকীর্ণ। সম্প্রতি ফুটপাতগুলো ঢালাই করার ফলে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু রাস্তার বহু জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে জলের পাইপ ঠিক করার জন্য। সেই খুঁড়ে ফেলা জায়গা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে না দিয়ে, স্বাভাবিক চলাচলের অনুপযোগী করে রাখা হচ্ছে। ফলে রাস্তার যেটুকু উন্নতি হয়েছিল, অচিরেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কৃষ্ণা কারফা বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
ভ্রম সংশোধন
‘আজ টিভিতে’ বিভাগে ‘ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা’ একদিনের ম্যাচের পরিবর্তে ছাপা হয়েছে ‘ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা’ (১-২, পৃ ২)। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়