‘সব কাজেই লাল ফিতে, ক্ষুব্ধ মমতা’ (২৮-২) খবরে পড়লাম, উত্তর ২৪ পরগনা (বারাসত) প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, লাল ফিতের ফাঁসে বিরক্ত তিনিও। এই ফাঁসেরই অন্যতম শিকার ওই উত্তর ২৪ পরগনারই গাইঘাটা ব্লক ও থানার অন্তর্গত ইছাপুর গ্রামের মধ্যে সপ্তদশ শতাব্দীর (১৬৫১ খ্রিঃ) টেরাকোটা ফলকসমৃদ্ধ গোবিন্দদেবের নবরত্ন মন্দিরটি (সঙ্গের ছবি)। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মন্দিরটির অবশিষ্টাংশ ২০০৮-এ লোকচক্ষুর আওতায় আসে। ওই বছরেরই শেষার্ধে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক (এএসআই) দফতরের বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে মন্দিরটি অবিভক্ত ২৪ পরগনার টেরাকোটা ভাস্কর্যের সপ্তদশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ নিদর্শন রূপে বিবেচিত হয় এবং সেটির আশু সংরক্ষণের প্রয়োজন অনুভূত হয়। সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য এপ্রিল ২০০৯-এ রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের নজরে বিষয়টি আনা হয়। কেন্দ্রীয় অনুদানের প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার সাহায্যে কাজ শুরু করে, রাজ্য হেরিটেজ কমিশন মন্দিরটির সংস্কারের কাজ অসমাপ্ত রেখে, প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করে, ২০১৩-র জুনে কাজ বন্ধ করে দেয়।
সংবাদপত্র মারফত জানা যায়, কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রাজ্য সরকার আরও দশ লক্ষ টাকা দেয়। ২০১৭-র প্রথমার্ধে গাইঘাটা ব্লকের তৎকালীন বিডিও আধিকারিক ইছাপুরের গোবিন্দ মন্দির সংলগ্ন ময়দানে গ্রামবাসীদের জনসভায় দশ লক্ষ টাকা অনুদান ও শীঘ্রই কাজ শুরুর কথা ঘোষণা করেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সেক্রেটারি মহাশয়ও বিডিও-র ঘোষণার পুনরাবৃত্তি করেন কিছু গ্রামবাসীর কাছে। অদ্যাবধি কাজ কিছুই হয়নি, উপরন্তু গত বর্ষা মরসুমের শেষার্ধে নতুন গঠিত (২০১৩) মন্দিরের উত্তর-পূর্ব অংশের উপরিভাগ ভেঙে পড়ে যায়। তা হলে এতগুলি সরকারি টাকা (চল্লিশ লক্ষ) কি অপচয় হিসাবে গণ্য হবে, নাকি প্রশাসন মন্দিরটির সংস্কারের কথা কিছু ভাববেন?
অখিলেশ চৌধুরী, সল্ট লেক
নির্দিষ্ট মজুরি
এখন বাড়ি-ঘর নির্মাণ বেশ বড় শিল্প। এই কাজে যাঁরা কায়িক শ্রমদান করেন, তাঁরা সাধারণত সাধারণ মিস্ত্রি, অভিজ্ঞ মিস্ত্রি, অদক্ষ শ্রমিক ও দক্ষ শ্রমিক— এই চারটি শ্রেণির মানুষ হন। তাঁরা যখন প্রোমোটার বা কনট্রাকটরদের অধীন কাজ করেন তখন তাঁদের তবু একটা নির্দিষ্ট মজুরি থাকে। কিন্তু যখন সাধারণ মানুষ এঁদের কাজে নিযুক্ত করতে চান, দেখা যায়, এঁদের কোনও নির্দিষ্ট দৈনিক মজুরি নেই। এতে উভয় পক্ষই অসুবিধার মুখোমুখি হন। ‘রেট’ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। সরকারি, বেসরকারি, এমনকী ‘একশো দিনের প্রকল্পের কাজ’ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কর্মীদের মজুরি নির্দিষ্ট আছে। তা হলে এই অসংগঠিত শ্রেণির কর্মীদের নির্দিষ্ট মজুরি কেন থাকবে না?
হেমন্ত গরাই, পাণ্ডুয়া, হুগলি
জলাশয়ে জঞ্জাল
গড়িয়া প্লেস-এ অবস্থিত হরিমতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও বরদা প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝখানে ইউবিআই ব্যাংক-এর ঠিক উলটো দিকে, গড়িয়া স্টেশন রোড সংলগ্ন জায়গায় একটি বিরাট জলাশয় আছে। কে বা কারা সেই জলাশয়ে, বাইরে থেকে ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাটের কাজ চালাচ্ছে। লোকালয়ের মধ্য দিয়ে লরি, ভ্যান, প্রভৃতির দ্বারা ময়লা আবর্জনা এনে প্রায়ই জমা করা হয় এখানে। সেই আবর্জনার গন্ধ, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতির কারণে পরিবেশ সাংঘাতিক ভাবে দূষিত হচ্ছে। গত বর্ষার সময় যখন ডেঙ্গিতে কলকাতার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে ওঠে তখনও এই ময়লা ফেলার কাজ নির্বিকার ভাবে চলতেই থাকে। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে উদাসীন।
অনন্ত ঘোষ, কলকাতা-৮৪
সেতু কই?
হুগলি জেলার খানাকুল থানার অন্তগর্ত মুচিঘাটায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর ১১০ মিটার লম্বা সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় গত ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। এর পরেই পূর্ত দফতর কাজ শুরু করে। আনুমানিক ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ৮ কোটি টাকা। সরকারি নির্দেশনামা অনুযায়ী এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে। এ ভাবেই বোর্ড লাগানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নদীর দু’পাড়ে কয়েকটি স্তম্ভ নির্মাণ করা ছাড়া কিছুই হয়নি।
স্বপনকুমার ঘোষ, বলপাই, হুগলি
জমি মাফিয়া
‘ভাত চাই! ক্ষুব্ধ গ্রামে পোস্টার’ (২৬-২) সংবাদ প্রসঙ্গে এই চিঠি। গত ত্রিশ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে ক্রমাগত চাষের জমি মাছের ভেড়িতে রূপান্তর হয়ে চলেছে। এক দল জমি মাফিয়া, যাদের ক্রমাগত সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ রাজনৈতিক মদতে সামাজিক সন্ত্রাসের মাধ্যমে কৃষিজমি দখল করছে। কৃষকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জমি হস্তান্তরে বাধ্য করছে। সেগুলিকে মেছো ভেড়িতে পরিণত করছে। বিশেষ করে চিংড়ি চাষে কাঁচা টাকার লেনদেন ও লাভ অনেক বেশি। চিংড়ি মাছের উৎপাদন বাড়াতেই ‘ভ্যানামেই’ প্রয়োগ কার্যত কৃষিজমির উৎপাদন ক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয়। কয়েক বছর চিংড়ি চাষের পরে সেই জমিতে আর কৃষি উৎপাদন সম্ভব হয় না।
জমি মেছো ভেড়ি হয়ে গেল বলে যাঁরা কর্মহীন হলেন, তাঁদের অনেকেই বাধ্য হয়ে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে বালি বা পাথর খাদানে কাজ করতে যাচ্ছেন। অনেক সময়েই সিলিকোসিস বা অন্য কারণে অকালমৃত্যু হচ্ছে এঁদের।
অশোক ঘোষ, কলকাতা-১২
স্টপ নেই
রাঁচি হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে ছ’দিন রাঁচি থেকে হাওড়া যাতায়াত করে। খড়্গপুর থেকে সরাসরি হাওড়া গিয়ে স্টপেজ দেয়। এর ফলে বহু যাত্রীকে চরম অসুবিধায় পড়তে হয়। সাঁতরাগাছির মতো ব্যস্ততম জংশনটিতেও এর কোনও স্টপেজ নেই।
তপনকুমার বিদ, বেগুনকোদর, পুরুলিয়া
ট্রেন কম
দক্ষিণ পূর্ব রেলের গড়বেতা, সি কে রোড ও শালবনি স্টেশনের বেশির ভাগ যাত্রী, বিভিন্ন পরিষেবা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য মেদিনীপুর যাতায়াত করেন। এ দিকে ৩-৪ ঘণ্টা অন্তর প্যাসেঞ্জার ট্রেন থাকায়, আদ্রাগামী ২:৪৫ ও সন্ধ্যা ৫:৫৮-র (মেদিনীপুরের সময়) ট্রেনে মেদিনীপুর থেকে বাদুড়ঝোলা ভিড়ে ফেরা এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা, বিশেষত রোগী, বয়স্ক মানুষ ও মহিলাদের কাছে। অন্য দিকে হাওড়াগামী একটি মাত্র প্যাসেঞ্জার ট্রেন থাকায় গড়বেতা, সি কে রোড স্টেশনের যাত্রীদের উঠতে নাস্তানাবুদ হতে হয়।
গোরাচাঁদ গোস্বামী, ফতেসিংপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
ইউনিফর্ম
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পাঁচটি শ্রেণি আছে। কিন্তু সরকার শুধুমাত্র প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি অবধি শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম বিনামূল্যে দেয়। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরকার ইউনিফর্ম দেয় না। ফলে বিদ্যালয়ে বৈষম্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ইউনিফর্ম দেওয়ার মূল কারণ হল, সবার একই পোশাক থাকবে। কিন্তু একটি শ্রেণি বঞ্চিত হলে, সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়।
আব্দুল জলিল সরকার, বক্সিগঞ্জ, কোচবিহার
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়