সোমনাথ রায়ের ‘অপরাজিত থেকে’ (১৬-১২) চিঠি বিষয়ে বলি, তাঁর পেশ করা ‘প্রকৃত তথ্য’: ‘অপরাজিত’ থেকেই বাউন্স লাইটিং-এর ব্যবহার শুরু— যদিও তিনি কোনও উৎস নির্দেশ করেননি। ১৯৬৬-তে ‘মন্তাজ’ পত্রিকার সত্যজিৎ রায় বিশেষ সংখ্যায় মৃণাল সেন-কৃত এক সাক্ষাৎকারে সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘অপরাজিত’ থেকেই ‘‘উই হ্যাভ বিন ওয়ার্কিং উইথ বাউন্স লাইটিং...’’। এ ছাড়াও তাঁকে নিয়ে যে তথ্যচিত্রটি করেছেন অরিন্দম সাহা সরদার, তাতেও প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সিনেমাটোগ্রাফার সৌম্যেন্দু রায়ও একই কথা জানিয়েছেন।
সত্যজিৎও তাঁর অপুর পাঁচালি-তে (আনন্দ, ১৯৯৫) ‘অপরাজিত’-তে বাউন্স লাইটিং-এর কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোথাও বলেননি যে, সেটাই শুরু। বলেছিলেন যে ‘অপরাজিত’-তে সুব্রতর ‘‘এই প্ল্যানটা এত চমৎকার কাজ দেয়...’’। ধন্দটা এখানেই। ১৯৮৯-এর গোড়ায়, সত্যজিৎ তখন ‘গণশত্রু’ তৈরি করছেন, তাঁর বাড়ি এসে তাঁর কাজের নানান দিক নিয়ে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেন Bert Cardullo: ‘রিভিজ়িটিং সত্যজিৎ রায়’। সেখানে সত্যজিৎ সবিস্তারে সুব্রত মিত্র ও ‘বাউন্স লাইট’ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘উই হ্যাড বিন ইউজ়িং ইট সিন্স নাইনটিন ফিফটি ফোর’’, অর্থাৎ ‘পথের পাঁচালী’র নির্মাণপর্ব থেকে। এবং এ প্রসঙ্গে কোথাও তিনি ‘অপরাজিত’র উল্লেখ পর্যন্ত করেননি। সাক্ষাৎকারটি বেরিয়েছিল ক্যালিফর্নিয়ার অনলাইন ‘ব্রাইট লাইটস ফিল্ম জার্নাল’-এ, নভেম্বর ২০০৫, ‘পথের পাঁচালী’র মুক্তির ৫০ বছর উপলক্ষে। এখানেই শেষ নয়, শ্যাম বেনেগাল সত্যজিৎকে নিয়ে যে দীর্ঘ তথ্যচিত্রটি (১৯৮৫) করেছেন, তাতেও কোথাও বলেননি সত্যজিৎ যে, ‘অপরাজিত’ থেকেই এর শুরু। ‘অপরাজিত’-তে এর পর্যাপ্ত ব্যবহারের কথা বলেছেন, তবে তার আগে বলেছেন: ‘‘উই স্টার্টেড ইউজ়িং বাউন্স লাইটস, নট সো মাচ ইন পথের পাঁচালী...’’, অর্থাৎ প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে গিয়েছিল ‘পথের পাঁচালী’র নির্মাণপর্বেই। এটি গ্রন্থিত আছে সিগাল বুকস-এর বেনেগাল অন রে/ সত্যজিৎ রায় (১৯৮৮) ও দ্য অপু ট্রিলজি-তে (২০০৬)।
সুব্রত মিত্রকে স্মরণীয় সিনেমাটোগ্রাফারের পূর্ণ মর্যাদা দিয়েও সত্যজিতের কথাকেই চূড়ান্ত বলে মানব, কারণ অপু-ট্রিলজি শেষ পর্যন্ত সত্যজিৎ রায়েরই ছবি।
সোমনাথবাবুর কাছে আরও যা যা তথ্য আছে, তা যদি জানান, সত্যজিৎ চর্চাকারীরা উপকৃত হবেন, তবে অনুগ্রহ করে এ বার উৎস নির্দেশও করবেন সঙ্গে।
প্রভাত দে
কলকাতা-১৩৭
পক্ষে বিপক্ষে
কেন্দ্রের বিভিন্ন নীতি ও সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৮-৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘটকে বামফ্রন্ট সমর্থন করেছে এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘তৃণমূল কোন দিকে আছে, বুঝে নিতে হবে। ...মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই চাইলে এই প্রতিবাদে বাধা দেবেন না।’’ (‘স্ট্রাইক কমিটি গড়ে...’, ২৫-১২)। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধর্মঘটকে সমর্থন করলেই প্রমাণিত হবে যে মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে! আর ধর্মঘটকে সমর্থন না করলেই প্রমাণিত হবে যে মমতা বিজেপির পক্ষে!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তো ব্রিগেডে সভা ডেকেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে, সেখানে অনেক নেতাই বিজেপি-বিরোধী বক্তব্য পেশ করবেন, সেখানে যদি সূর্যবাবুরা না যান, তা হলে কি প্রমাণিত হবে, সূর্যবাবুরা বিজেপির পক্ষে!
রতন চক্রবর্তী
উত্তর ২৪ পরগনা
কল্পনা লাজমি
২০১৮ সালে প্রয়াত অন্যতম গুণী ব্যক্তি ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক কল্পনা লাজমি, কিন্তু তাঁর নামটি ‘বিদায়’-এর মধ্যে (‘বছর সারা ২০১৮’, ৩১-১২) অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাঁর পরিচালনায় ‘এক পল’, ‘রুদালি’, ‘দরমিঁয়া’ বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
হীরালাল শীল
কলকাতা-১২
ডাকবাক্স
হাওড়া শহরে হারিয়ে যাচ্ছে রাস্তার ধারে বসানো ডাকবাক্সগুলো। অথর্ব অথবা অশক্ত মানুষের পক্ষে ডাকঘরে হেঁটে গিয়ে চিঠি ফেলে আসা খুবই মুশকিল। বৃদ্ধদের পক্ষে তো ইমেল বহু ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না, তাই আগের মতো বেশ কিছু জায়গায় ডাকবাক্স থাকলে ভাল।
পল্টু ভট্টাচার্য
হাওড়া
ভুল প্রয়োগ
এই কাগজে প্রায়ই একটি শব্দের ভুল প্রয়োগ করা হয়— ‘মদ্যপ’। বিভিন্ন প্রতিবেদনে, ‘নেশাগ্রস্ত’ বোঝাতে শব্দটির প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু মদ্যপ কথাটির অর্থ: ‘যিনি মদ্য পান করেন।’ এক জন মদ্যপ প্রতি মুহূর্তে নেশাগ্রস্ত বা মত্ত অবস্থায় নিশ্চয় থাকেন না। সে ক্ষেত্রে ‘মদ্যপ’-এর পরিবর্তে নেশাগ্রস্ত বা মত্ত প্রয়োগই যথোপযুক্ত নয় কি?
প্রদীপ নারায়ণ রায়
শক্তিপুর, মুর্শিদাবাদ
অর্ধমৃত
‘মৃতের রেশন’ (২৮-১২) সংবাদের প্রেক্ষিতে জানাই, বর্তমান সরকার ও খাদ্যমন্ত্রী মৃতদের রেশন কার্ড খুঁজে বার করতে বদ্ধপরিকর, অথচ আমার এবং আমার পরিবারের মতো যাঁরা বেঁচে অাছেন কিন্তু ‘ডিজিটাল রেশন কার্ড’ না পেয়ে প্রায় দু’বছর রেশন সামগ্রী থেকে বঞ্চিত, তাঁদের কথা ভাবছেন না?
সুব্রত বর্ধন
গড়িয়া
ডেভিড ‘সুশে’
‘নতুন পোয়রো’ (লন্ডন ডায়েরি, ৬-১) সংবাদে অভিনেতা ‘ডেভিড সুচেট’-এর কথা লেখা হয়েছে। আসল উচ্চারণটি হবে ‘ডেভিড সুশে’।
রানা দত্ত
কলকাতা-১
হাসপাতাল কই
যশোর রোডের উপর এখন বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘শেলী’ সিনেমার গায়ে, দক্ষিণ দমদম মিউনিসিপালিটি পরিচালিত একটি হাসপাতাল করার পরিকল্পনা বেশ কিছু বছর আগে করা হয়েছিল। উত্তর ২৪ পরগনা টাকি রোড যশোর রোড নাগেরবাজার হয়ে যে রোগীদের আর জি কর হাসপাতালে যেতে হত, তাঁরা যাতে এই হাসপাতালটির দ্বারা উপকৃত হতে পারেন, তাই ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু শুধু ইটের গঁাথনি হওয়া অবস্থায় বহু দিন ধরে হাসপাতাল বাড়িটি দাঁড়িয়ে অাছে।
সুখেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী
কলকাতা-৫৫
উৎসবের ঢল
দমদম পুরসভায় এখন এক মাসেই চোদ্দো পার্বণ চলছে। বিরাট বিরাট হোর্ডিং, ফ্লেক্স, তোরণদ্বার, যাকে বলে পথ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিযোগিতা লেগে গিয়েছে। ধুম পড়ে গিয়েছে মেলা, উৎসব, রকমারি আয়োজনের।
বইমেলা, সঙ্গীতমেলা, ফুলমেলা, পাখিমেলা, নাট্যমেলা, যাত্রামেলা, খাদ্যমেলা, দমদম মেলা। প্রতিটি মেলার মুখ্য আয়োজক আঞ্চলিক নেতারা। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁরা জানিয়ে দিচ্ছেন, কোনটার প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কোন সাংসদ, কোন মন্ত্রী, কোন পুরপিতা-মাতা।
এর পর শুরু হবে বনভোজনের আসর। কোন কাউন্সিলর কত বাস নিয়ে কত কম টাকায় ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছেন, তার প্রতিযোগিতা। কেউ ৪০টা বাস নিয়ে বিনে পয়সার বনভোজনে যাচ্ছেন, কেউ গঙ্গাসাগর নিয়ে গিয়ে আনন্দে মাতছেন।
সাধারণ মানুষ উজ্জ্বলতা দেখে ভোলে, ভবিষ্যৎটা ভাবে না।
স্বদেশ কর্মকার
কলকাতা-৩০
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।