সম্পাদক সমীপেষু: এ বার সিরিয়াল?

জীবদ্দশায় তিনি এত প্রশংসা পাননি। ৭১ বছরের জীবনে যত অনুগামী পেয়েছিলেন, সমালোচকরা সংখ্যায় ছিলেন তার বহুগুণ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০০:০১
Share:

জয় হিন্দ, জয় বাংলা স্লোগানে বইপাড়া মাতিয়ে বিদ্যাসাগর পুনঃঅধিষ্ঠিত হলেন জমকালো, বহুল বিজ্ঞাপিত, উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে; যার জেরে কলেজের পরীক্ষা পর্যন্ত পিছিয়ে গেল। কলেজে মূর্তি ভাঙা না এই অনুষ্ঠান— কোনটি অনাড়ম্বর মানুষটিকে বেশি ব্যথিত করত, সে প্রশ্ন রয়েই গেল। জীবদ্দশায় তিনি এত প্রশংসা পাননি। ৭১ বছরের জীবনে যত অনুগামী পেয়েছিলেন, সমালোচকরা সংখ্যায় ছিলেন তার বহুগুণ। রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের পঙ্‌ক্তিতে তাঁর জায়গা হয় কি না— বাঙালি এখনও বুঝে উঠতে পারেনি। ফলে, ঈশ্বরচন্দ্র হয়ে যান বর্তমান কেন্দ্র-রাজ্য দ্বৈরথে রাজনৈতিক হাতিয়ার। যারা সে দিন মূর্তিটি ভেঙেছিল, তাদের ধন্যবাদ দেওয়া যায়, এক প্রায়-বিস্মৃত মহামানবের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। কিছু দিনের মধ্যে হয়তো ২৪ পর্বের ‘বিদ্যাসাগর’ সিরিয়ালও আমরা দেখতে পাব!

Advertisement

দেবাশিস মিত্র

কলকাতা-৭০

Advertisement

আজকের দিন

রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রতি বছর ‘বিশ্ব প্রবীণ নিগ্রহ প্রতিকার ও সচেতনতা দিবস’ পালন করার জন্য ১৫ জুন দিনটি নির্ধারণ করেছে। উদ্দেশ্য, প্রবীণরা যাতে পরিবার তথা সমাজে অনাদর, অবহেলা, বঞ্চনা, দৈহিক ও মানসিক পীড়ন থেকে মুক্ত হয়ে মানুষের মর্যাদা, সম্মান, যত্ন নিয়ে বাঁচতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। এমন সমাজ গড়া, যেখানে প্রবীণরা আনন্দে বাস করবেন। মনে রাখতে হবে, আজকের প্রবীণদের জীবন যাঁরা সুন্দর করে তুলবেন, এক সময় তাঁদেরই অনেক আদর-যত্ন ও স্নেহ দিয়ে বড় করেছেন এই প্রবীণরা। প্রবীণদের সম্পত্তি, বাড়ি, জমি প্রভৃতি হস্তগত করা ও দুর্বলের উপর পারিবারিক ও সামাজিক অত্যাচারই এঁদের নিগ্রহের কারণ। প্রতিকারের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।

রমাপ্রসন্ন দত্ত

প্রাক্তন সহ-অধিকর্তা

সমাজকল্যাণ দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার

সার্ভিস চার্জ

‘কার্ড মারফত’ (৩-৬) চিঠিতে সুব্রতকুমার শীল জানাচ্ছেন, তিনি কর্পোরেশন ট্যাক্স এটিএম কার্ড মারফত জমা দেন, কিন্তু দেখা যাচ্ছে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ট্যাক্স দেওয়ার সময় কিছু বাড়তি টাকা কাটা যাচ্ছে। ট্যাক্সের রসিদে সেই বাড়তি টাকার কোনও উল্লেখ থাকছে না। আসলে, উনি যে হেতু এটিএম কার্ডের সাহায্যে ট্যাক্স দিচ্ছেন, ব্যাঙ্কই সার্ভিস চার্জ বাবদ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নিচ্ছে। উনি পাশবই আপডেট করলেই বুঝতে পারবেন।

সমর দাস

স্টেশন রোড, হুগলি

পেনশনে ঝামেলা

আমি এক বিধবা পেনশনভোগী। আমার স্বামী রেলওয়েতে সিনিয়র টাইপিস্ট ছিলেন। ভোটার কার্ড বা প্যান কার্ড অনুযায়ী আমার বয়স ৮১ বছর। রেলের নিয়ম অনুযায়ী, ৮০ বছর বয়স হলে, নির্ধারিত হিসেবে পেনশন আমার ক্ষেত্রে প্রায় ২০০০ টাকা বাড়া উচিত। অথচ রেল বলছে, পেনশন-বইয়ে আমার জন্মসাল দেওয়া নেই, তাই বর্ধিত পেনশন দেওয়া যাবে না। সমস্ত প্রমাণপত্র ও দরখাস্ত অফিসে জমা দেওয়া হলেও, আজ এক বছর ধরে ঘুরছি।

শিপ্রা চট্টোপাধ্যায়

বাগনান, হাওড়া

লম্বা খেলা

অমিতাভ গুপ্ত-র ‘কংগ্রেস ঠিক কী করতে চায়’ (১১-৬) নিবন্ধ সম্পর্কে কিছু কথা। নরেন্দ্র মোদী যে শুধু এই নির্বাচনে কংগ্রেসের আজেন্ডা ঠিক করে দিয়েছেন, তা-ই নয়, ভেবে দেখলে, তাঁর খেলাটি লম্বা মেয়াদের। ২০১৪ সালের ভোটের প্রচার বিজেপি শুরু করেছিল ২০১২ সাল থেকেই। গুজরাত মডেলের প্রসঙ্গটিকে জনপরিসরে নিয়ে এসে। সাধারণ মানুষ থেকে অর্থনীতির গবেষক, অনেকেই বেশ উত্তেজিত হয়েছিলেন এই মডেল নিয়ে। ২০১৯-এর নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল ২০১৫ সাল থেকে। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলো এই কথাটা বুঝেই উঠতে পারল না। মনে পড়তে পারে, ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির অন্যান্য নেতারা অজস্র ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু, এমন জোরের সঙ্গে দিয়েছেন, যাঁরা সেই ভুলগুলো ধরতেও পেরেছেন, তাঁদের কণ্ঠস্বর আর শোনা যায়নি। নির্বাচন মেটার পরে সেই সব তথ্য নিয়ে প্রচুর বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু, রাজনীতির ময়দানে তাতে ইতরবিশেষ হয় না।

এ বারের নির্বাচনে বিরোধীরা আগের চেয়ে তৎপর হয়েছেন, শেষ কয়েক মাস প্রচুর আপত্তি জানিয়েছেন তথ্য নিয়ে। কিন্তু, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তার পাশাপাশি, সুচতুর ভাবে ‘মোদী না হলে আর কে’ প্রচার ভাসিয়ে দিয়েছে বিজেপি। কাজেই, কংগ্রেস বা অন্য দলগুলোকে যদি মোদীর বিরুদ্ধে লড়তে হয়, আগামী নির্বাচনের অপেক্ষায় বসে থাকলে হবে না। প্রথম থেকেই মানুষের কাছে বোধগম্য ভাষায় মোদীর খামতিগুলো ধরিয়ে দিতে হবে, তথ্যের ভুল সামনে নিয়ে আসতে হবে। আর, মোদীর বদলে কে এবং কেন, তার স্পষ্ট উত্তর তৈরি করতে হবে।

পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি

অনুপ্রেরণা

‘বাঁচলাম যখন, বাঁচার মতো বাঁচব’ (১৮-৫) শীর্ষক সংবাদটি পড়ে জানলাম সুপর্ণা গোস্বামীর জীবন কাহিনি। সুপর্ণারা আমাদের অনুপ্রেরণা। এই প্রসঙ্গে বলি দুর্গাপুরের রাসমণি সাহা দেবনাথের কথা। ওর ছ’মাস বয়সেই বোঝা যায়, মাথার খুলির ভিতরের অংশ সব একসঙ্গে জুড়ে গিয়ে একটা জমাট মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে। দেড় বছর বয়সে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাসমণির প্রথম বার ব্রেন অপারেশন হয়। মেডিক্যাল কলেজের সেই সময়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪৩ বছরের ইতিহাসে রাসমণি হল ১৮ নম্বর কেস। তার পর ওর ৯ বছর ৩ মাস বয়সে ভেলোরে ২৫ জন ডাক্তারের মিলিত প্রচেষ্টায় ৯ ঘণ্টা সময় ধরে মাথার খুলি পুরো খুলে রেখে প্রায় ৭ ইঞ্চি কেটে বাদ দিয়ে অপারেশন হয়। দেড় দিন পর রাসমণির জ্ঞান ফেরে।

জীবনের এই প্রতিকূল লড়াইয়ে মুখাবয়বের গঠন তাই আর পাঁচ জন মানুষের মতো না হলেও, অদম্য ইচ্ছে এবং মনের জোরে রাসমণি বাকিদের পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে। আজ সে সীতারামপুরের একটি হাই স্কুলে ১৩ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করছে। ওই অঞ্চলে ‘রাসমণি দিদিমণি’কে চেনেন না খুব কম মানুষই আছেন। পাশাপাশি রয়েছে আঁকা, লেখা, গান, আবৃত্তি, সিন্থেসাইজ়ার বাজানোর প্রতিভা।

সুপর্ণা ঘোষ

কলকাতা-৩২

গডসের মন্দির

নীতি নায়ারের ‘এখন এ রকমই হবে’ (১৯-৫) শীর্ষক প্রবন্ধ পড়ে জানলাম, এখনও কিছু সংখ্যক মহারাষ্ট্রবাসী নাথুরাম গডসেকে দেবতা জ্ঞান করেন। এই বিষয়ে বলি, ১৯৫০ সালের প্রথম দিকে, ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘সুধর্মা’ নামক গৃহে বসে, তাঁর পুণে ভ্রমণের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা শুনেছিলাম। তাঁর জবানিতেই বলি: ‘‘গত মাসে ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে পুণা গিয়েছিলুম। ভোরবেলা শয়নগৃহ থেকে শুনতে পাচ্ছিলুম রামধুন গান হচ্ছে। মহাত্মা গাঁধীর প্রিয় রামধুন গান, নাথুরাম গডসের জন্মভূমিতে গীত হচ্ছে শুনে একটু অবাকই হলুম। গানটি মনোযোগ দিয়ে শুনতে গিয়ে টের পেলাম যে রামধুন গাওয়া হচ্ছে ঠিক, তবে কথা পাল্টে গেছে। ওরা গাইছে ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম, জিতা রহো নাথুরাম, জয় জয় নাথুরাম! নাথুরাম! নাথুরাম!’’’

আশিস কুমার ঘটক

কলকাতা-২৮

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন