Editorial News

সাঙ্কেতিক ভাষা ছেড়ে সরল ভাষায় বুঝে নেওয়ার সময় এসেছে

সম্প্রতি অনুব্রতর সাধ জেগেছে, বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ১২ লক্ষ ভোট তাঁর চাই-ই। যে কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৭ লক্ষ, সেখানে ৭২ শতাংশ ভোট নিজের ঝুলিতেই নেওয়ার বাসনা হয়েছে তাঁর।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৯
Share:

সে এক সময় ছিল যখন তিনি সরাসরিই কথা বলতে ভালবাসতেন। নির্দেশ দিতেন সোজাসাপটা। ‘বোমা মাড়ুন’, ‘আগুন লাগিয়ে দিন’— তাঁর নিদানগুলো ছিল সপাট। মর্মভেদী, চর্মভেদীও। এখন সময় পাল্টেছে। এখন আর সরাসরি বলা পছন্দ করেন না তিনি। এখন তাঁর পছন্দ সাঙ্কেতিক ভাষা। পটভূমি এক, নিদান এক, ব্যক্তিও সেই একমেবদ্বিতীয়ম— অনুব্রত মণ্ডল। সরাসরি বললেও যাঁর কোনও শাস্তি হয় না, সাঙ্কেতিক ভাষায় তো নয়ই।

Advertisement

সম্প্রতি অনুব্রতর সাধ জেগেছে, বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ১২ লক্ষ ভোট তাঁর চাই-ই। যে কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৭ লক্ষ, সেখানে ৭২ শতাংশ ভোট নিজের ঝুলিতেই নেওয়ার বাসনা হয়েছে তাঁর। বাম-ডান যাবতীয় আমলে খ্যাত-কুখ্যাত সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে নতুন এই রেকর্ড কী ভাবে করবেন তাঁর দলের কর্মীরা, সে পথও বাতলে দিয়েছেন অনুব্রত। এ বারের ভাষা আরও সঙ্কেতময়, যদিও তৃণমূল কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ বুঝতে কারওই অসুবিধা হচ্ছে না। তিনি এ বার বলেছেন, ‘অন্য রকম পদ্ধতি’-র কথা। রোগ সারানোর জন্য ছোট বা বড় আকারের সিরিঞ্জ, প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহারের নিদান।

এর আগে কখনও চড়াম চ়ড়াম বাদ্যি, কখনও বা আধাসেনাকে গুড়-জল দেওয়া অথবা রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে বলে নিপাট ‘ভালমানুষ’ মন্তব্য অথবা নকুলদানা বিলির মতো নানা শব্দবন্ধের ব্যবহারে অনুব্রত তাঁর ভোটের প্রকরণ ও ব্যকরণ দুটোই স্পষ্ট করেছেন বারংবার। নির্বাচন কমিশনের সামনে বলেছেন, পিছনে বলেছেন। সেনাবাহিনীর মুখের উপর বলেছেন, সরে গেলেও বলেছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় বলেছেন, তস্য নাকের ডগায়ও বলেছেন, আমআদমির মুক্ত প্রান্তরে তো বলেছেনই— তাঁকে নড়ানোর সাধ্যি কারও হয়নি। মাঝেমধ্যে ঈষৎ রাজনৈতিক তিরস্কার অথবা প্রশাসনিক সতর্কবার্তার মধ্যেই আটকে থেকেছে তাঁকে নিবারণের যাবতীয় প্রচেষ্টা। সেই ব্যবস্থায় যদি এতই ঢিলেমি থাকে, অনুব্রত মণ্ডলের মতো দামাল সন্তানেরা গুড়-জল থেকে নকুলদানা হয়ে ইঞ্জেকশনের বিভিন্ন আকারে সিরিঞ্জে মহানন্দে বিচরণ করবেন তা তো বলাই বাহুল্য।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অতএব ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলও আবার স্বমহিমায়। সাধারণ মানুষ এক বার অন্তত দেখতে চান, নির্বাচন কমিশন নামের ওই দোর্দণ্ডপ্রতাপ সংস্থা, তারও কোনও মহত্তর মহিমা আছে কি না। সাঙ্কেতিক ভাষা ছেড়ে এক বার সরল ভাষায় মানুষ বুঝে নিতে চান, কত ধানে ঠিক কত চাল হয়।

আরও পড়ুন: বীরভূমে চাই ১২ লক্ষ ভোট! অনুব্রতের দাবিতে তটস্থ কর্মীরা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন