প্রবন্ধ ২

লন্ডন ডায়েরি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে, ১৯১৭ সালে, রাজা পঞ্চম জর্জ সিদ্ধান্ত নিলেন, ব্রিটিশ রাজপরিবারের জার্মান যোগসূত্রটা ছিন্ন করবেন। ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে সাক্স-কোবার্গ ও গোথা-র রাজকুমার আলবার্টের বিয়ের পর থেকেই ব্রিটিশ রাজপরিবারকে ‘অর্ধেক জার্মান’ হিসেবে দেখা হত।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ১৪:০০
Share:

ব্রিটিশ রাজপরিবারের জার্মান যোগসূত্র

Advertisement

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে, ১৯১৭ সালে, রাজা পঞ্চম জর্জ সিদ্ধান্ত নিলেন, ব্রিটিশ রাজপরিবারের জার্মান যোগসূত্রটা ছিন্ন করবেন। ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে সাক্স-কোবার্গ ও গোথা-র রাজকুমার আলবার্টের বিয়ের পর থেকেই ব্রিটিশ রাজপরিবারকে ‘অর্ধেক জার্মান’ হিসেবে দেখা হত। জার্মান কাইজার দ্বিতীয় উইলহেল্‌ম সম্পর্কে ছিলেন পঞ্চম জর্জের ভাই। কিন্তু ১৯১৭-তে যখন ব্রিটেন-জার্মানি যুদ্ধ চলছে, জার্মান বিমান বোমা ফেলছে লন্ডনে, তখন ১৭ জুলাই ১৯১৭ রাজা তাঁর রাজ-নাম ‘সাক্স-কোবার্গ ও গোথা’ থেকে পালটে করলেন ‘উইন্ডসর’। সেই ‘হাউস অব উইন্ডসর’-এর শতবর্ষ উপলক্ষে রয়াল মিন্ট পাঁচ-পাউন্ডের নতুন মুদ্রা আনছে, তাতে উইন্ডসর কাস্‌ল-এর ছবি খোদাই করা।

সম্পর্ক: পঞ্চম জর্জ-দ্বিতীয় উইলহেল্‌ম

Advertisement

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আরও একটা নাম-বদল হয়েছিল। জার্মানির ব্যাটেনবার্গ বংশের লোক লুই ব্যাটেনবার্গ ছিলেন নাম পালটে হন ‘মাউন্টব্যাটেন’। ভারতে লোকে তাঁকে জানত ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন নামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও ব্রিটিশ রাজপরিবার ও জার্মানির যোগাযোগ ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। ব্রিটিশ ইতিহাসের না-বলা কাহিনিগুলোর অন্যতম হল রাজপরিবারের নাৎসি যোগ। রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড নাৎসিদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন ছিলেন। কোবার্গ-এর ডিউক, রাজা পঞ্চম জর্জের সম্পর্কে ভাই নাকি ছিলেন কট্টর নাৎসিপন্থী। ইটন-এ পড়া চার্লি কোবার্গ পরে জার্মানি চলে যান ও সাক্স-কোবার্গ ও গোথা-র রাজা হন। হিটলারের সেনাবাহিনীতে জেনারেলও হয়েছিলেন। ইতিহাসবিদরা চাইছেন, উইন্ডসরের রাজ-আর্কাইভে ডিউক অব কোবার্গ ও রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের নাৎসি-যোগ সংক্রান্ত নথি জনসমক্ষে আনা হোক।

শতবর্ষে রুশ বিপ্লব

এ বছর রুশ বিপ্লবের শতবর্ষ। সেই উপলক্ষে ব্রিটিশ লাইব্রেরি ‘রুশ বিপ্লব: আশা, আশাভঙ্গ, মিথ’ নামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনীতে আছে ১৯০২-এর এপ্রিলে লেখা লেনিনের চিঠি, যে চিঠিতে তিনি ব্রিটিশ মিউজিয়ম লাইব্রেরিতে ভূমি সংক্রান্ত পড়াশোনা করার জন্য ‘রিডার’ হতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। চিঠির শেষে সই— জেকব রিখটার, জারপন্থী পুলিশদের চোখে ধুলো দিতে যে ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। লেনিনের সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছিল। অন্যান্য জিনিসের মধ্যে আছে কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোর প্রথম সংস্করণ, রেড আর্মির পোস্টার, বলশেভিক-বিরোধী প্রচারপুস্তিকাও। ব্রিটিশ মিউজিয়ম লাইব্রেরিকে লেখা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড-এর চিঠি আছে, যেখানে লেখা বাছাই কিছু বলশেভিক সাহিত্যকর্মের নাম। যেগুলো পাঠকদের দিতে বারণ করছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, কেননা তাতে আগুন জ্বলতে পারে! জার দ্বিতীয় নিকোলাস-এর জমানা থেকে শুরু করে অক্টোবর বিপ্লব অবধি সম্পূর্ণ ঘটনাপঞ্জি দেওয়া আছে প্রদর্শনীতে। বিশেষ এই প্রদর্শনী চলবে ২৯ অগস্ট পর্যন্ত।

পরম্পরা

ভোট হতে বাকি এক মাস, লেবার পার্টি তার আসন ধরে রাখতে কোমর বেঁধে লেগে পড়েছে। হ্যাম্পস্টেড আর কিলবার্ন-এর আসনে এখন আছেন শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। মাত্র ১১৩৮ ভোটে এগিয়ে তিনি এই আসনটি পেয়েছিলেন। টিউলিপ এ বারের প্রচার শুরু করেছেন লন্ডনের জনপ্রিয় মেয়র সাদিক খানকে নিয়ে, টিউলিপের মা শেখ রেহানা উৎসাহ জোগাতে সঙ্গী হয়েছিলেন, আর ছিল টিউলিপের এক বছর বয়সের মেয়ে আজালিয়াও। ছোটখাটো চেহারার টিউলিপের সামনে ভোট এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

গোলাপি পায়ের পরি

নয়নমণি: স্কুলের মাঠে অনুপূর্বা সাহা

সাত বছরের মেয়ে অনুপূর্বা সাহা সোশ্যাল মিডিয়ার নয়নের মণি হয়ে উঠেছে। বার্মিংহামের স্কুলে সে সগর্বে হাজির হয়েছিল তার গোলাপি রঙের যান্ত্রিক পা’খানি নিয়ে। ওর বন্ধুরা সবাই ওকে ঘিরে ধরে, আদরে আর হুল্লোড়ে ভরিয়ে দিয়েছিল। সলিহাল-এর সেন্ট আলফেজ নার্সারি স্কুলে পড়ে অনুপূর্বা। সে দিনের ভিডিয়োটা ভাইরাল হয়ে যায়। দেখানো হয়েছিল বিবিসি মিডল্যান্ডস আর ফক্স নিউজ-এও। অনুপূর্বার বাবা অনির্বাণের চোখ ভিজে গিয়েছিল সেই খবর দেখে। জন্মের সময় অনুপূর্বার আমবিলিকাল কর্ড পেঁচিয়ে গিয়েছিল তার ডান পায়ের সঙ্গে, পা’টা তাই বাদ দিতে হয়। জন্মের পর ১৭ মাস সে ছিল হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার-এ। আর তিন বছর বয়সে প্রথম যান্ত্রিক পা ব্যবহার করতে দেওয়া হয় ওকে। অনুপূর্বার প্রিয় রং গোলাপি, তাই ওর নতুন ‘স্পোর্টস ব্লেড’খানাও সেই রঙের। এখন থেকে ও নাচ, দৌড়োদৌড়ি, ফুটবল— ওর সব শখ পূরণ করতে পারবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement