লন্ডন ডায়েরি

স্কুলে যেতেন না, পড়শির সঙ্গে মেলামেশাও ছিল না। দারিদ্রের জীবন, তিন বোনই মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন যদি লিখে কিছু পয়সা পাওয়া যায়। এমিলি তাঁর পাণ্ডুলিপি আগলে রাখতেন, শার্লটের কথায় পরে ছাপতে দেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share:

দু’শো বছর পরেও চর্চা এমিলিকে নিয়ে

Advertisement


মারা গিয়েছেন ত্রিশ বছর বয়সে। একটাই বই লিখেছেন। উদারিং হাইটস। ক্যাথি আর হিথক্লিফ-এর সেই প্রেমকাহিনি লেখক, শিল্পী, ছবি-করিয়েদের প্রভাবিত করেছে যুগ যুগ ধরে। ৩০ জুলাই ছিল এমিলি ব্রন্টি-র জন্মের দ্বিশতবর্ষ। ছয় ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম এমিলির জন্ম ইয়র্কশায়ারের ব্র্যাডফোর্ডের কাছে থর্নটনে। মা, বড় দুই দিদির মৃত্যুর পর বাকি চার ভাইবোন বেঁধে বেঁধে থাকতেন। এমিলির দুই বোন অ্যান ও শার্লটও বই লিখেছেন, শার্লট ব্রন্টির জেন আয়ার উপন্যাসও খুব বিখ্যাত। ভাই ব্র্যানওয়েল ছবি আঁকতেন। বাবার সঙ্গে ওঁরা চলে আসেন নতুন এক বাড়িতে, সেখানেই খাওয়ার টেবিলে বসে বোনেরা লিখতেন। স্কুলে যেতেন না, পড়শির সঙ্গে মেলামেশাও ছিল না। দারিদ্রের জীবন, তিন বোনই মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন যদি লিখে কিছু পয়সা পাওয়া যায়। এমিলি তাঁর পাণ্ডুলিপি আগলে রাখতেন, শার্লটের কথায় পরে ছাপতে দেন। ১৮৪৭-এ এলিস বেল ছদ্মনামে প্রকাশিত হয় উদারিং হাইটস। বইয়ের সাফল্য এমিলি দেখে যেতে পারেননি, এক বছর পর যক্ষ্মায় মারা যান তিনি। ১৯৩৯-এ ছবি হয়েছে এই বই থেকে, মুখ্য দুই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন লরেন্স অলিভিয়ের ও মার্ল ওবেরন। এমিলির জন্মের দু’শো বছর উপলক্ষে ১৬ জন লেখক ছোটগল্প লিখেছেন এমিলির বইয়ের প্রেরণায়, সঙ্কলনটির নাম আই অ্যাম হিথক্লিফ। লিলি কোল বানিয়েছেন শর্ট ফিল্ম বল্‌স।

দিদি: অ্যান, এমিলি, শার্লট। ভাই ব্র্যানওয়েলের আঁকা ছবি

Advertisement

কী হবে

ব্রিটেনে ২০২১-এর জনগণনায় ব্রিটেনের শিখদের জাতিগত আলাদা কোনও তকমা দেওয়া হতে পারে, এই নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। অফিস অব ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স বলেছে, ২০১১-এর জনগণনায় ৮৩,০০০ শিখ ‘জাতিগত পছন্দ’গুলির কোনওটিই বেছে নেননি, তাই আগামী গণনায় তাঁদের জন্য পৃথক একটি জাতি-পরিচয় থাকতে পারে। প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, ব্রিটেনের ৪,৩০,০০০ শিখদের সবাই এটা মেনে নেবেন কি না। ব্রিটেনের ১১২টা গুরুদ্বার নতুন তালিকা গ্রহণ করেছে। তাদের আওতায় সব মিলিয়ে এক লক্ষ শিখ আছেন, এমনই তাদের মত। সিংহভাগ সদস্য মেনে নিলে শিখরা এই পৃথক জাতি-পরিচয়েই নিজেদের তালিকাভুক্ত করবেন, সহজেই অনুমেয়। বহু শিখ আবার বিরোধিতাও করছেন। তাঁদের বক্তব্য, গুরুদ্বারগুলি খলিস্তানি গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত, গুরুদ্বারের মত মানেই তাঁদের মত নয়। অনেকে বলছেন, জনগণনা ফর্মে তাঁরা নিজেদের এশীয় (এথনিক ইন্ডিয়ান) হিসেবে তালিকাভুক্ত দেখতেই খুশি।

সম্মাননা

ব্রিটিশ অ্যাকাডেমির নতুন ‘ফেলো’ নির্বাচিত হলেন দু’জন বাঙালি— দেশভাগ নিয়ে কাজ করা ইতিহাসবিদ জয়া চট্টোপাধ্যায় এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স-এর অর্থনীতির অধ্যাপক মৈত্রীশ ঘটক। মৈত্রীশ আগে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক, জয়া বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ-এ সাউথ এশিয়ান হিস্ট্রি বিভাগে কর্মরত। ১১৬ বছরের পুরনো ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি ব্রিটেনে মানববিদ্যা ও সমাজবিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ চিন্তকদের পীঠস্থান, এখানকার প্রাক্তন ফেলোদের মধ্যে ছিলেন স্যর উইনস্টন চার্চিল, সি এস লিউয়িস, শিমাস হিনি, বিয়াত্রিস ওয়েব প্রমুখ। এ বছর অ্যাকাডেমির নির্বাচিত ৭৬ জন ‘ফেলো’র মধ্যে আছেন জয়া ও মৈত্রীশ। দেশভাগের সত্তর বছর নিয়ে গত বছর বিবিসি একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করেছিল, সেই অনুষ্ঠানে জয়া ছিলেন পরিচিত মুখ। দেশভাগের কারণ ও পরিণাম, উদ্বাস্তু ও অধিকার, দক্ষিণ এশিয়ায় নাগরিকত্ব, সংখ্যালঘু নির্মাণ ইত্যাদি তাঁর গবেষণার বিষয়।

নিয়মভাঙা গরম

ঠান্ডা-ঠান্ডা: জুডি ও ক্যামিলা

ব্রিটেনে তাপপ্রবাহ চলছে। গত সপ্তাহের তাপমাত্রা দেখিয়েছে, লন্ডন দিল্লির চেয়েও গরম! গরমের চোটে ক্রিকেটের পীঠস্থান লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডও এই প্রথম তাদের নিয়ম পাল্টেছে। নতুন নিয়মে সদস্য ও অতিথিরা চিরাচরিত জ্যাকেট না পরেই প্যাভিলিয়নে ঢুকতে পারবেন। মার্লিবোন ক্রিকেট ক্লাবের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেমি ক্লিফোর্ড বলেছেন, এত দিন সদস্যদের বলা হত জ্যাকেট পরা অবস্থায় আসতে। প্যাভিলিয়নের বাইরে গিয়ে বসলে জ্যাকেট খোলা যেতেই পারে, কিন্তু ভেতরে থাকলে জ্যাকেট-কানুন মানতে হবে। এ সপ্তাহে সেই নিয়ম ভেঙেছে। ও দিকে গরম সামলাতে অসবোর্ন হাউসে অভিনেত্রী জুডি ডেঞ্চ ও ডাচেস অব কর্নওয়াল ক্যামিলার এক সঙ্গে আইসক্রিম খাওয়ার ছবি বেজায় হিট। রানি ভিক্টোরিয়ার ছুটি কাটানোর বাড়ি অসবোর্ন হাউসে ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল ছবির শুটিং হয়েছিল, জুডি তাতে রানির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। গরমে আইসক্রিম গলে ক্যামিলার পোশাকে লেগে যায়, তাতে কী। তিনি ঘুরে ঘুরে দেখলেন ‘ইন্ডিয়ান দরবার’ কক্ষ, আবদুল করিম ও দলীপ সিংহের ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন