কাঠগড়ায় নিউ ইয়ার্স ইভ-এর আলো
বিগ বেন-এর কাঁটা বারোটা ছুঁতেই নিউ ইয়ার্স ইভ-এ লন্ডনে যে আতসবাজি শুরু হয়, সেই বিখ্যাত আলোর কাজই এ বার বিতর্কের মুখে। কারণ লন্ডন আই— যা কিনা শহরের আলোর কারুকাজের কেন্দ্র— এ বছর সেজে উঠেছিল গাঢ় নীল বৃত্তের উপরে হলদে আলোয়, ঠিক যেমনটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা বা প্রতীক— নীলের উপরে বারোটা সোনালি তারা। উৎসবের আলোকসজ্জাতেও প্রোপাগান্ডা?— লন্ডনের মেয়র সাদিক খানকে কাঠগড়ায় তুলেছেন অনেকে। প্রো-ব্রেক্সিট টোরি সাংসদেরা সাদিকের সমালোচনা করেছেন: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের বোঝাপড়ার এই সময়েই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা দেখাতে হল? তা হলে তো ফকল্যান্ড যুদ্ধ চলাকালীন আর্জেন্টিনার পতাকা দেখাতে হত! টুইটারে সাদিক জানিয়েছেন, এ বারের আলোকসজ্জার বিষয় ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়নপন্থী’ করাটা তাঁরই সিদ্ধান্ত। লিখেছেন, লন্ডন বিশ্বের সেরা শহরগুলোর একটা, আর এই ‘হয়ে ওঠা’র পিছনে ইউরোপীয়দের কৃতিত্ব কম নয়। বৈচিত্রই লন্ডনের শক্তি, আর নিউ ইয়ার্স ইভ সেই বৈচিত্র উদ্যাপনেরই ক্ষণ।
বিতর্কিত: নতুন বছর-শুরুতে লন্ডন আই। ডান দিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতীক
ঠান্ডা জলে ডুব
বছর-শুরুর দিনে ব্রিটেন জুড়ে এক অভিনব ট্রাডিশন পালিত হয়। সারা দেশের সাঁতারুরা কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়াতেও সমুদ্রতটে যান বছরের প্রথম ‘আউটডোর সুইম’-এ। যাঁদের কাছাকাছি সমুদ্র নেই, তাঁরা সেতু থেকে ঝাঁপান নদীতে। স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় ‘লুনি ডুক’ নামে এক সাঁতার খুব বিখ্যাত। সাঁতারুরা এখানে বিচিত্র পোশাক পরেন। এ বছর এক হাজারেরও বেশি সাঁতারু এডিনবরার ‘ফার্থ অব ফোর্থ’-এ বরফঠান্ডা জলে ডুব দিয়েছেন। অনেকেরই পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী স্কটিশ টার্টান চেক। ট্রাম্পের মতো দেখতে এক জনকেও দেখা গিয়েছে!
নতুন পোয়রো
ক্রিসমাসের ছুটিতে তিন পর্বে আগাথা ক্রিস্টির ‘এবিসি মার্ডার্স’ দেখাল বিবিসি। গোয়েন্দা এরকুল পোয়রো-র চরিত্রে এ বার একেবারে অন্য রকম এক জন, অভিনেতা জন ম্যালকোভিচ। পোয়রোর সেই বিখ্যাত কালো গোঁফ আর নেই, বদলে সাদা ‘গোটি’। এই গল্পে খুনি রেলওয়ে টাইমটেবল ব্যবহার করে; খুন করে এ-বি-সি দিয়ে শুরু হওয়া নামের মানুষদের, এমনকী তাদের শহরের নামও ওই তিনটে বর্ণ দিয়েই শুরু! আগে চলচ্চিত্রে পোয়রো চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলবার্ট ফিনি, পিটার উস্তিনভ, কেনেথ ব্রানাঘ। তবে আইটিভি-তে ডেভিড সুচেট অভিনীত পোয়রো-ই এ যাবৎ কালের মধ্যে সেরা, মত অধিকাংশ ক্রিস্টি-ভক্তের।
সেরার দৌড়ে
‘আইকনস’ নামের এক সিরিজ়ের জন্য বিবিসি ‘বিশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী কুড়ি’ ব্যক্তিত্বের তালিকা প্রকাশ করেছে। নেতা, অভিযাত্রী, বিজ্ঞানী, মনোরঞ্জক, অ্যাক্টিভিস্ট, ক্রীড়াবিদ, শিল্পী-লেখক— সাতটা বিভাগে মোট ২৮টা নামের প্রাথমিক খসড়া। জনতার ভোটে ২৮ নামবে ৭-এ, শেষে ‘বিশ শতকের শ্রেষ্ঠ’ ব্যক্তিত্বে। ‘নেতা’ তালিকায় আছেন চার্চিল, নেলসন ম্যান্ডেলা; অ্যাক্টিভিস্ট-লিস্টিতে গাঁধী, হেলেন কেলার, মার্টিন লুথার জুনিয়র; শিল্পীদের মধ্যে পিকাসো, হিচকক; বিজ্ঞানীদের মধ্যে মারি কুরি, আলবার্ট আইনস্টাইন।
তোমার চিঠি
অবগাহন: চিঠি হাতে ফিলিস পন্টিং
যুদ্ধের সময়কার এই প্রেমকাহিনি বিয়েতে গড়ায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রেমে পড়েছিলেন ফিলিস পন্টিং ও বিল ওয়াকার। উইল্টশায়ারের এক শহরে দু’জনের দেখা, বিল সেখানে রেজিমেন্টের এক সৈন্য। পরে তাঁকে পাঠানো হয় ভারতে, ফিলিস থেকে যান ইংল্যান্ডেই। ভারতে থাকতেই বিল চিঠিতে বিয়ের প্রস্তাব দেন ফিলিসকে। ফিলিসও ‘হ্যাঁ’ জানিয়ে ফিরতি-চিঠি পাঠান। কিন্তু বিল আর যুদ্ধ থেকে ফেরেননি। ৯৯ বছর বয়সে পৌঁছে ফিলিস জানলেন, বিল তাঁর চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন! আট বছর সমুদ্রের তলায় পড়ে ছিল বিল-এর সেই চিঠি। চিঠি আসছিল ১৯৪১-এ কলকাতা থেকে লিভারপুলগামী জাহাজে, জার্মান টর্পেডোর আঘাতে যা ডুবে যায়। নৌ-প্রত্নতত্ত্ববিদরা ৭১৭টা ব্যক্তিগত চিঠি উদ্ধার করেছেন। সমুদ্রের তলায় চিঠিগুলো অক্ষত ছিল! হারিয়ে-যাওয়া চিঠিতে বিল ফিলিসকে লিখেছেন, ‘তোমার চিঠি যখন খুললাম, যদি তুমি এখানে থাকতে!’ সেই চিঠি এখন লন্ডনের পোস্টাল মিউজ়িয়ামে।