লন্ডন ডায়েরি

ব্রেক্সিট-বিতর্কে পার্লামেন্টে ভোট দিতে গিয়ে সন্তানজন্ম পিছিয়ে দিয়েছিলেন, ভোটের পর দিন সুস্থ সবল এক শিশুপুত্রের জন্ম দেওয়া হ্যাম্পস্টিডের সাংসদই প্রথম সাংসদ যিনি এ সপ্তাহে ‘প্রক্সি ভোট’ দেওয়ার অনুমতি পেলেন।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০৭
Share:

পার্লামেন্টে ইতিহাস গড়লেন টিউলিপ

Advertisement

লেবার পার্টির সাংসদ টিউলিপ সিদ্দিক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ব্রেক্সিট-বিতর্কে পার্লামেন্টে ভোট দিতে গিয়ে সন্তানজন্ম পিছিয়ে দিয়েছিলেন, ভোটের পর দিন সুস্থ সবল এক শিশুপুত্রের জন্ম দেওয়া হ্যাম্পস্টিডের সাংসদই প্রথম সাংসদ যিনি এ সপ্তাহে ‘প্রক্সি ভোট’ দেওয়ার অনুমতি পেলেন। মঙ্গলবার রাতে ব্রেক্সিট নিয়ে আরও একগুচ্ছ সংশোধনের ব্যাপারে ভোট দিল হাউস অব পার্লামেন্ট। টিউলিপকে সশরীরে ভোট দিতে আসতে হয়নি। হাউস অব কমন্স জানিয়েছে, সন্তানসম্ভবা সাংসদরা কোনও সহকর্মীর মাধ্যমে তাঁদের ভোট দিতে পারবেন। টিউলিপ অনেক দিন ধরেই সংসদীয় পদ্ধতি পরিবর্তনের পক্ষে প্রচার করছিলেন। ছেলের নাম রেখেছেন রাফায়েল মুজিব সেন্ট জন পার্সি, যে নামে লুুকিয়ে নবজাতকের প্রমাতামহ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী মুজিবর রহমানের নামও। ভোটের আগের দিন টিউলিপ টুইটে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্পিকার ও অন্য সাংসদদের, যাঁরা এই পরিবর্তনকে সমর্থন করেছেন। ‘‘রাফায়েল আর আমি দু’জনেই কৃতজ্ঞ, এই গুরুত্বপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে আমি আমার নির্বাচনকেন্দ্রের প্রতিনিধিত্ব করতে পারলাম!’’

গরবিনি: সপুত্র টিউলিপ সিদ্দিক

Advertisement

বিরিয়ানি-যুদ্ধ

আশির দশকের গোড়ায় ব্রিটেনের যে স্টোরগুলো প্রথম চিকেন টিক্কা স্যান্ডউইচ বিক্রি শুরু করে, তার অন্যতম ছিল মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার। এই স্টোরের ‘ফুড হল’ ওদের জামাকাপড়ের বিভাগের চেয়েও বেশি জনপ্রিয়। তবে সম্প্রতি স্টোরের ‘চিল্‌ড ফুড’ কাউন্টারে ২.৮০ পাউন্ড দামের ‘ভেজিটেরিয়ান বিরিয়ানি র‌্যাপ’ দেখে ভারতীয় শেফ আর কলম-লিখিয়েরা নাখোশ। ‘ইন্ডিয়ান কিচেন’-এর লেখক মনিকা গোবর্ধন র‌্যাপের ছবি দিয়ে টুইট করেছেন, ‘‘আমার বিরিয়ানি হাঁড়িতেই ভাল, র‌্যাপে নয়।’’ বিরিয়ানির রেসিপি থেকে মাংস বাদ দিয়ে তার জায়গায় রাঙা আলু গুঁজে দেওয়ায় সমালোচকেরা তো মহাখাপ্পা। মনিকার সুরে সুর মিলিয়েছেন জনপ্রিয় রেস্তরাঁ ‘দার্জিলিং এক্সপ্রেস’-এর মালিক, নেটফ্লিক্স-অনুষ্ঠান ‘শেফ’স টেবিল’-এ অংশ নেওয়া প্রথম ব্রিটিশ শেফ আসমা খানও। তাঁর অভিযোগ, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার এই খাবারটি নিয়ে ঠিকঠাক ‘রিসার্চ’ করেনি মোটেই। আর এক লেখক লিখেছেন, ‘‘এ আবার বিরিয়ানি কী করে হল? মাংস থাকতে হবে তো!’’ আবার অনেক ভারতীয় শেফের মত, সব্জি দিয়েও বিরিয়ানি তৈরি করা যায়, আর তারও অনেক রকমফের আছে। সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে, এই বিরিয়ানি-যুদ্ধ এখন চলবে।

ধনী ও করদাতা

‘সানডে টাইমস’ প্রতি বছর ‘দেশের সেরা ১০০০ ধনী’ তালিকা বার করে। ভারতীয়রা প্রথম দশে বরাবর উজ্জ্বল। ২০১৭ সালে হিন্দুজা ভাইয়েরা এক নম্বরে ছিলেন, তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ২০.৬৪ বিলিয়ন পাউন্ড! ২০১৮-তে তাঁরা দুইয়ে, সম্পত্তি ১৬.২০ বিলিয়ন পাউন্ড। ২০১৭-তে লক্ষ্মী মিত্তল ছিলেন চার নম্বরে, সম্পদের পরিমাণ ১৩.২২ বিলিয়ন পাউন্ড। ২০১৮-তে তা বেড়ে ১৪.৬৬ বিলিয়ন পাউন্ড হলেও, তিনি নেমে গিয়েছেন পাঁচে! ধনী-তালিকায় উজ্জ্বল স্বরাজ পল ও অনিল আগরওয়ালও। এ সপ্তাহেই ‘সানডে টাইমস’ প্রকাশ করল ‘সর্বোচ্চ করদাতা ৫০’ তালিকাও। সেখানে কোনও ভারতীয় নেই, এমনকি ধনী-লিস্টিতে প্রথম দশে নিয়মিত যাঁরা, তাঁরাও না! আছেন ডেভিড বেকহ্যামের মতো খেলোয়াড়, বা ব্যাগহীন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ও এয়ার ড্রায়ারের আবিষ্কর্তা স্যর জেমস ডাইসন। কাগজের ব্যাখ্যা: ধনী-তালিকার অনেকেই ব্রিটেনের বাসিন্দা নন, বা তাঁদের কাজ-কারবার অন্য দেশে। তবে সবারই ব্রিটেনে চোখ-ধাঁধানো বাড়ি আছে!

সুরা ও সুধা

বিখ্যাত: ‘তেতাজে’ শ্যাম্পেন

শ্যাম্পেন জিনিসটা ফ্রান্সের শ্যাম্পেন নামের অঞ্চলে আবিষ্কৃত হয়েছে, এ ধারণা অনেকের থাকলেও, শ্যাম্পেনের প্রথম ঠিকানা কিন্তু ইংল্যান্ড। ‘তেতাজে’ শ্যাম্পেন প্রস্তুতকারক পিয়ের-ইমানুয়েল তেতাজে শোনালেন সে গল্প। ইংল্যান্ডে রেড আর হোয়াইট ওয়াইনের জোগান দিতেন শ্যাম্পেন অঞ্চলের বেনেডিক্টাইন সাধুরা! সস্তা সেই ওয়াইন পড়ে থাকত লন্ডনের ডকে, আর কনকনে ঠান্ডায় তাতে আর এক প্রস্ত ফার্মেন্টেশন হত, পানীয়টা কার্বোনেটেড হত আরও। অন্য অনেকের মত, শ্যাম্পেনের আবিষ্কর্তা ইংরেজ পদার্থবিদ ক্রিস্টোফার মেরেট। ১৬৬২ সালে তিনিই প্রথম ওয়াইনে কী করে বুদ্বুদ পাঠানো যায় তা নিয়ে পেপার লেখেন। ফরাসিদের মত, ১৬৯৭ সালে ডো পেরিনো নামের এক সাধু শ্যাম্পেনের আবিষ্কর্তা। মঠে রাখা ‘খারাপ’ ওয়াইনের খানিক গলায় ঢেলে তিনি অন্যদের ডাকেন: জলদি এসো, মনে হচ্ছে আমি আকাশের তারাদের সুধা পান করছি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন