Newsletter

কোনও পক্ষই নাকি অশান্তি চায় না, তবু পাহাড় দাউদাউ!

আচম্বিত সে উদগীরণের পর শান্তও হয়ে আসছিল পাহাড়, স্বাভাবিক হচ্ছিল জীবনের ছন্দ ক্রমশ। কিন্তু আবার ছন্দপতন, এ বার আরও ভয়াবহ মাত্রায়।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০৩:৫৯
Share:

আবার দাউদাউ করে উঠল শিখাটা। সপ্তাহ খানেক আগেই আগুনটা দপ্‌ করে উঠেছিল ঠিকই, কিন্তু আঁচটা তার সীমাবদ্ধ ছিল দার্জিলিঙেই। আচম্বিত সে উদগীরণের পর শান্তও হয়ে আসছিল পাহাড়, স্বাভাবিক হচ্ছিল জীবনের ছন্দ ক্রমশ। কিন্তু আবার ছন্দপতন, এ বার আরও ভয়াবহ মাত্রায়। এ পাহাড় থেকে ও পাহাড়, ও পাহাড় থেকে সে পাহাড়ে ছড়িয়ে গেল আগুনটা। ইটবৃষ্টি, ভাঙচুর, গাড়ি পোড়ানো, ফাঁড়ি জ্বালানো, লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, অনির্দিষ্টকালীন বন্‌ধ, দরজা ভেঙে পুলিশি তল্লাশি, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার, ব্যাপক প্রশাসনিক তৎপরতা— তীব্র উত্তেজনায় যেন থরথর কম্পন দার্জিলিং-কালিম্পং-কার্শিয়ং জুড়ে।

Advertisement

দুর্ভাগ্যজনক! পাহাড়ের এই ছবি কেউই দেখতে চাই না আমরা। আগেও বলেছি, আবার বলতে হচ্ছে— পাহাড়ের রাজনৈতিক আবহাওয়ার এত দ্রুত অবনতির কোনও কারণ ছিল না। রোদে-নীলে টানটান ছিল আকাশ। আচম্বিত বজ্রপাত কেন, এত কাণ্ড ঘটে যাওয়ার পরেও কিন্তু তা বোধের পরিসরে আসছে না। পাহাড় জ্বলে-পুড়ে খাক্‌ হলে কার স্বার্থ রক্ষিত হয়? আদৌ কেউ লাভবান হন কি? সদুত্তর কারও কাছেই নেই।

সদুত্তর যদি না-ই থাকে, তা হলে অশান্তি এই মুহূর্তে বন্ধ হোক। হিংসা, ধ্বংস, উন্মত্ততার এই কুনাট্যরঙ্গ অবিলম্বে থামুক। আর এক মুহূর্তের জন্যও এই অকারণ অস্থিরতাকে প্রশ্রয় দেওয়া যায় না। যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের সূত্রটা খুঁজে বার করাই এখন লক্ষ্য হওয়া উচিত। রাজ্য প্রশাসন বা তার নিয়ন্ত্রক তৃণমূলকে যতটা দায়িত্ব নিতে হবে, পাহাড়ের উন্নয়ন সংস্থা জিটিএ এবং তার নিয়ন্ত্রক গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকেও ততটাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

Advertisement

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান সূত্র খুঁজে নেওয়ার প্রস্তাবও উঠে আসছে কোনও শিবির থেকে। কিন্তু সে রকম কোনও বৈঠক যে এখনই হওয়া প্রায় অসম্ভব, সেও বেশ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তা হলে সমাধান কি সেই তীব্র স্নায়ুর লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই? একের পর এক আঘাত এবং তীব্র প্রত্যাঘাতের মধ্যে দিয়েই কি ফয়সলার দিকে এগোতে চায় পাহাড়? না। পাহাড়বাসী অবশ্যই তেমন চান না। সমতলও তেমন চায় না কোনও দিনই। প্রশাসনও অবশ্যই শান্তির পক্ষে।

অশান্তির প্রতি এই স্বাভাবিক অনীহা যখন সব স্তরে, তখন পাহাড়ে অশান্তির ছায়া প্রলম্বিত হওয়ার আর কী কারণ থাকতে পারে? দাবানলের ধ্বংসলীলা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, দায় কিন্তু সব পক্ষকেই নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন