Editorial News

অনিরপেক্ষতা এ ভাবেই অকার্যকর করে প্রশাসনকে

রাজ্যে এবং কেন্দ্রে— দুই জায়গাতেই দুটো প্রতিষ্ঠিত সরকার রয়েছে। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি প্রশাসনের হাতের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে কেন?

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০০:১৩
Share:

ভাটপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ। ফাইল চিত্র।

রাজনৈতিক উত্তাপ কিছুতেই কমছে না রাজ্যে। যা চলছে, তা রাজনীতি নয়।, তা হল অরাজক অশান্তি ও হিংসা। নির্বাচন মেটার পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসবে বলে ভেবেছিলাম হয়ত আমরা অনেকেই। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ ঠিক উল্টো দিকে গড়াচ্ছে।

Advertisement

শনিবারও বড়সড় অশান্তির খবর এল রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে। কাঁচরাপাড়ায় অশান্তি, খেজুরিতে সংঘর্ষ, বীরভূমে বিস্ফোরণ। এ ভাবেই রোজ উত্তপ্ত হচ্ছে রাজ্যের নানা প্রান্ত। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে আরও বেড়ে গিয়েছে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা। পরিস্থিতি আদৌ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি করছে নৈরাজ্যের এই সব উপসর্গ।

রাজ্যে এবং কেন্দ্রে— দুই জায়গাতেই দুটো প্রতিষ্ঠিত সরকার রয়েছে। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি প্রশাসনের হাতের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে কেন? রাজ্যের শাসক দল লোকসভা নির্বাচনে বড় ধাক্কা খেয়েছে ঠিকই। কিন্তু ২০১৬ সালে হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে যে জনাদেশ তারা পেয়েছে, তা ২০২১ সাল পর্যন্ত বৈধ। সুতরাং সাংবিধানিক কর্তৃত্ব কোনও অংশেই লঘু হয়নি। তা হলে প্রশাসনকে সচল ও কার্যকরী রাখতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

কিন্তু প্রশাসন আজ সত্যিই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। রাজ্যের প্রান্তে প্রান্তে পড়ছে। কেন তেমন ঘটছে, তা রাজনৈতিক নেতৃত্বেরই সবচেয়ে ভাল বোঝা উচিত। কারণ সমস্যার উৎস সেখানেই।

আরও পড়ুন: ‘বিজেপি কেন করিস’ বলেই মার, ধৃত দুই

নৈহাটিতে বা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে যে তৃণমূল সমর্থকরা ঘরছাড়া, তাঁদের অবিলম্বে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। খুব ভাল কথা। অবিলম্বেই তাঁদের ঘরে ফেরানো জরুরি। গণতন্ত্রে জয়-পরাজয় থাকেই, তার জন্য নাগরিকদের ঘরছাড়া হতে হবে কেন? কিন্তু এই প্রশ্ন যেমন তৃণমূল কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য, তেমনই তো প্রযোজ্য অ-তৃণমূলদের জন্যও। তা হলে যেখানে বাম সমর্থকরা দিনের পর দিন ঘরছাড়া বা যেখানে কংগ্রেস কর্মীরা সাংঘাতিক অসহায়— সেখানেও প্রশাসন একই ভাবে সক্রিয় হবে না কেন? বিরোধী দলগুলোর কর্মী-সমর্থকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারেও মুখ্যমন্ত্রী একই রকম নির্দেশ দেবেন না কেন?

আরও পড়ুন: পাড়ুইয়ে হামলার নালিশ, ঘরছাড়া তৃণমূল পরিবার

প্রশাসনের কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে এই কারণেই। সাংবিধানিক বৈধতা যত দিনেরই হোক, একচোখো ভঙ্গিতে দিনের পর দিন চলতে থাকলে প্রশাসনের কর্তৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন