একটা সময় ছিল, যখন এই রাজ্যের আশীর্বাদ ছাড়া দিল্লির মসনদে বসাটাই প্রায় অসম্ভব ছিল। সেই অযোধ্যাও নেই, সেই রামও নেই। গঙ্গা-গোমতী দিয়ে বহু জল গড়িয়ে যাওয়ার পরেও অবশ্য উত্তরপ্রদেশ এখনও গর্ব করতে পারে, এই রাজ্যের পথ কণ্টকাকীর্ণ হলে দিল্লির মসনদও কুসুমাস্তীর্ণ হয় না।
এ হেন উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন এসে পড়ল। মাস পোহালেই। সঙ্গে আরও চার রাজ্যে। দুই পেরিয়ে তিনের দিকে পা বাড়ানো নরেন্দ্র মোদী সরকারও সব মিলিয়ে খুব স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছে। এমনটা বুক বাজিয়ে বলতে পারছেন না বিজেপি-র বড় নেতারাও। এমতাবস্থায়, ভারতের শাসককুল তথা রাজনৈতিক দলসমূহ যা করে এসেছে, মহাজ্ঞানী মহাজনের সেই চেনা পথেই হাঁটা শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। ভারতের প্রান্তিক দরিদ্র মানুষ আরও একবার, ভোটের আগে যেমনটা হয়ে থাকে, পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসতে শুরু করলেন। এখন থেকে আগামী দু’মাস দরিদ্রভজনা এবং দরিদ্রসেবায় যে প্রতিযোগিতা শুরু হবে, তার প্রথম ঘণ্টাটা বাজিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি-র কর্মসমিতির সভায় দলের আগামী দিনের মন্ত্রের সুরটা বেঁধে দিলেন, দরিদ্রের সেবাই বস্তুত ঈশ্বরের সেবা।
মুশকিলটা হয় দরিদ্রের। মাস দু-একের অভ্যাসে দৈনন্দিন ভাবনাচিন্তার জগৎটা ওলটপালট হয়ে যায়। নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে হতে থাকে হয়ত বা। তার পর... আবার যেই কে সেই।
ঈশ্বর আর দরিদ্রে মিল রয়েছে অবশ্য। প্রয়োজনের সময় মাথা ঠুকি দু’জনের কাছেই। কাজ হয়ে গেলে, আর তাকানোর অবকাশ মেলে না। আপাতত, এই সব আলোচনা থাক। এখন, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পিছু হটো, গরিব মানুষ সামনে এগিয়ে এসো। কুঞ্চিত-ক্লিষ্ট মুখগুলোয় আলো পড়বে এ বার।