Editorial News

বিধায়কবন্দি খেলায় লুপ্ত নৈতিকতার প্রশ্ন

বিজেপি ঘর ভাঙছে কংগ্রেসের গুজরাতে। ঘরটি তাসের কিনা, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছিল, কারণ বিজেপি-র দিকে ধাবমানতার গতি কিঞ্চিৎ বেশিই বলে প্রতিভাত হচ্ছিল। অতএব ঝুঁকি নেওয়া আর সম্ভব হচ্ছিল না কংগ্রেসের পক্ষে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

বিধায়কদের নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছেই। ছবি: সংগৃহীত।

আবার সেই পরিচিত লজ্জাজনক ছবির পুনরাবৃত্তি। বিধায়কদের নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা। বাক্স-প্যাঁটরা সমেত বিধায়কদের গাদাগাদি করে বাসে অথবা ট্রেনে পুরে দিয়ে একটা ভাল দেখে রিসর্টে এনে তোলো। বিবেক বা নীতি বা যুক্তি বা লোকলজ্জা এ সব নিয়ে পরে ভাবা যাবে, আপাতত বিধায়ক ‘চুরি’ আটকাতে হবে। দশকের পর দশক ধরে রাজ্যের পর রাজ্যে এক ট্রেন্ড, ন্যক্কারজনক এই কুনাট্যরঙ্গ চলে এসেছে। সর্বশেষ পালা চলছে গুজরাতে। বিশ্বাসে বস্তু মিলবে এমন কথাটি হলফ করে বলা যাচ্ছে না, অতএব কংগ্রেস ঝুঁকি নিল না আর। আঁচিয়ে-কাঁচিয়ে নিজেদের সব বিধায়ককে তুলে পগার পার বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণে।

Advertisement

বিজেপি ঘর ভাঙছে কংগ্রেসের গুজরাতে। ঘরটি তাসের কিনা, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছিল, কারণ বিজেপি-র দিকে ধাবমানতার গতি কিঞ্চিৎ বেশিই বলে প্রতিভাত হচ্ছিল। অতএব ঝুঁকি নেওয়া আর সম্ভব হচ্ছিল না কংগ্রেসের পক্ষে। নৈতিকতা কোন তলানিতে পৌঁছলে এবং পারস্পরিক আস্থার বাতাবরণটি কোন পর্যায়ে গেলে দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধাকে বিশ্বাস করা যায় না, এবং সেই জন্যই রিসর্টবন্দি করে রাখা যায়, সেটা কল্পনা করা খুব কঠিন হয় না। কিন্তু যেটা কল্পনা করা কঠিন হয়, তা হল, লজ্জা নামক বস্তুটিকে কোন কুলুঙ্গিতে বন্দি করেন রাজনীতিকরা, যাতে এই বোধটুকুও জাগে না, কোনও সভ্য দেশে সভ্য সংস্কৃতিতে এই ঘটনাটা ঘটানো যায় না। বিধায়করা তৈজসপত্রের মতো গুজরাত-কর্নাটক গড়াগড়ি খাচ্ছেন, এই দৃশ্যটা যে আপামর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না, এই বিচারের বোধও কি লুপ্ত হল? আয়ারাম-গয়ারাম রাজনীতির প্রাঙ্গনে নৈতিকতার স্থান এবং নৈতিক বিচারের প্রশ্নটিই সোনার পাথরবাটি।

অতএব বিধায়কবন্দি খেলা এখন চলতে থাকুক। সেই খেলায় মধ্যরাতের অন্ধকারে রিসর্টের পাঁচিল টপকানো কিন্তু ফাউল নয়। কারণ এ খেলার কোনও নিয়ম নেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement