গত তিন বছরে ভারতীয় রেলের ট্র্যাক বেয়ে বড়সড় দুর্ঘটনা হানা দিল অন্তত আট বার। ছবি: সংগৃহীত।
সীমাহীন অপদার্থতার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে ভারতীয় রেল দিন দিন। শুধু অপদার্থতা বা অপকর্মণ্যতা নয়, কর্তব্যে গাফিলতিও মারাত্মক পর্যায়ে। খানিক নিন্দা হবে, খানিক সমালোচনার ঝড় বইবে, তার পর ধীরে ধীরে সব থিতিয়ে আসবে, বিষয়টা কিন্তু তেমন পর্যায়ে আর নেই। অপদার্থতা এবং গাফিলতি গুরুতর অপরাধের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এই মারাত্মক অপরাধের দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে এবং দায়ীর বা দায়ীদের কঠোর দণ্ডই কাঙ্খিত। তা না হলে জনরোষজনিত বিশৃঙ্খলার মুখে পড়তে হতে পারে যে কোনও দিন।
রেলের উন্নয়ন নিয়ে রাশি রাশি কথা খরচ হচ্ছে, আশাতীত নানা পরিকল্পনাপত্র মেলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু বহিরঙ্গের জাঁকজমক আর প্রচারসর্বস্বতাই সম্বল। ন্যূনতম যাত্রী-সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে পারছে না রেল। ছোটখাটো দুর্ঘটনার সংখ্যা অগণিত, গত তিন বছরে ভারতীয় রেলের ট্র্যাক বেয়ে বড়সড় দুর্ঘটনা হানা দিল অন্তত আট বার। অপদার্থতা এবং গাফিলতি যে গুরুতর অপরাধের পর্যায়ে পৌঁছেছে, এই পরিসংখ্যানের পর সে কথা নিশ্চয় আর জোর গলায় বলার দরকার পড়বে না।
রেল মন্ত্রক কিন্তু জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে। রেলপথে যাত্রাকে সুরক্ষিত যাত্রা মনে করে যাঁরা নিশ্চিন্তে ভারতীয় রেলে সফর করছেন, তাঁদের জন্য যত্রতত্র মৃত্যুর অপেক্ষা আজ। ভারতীয় রেলকে ভরসা করাই কি এখন থেকে ভুল হিসেবে বিবেচিত হবে তা হলে? যাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তাটুকুও কি আর নিশ্চিত করতে পারবে না রেল? এই রকম এক গুচ্ছ নেতিবাচক প্রশ্নচিহ্ন আজ ঝুলছে সুরেশ প্রভুর মন্ত্রককে ঘিরে। জুৎসই উত্তর রেলের কাছে নেই। আশু প্রতিকার জরুরি রেলওয়ের এই ক্রমবর্ধমান অসুখের। প্রতিকার যদি করতে পারেন সুরেশ প্রভু, তা হলে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে হবে না, প্রশ্নচিহ্ন নিজে থেকেই সরে যাবে। কিন্তু খুব দ্রুত যদি ছবিটা বদলাতে না পারেন, তা হলে ভারতীয় রেলের ইতিহাসে অকর্মণ্যতা নামের অধ্যায়টিতে সুরেশ প্রভুর নাম জ্বলজ্বল করবে।