Newsletter

অনেক চোখে স্বপ্ন এঁকে দিলেন স্বপ্না

বাবার ভ্যান-রিক্সায় সওয়ার ছিল স্বপ্নাদের সংসার। নিরন্তর যুঝতে হয়েছে নিদারুণ অনটনের বিরুদ্ধে। কিন্তু জীবনের হার্ডল আর হেপ্টাথেলন ট্র্যাকের হার্ডল সমান দক্ষতা এবং সমতুল ধৈর্য্যে পেরিয়েছেন স্বপ্না বর্মণ।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৫:২০
Share:

সোনার মেয়ে স্বপ্না।

প্রেরণা জুগিয়ে যায় এই আখ্যানগুলো। নতুন করে স্বপ্ন এঁকে দেয় আরও হাজার হাজার স্বপ্নার চোখে। স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে জলপাইগুড়ির সেই কাদামাখা পথেই কিন্তু ফিরে গিয়েছিলেন স্বপ্না বর্মণও। ভাগ্যিস থেমে যাননি! ভাগ্যিস ফিরে এসেছিলেন! ভাগ্যিস আবার শুরু করেছিলেন লড়াইটা! না হলে কি আরও একটা সোনার মেয়েকে খুঁজে পেত বাংলা!

Advertisement

বাবার ভ্যান-রিক্সায় সওয়ার ছিল স্বপ্নাদের সংসার। নিরন্তর যুঝতে হয়েছে নিদারুণ অনটনের বিরুদ্ধে। কিন্তু জীবনের হার্ডল আর হেপ্টাথেলন ট্র্যাকের হার্ডল সমান দক্ষতা এবং সমতুল ধৈর্য্যে পেরিয়েছেন স্বপ্না বর্মণ। এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে হেপ্টাথেলনে সোনা জিতেছেন স্বপ্না। অতএব, পরবর্তী গন্তব্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত পাতকাঁটার প্রায় নিরন্ন পরিবার থেকে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের সর্বোচ্চ মঞ্চে পৌঁছে যাওয়া— এই যাত্রাপথটা কী অপরিসীম সংগ্রামের ছিল, তা স্বপ্না বর্মণের চেয়ে ভাল করে জানা কারও পক্ষেই বোধ হয় সম্ভব নয়।

তবে লড়াইটা স্বপ্নার একারও নয়। আরও হাজার হাজার স্বপ্না বা স্বপন স্বপ্ন দেখেন এ বাংলার বা এ দেশের নানা প্রান্তে। অসীম প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুঝে লক্ষ্যে পৌঁছনোর চেষ্টা চালিয়ে যান নিরন্তর তাঁরা। স্বপ্না বর্মণের সোনা জয়, তাঁদের সবার জয়, তাঁদের সবার জন্য প্রেরণা।

Advertisement

স্বপ্নার এই বিরাট অর্জন কিন্তু প্রায় একক কৃতিত্বে। অবিশ্বাস্য অধ্যবসায় আর পরিশ্রমের ফসল। তাঁর এই সাধনা যদি রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য পেত, তা হলে স্বপ্না হয়তো আরও আগেই পৌঁছতেন এই গন্তব্যে, হয়তো এত দিনে অ্যাথলেটিক্সের সর্বোচ্চ মঞ্চেও সাফল্যের ছাপ রাখতেন। একক লড়াইয়ের ভরসায় যদি থাকতে না হত এই প্রতিভাগুলোকে, তা হলে আরও অনেক স্বপ্না বর্মণকে হয়তো তুলে আনা যেত। তার জন্য দরকার রাষ্ট্রীয় সক্রিয়তার। এমন সম্ভাবনাময়দের চিনে নেওয়ার জন্য উপযুক্ত সরকারি বন্দোবস্ত থাকা জরুরি। সে বন্দোবস্ত একেবারেই নেই, এমনটা সম্ভবত বলা যাবে না। তবে বন্দোবস্ত যে অপ্রতুল, তা নিয়ে সংশয় নেই। স্বপ্না বর্মণের আখ্যান থেকে কিন্তু প্রেরণা নিতে পারে সরকারও। যদি সত্যিই তা হয়, স্বপ্নার সাফল্য হয়তো সবচেয়ে বড় সার্থকতা পাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন