এই উন্মত্ততা কি কাঙ্খিত গন্তব্যের পথটা আদৌ চেনে?

এ কোন অদ্ভুত জুলুম-রাজ কামেয়ের চেষ্টা! শিল্পীদের নিষিদ্ধ করার জন্য এমন উদগ্র উন্মত্ততা কেন? ক্রিকেট বন্ধ করার দাবিতেই বা এমন উচ্চ রব কেন? রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরোধ থাকতে পারে কোনও প্রশ্নে। কিন্তু তাতে তো এক দেশের নাগরিকের সঙ্গে আর এক দেশের নাগরিকের বিরোধ তৈরি হয় না।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৪
Share:

এ কোন অদ্ভুত জুলুম-রাজ কামেয়ের চেষ্টা! শিল্পীদের নিষিদ্ধ করার জন্য এমন উদগ্র উন্মত্ততা কেন? ক্রিকেট বন্ধ করার দাবিতেই বা এমন উচ্চ রব কেন?

Advertisement

রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরোধ থাকতে পারে কোনও প্রশ্নে। কিন্তু তাতে তো এক দেশের নাগরিকের সঙ্গে আর এক দেশের নাগরিকের বিরোধ তৈরি হয় না। আমজনতা বৃহদংশে সুসম্পর্কই চায়। নাগরিক আদান প্রদানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর অধিকার কারও নেই।

পাক শিল্পীদের ভারতীয় ছবিতে কাজ করতে না দিয়ে কি পাকিস্তান রাষ্ট্রকে আঘাত করা যায়? পাকিস্তানের অভিনেতা যে বলিউডি ছবিতে অভিনয় করেছেন, সে ছবির প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হলে কি সন্ত্রাসবাদীরা দুর্বল হয়? ভারত-পাক ক্রিকেট বন্ধ হয়ে গেলে কি সন্ত্রাসের মদতদাতারা কোনও ভাবে জব্দ হয়? কোনওটাই হয় না। বরং বিপরীতটা ঘটে। অবাধ নাগরিক আদানপ্রদান শীতল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কিছুমাত্র উষ্ণতা আনার যে পথটা খুলে রাখে, সে পথটাও বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

বিভাজনের রেখাগুলো রাজনৈতিক মানচিত্রে থাকে, সাংস্কৃতিক মানচিত্রে নয়। কারণ সংস্কৃতির ক্ষেত্রটা আসলে মিলনের ক্ষেত্র। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিও পরস্পরের সীমান্তে এসে পরস্পরের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিছু দেওয়ার চেষ্টা করে, কিছু নেওয়ার চেষ্টা করে।

ভারত আর পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তো সে বন্ধন আরও দৃঢ়। ভৌগোলিক বিভাজিকার দু’প্রান্তে যে নাগরিক জীবন, সংস্কৃতির শিকড়ে পৌঁছে তা মিলে গিয়েছে অভিন্ন বিন্দুতে। এমন দুই রাষ্ট্রের আমজনতার মধ্যে সমস্ত সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আদানপ্রদান বন্ধ করে দিয়ে আমরা কি আদৌ কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছব? ভাবার সময় হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন